আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
232 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (21 points)

আসসালামু আলাইকুম। নীচের প্রশ্নগুলোর একটু জরুরী উত্তরের আশা করছি। জাযাকাল্লাহু খায়রান।

(১) কোনো ‍মুসলমান যদি গুনাহ হবে জেনেও খ্রিস্টানধর্মের কোনো বই টাকার বিনিময়ে টাইপ করে দেয় কিংবা বই প্রকাশ এবং প্রচার করতে সহযোগিতা করে, তাহলে কি ওই মুসলমান ব্যক্তি ইসলামের উপর ঈমান রাখা সত্বেও টাকার লোভে ওই কাজ করার জন্য কাফের হয়ে যাবে? কারণসহ যদি বলতেন।

(২) কোনো মুসলমানের ভুলের কারণে বা কোনো কথার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যদি কোনো ব্যক্তি কাফের হয়ে মারা যায়, তাহলে এর কারণে সেই মুসলমান ব্যক্তি কি কাফের হয়ে যাবে? কারণসহ যদি বলতেন।

(৩) কোনো মুসলমান যদি ভুলবশত খ্রিস্টানধর্মের কোনো কাজে সহযোগিতা করে ফেলে তাহলে কি সেই মুসলমান ব্যক্তি হৃদয়ে ঈমান রাখা সত্বেও কাফের বলে গণ্য হবে? (৪) যেমন: সে যদি অতীতে টাকার বিনিময়ে এমন কোনো কাজ করে ফেলে যেমন: আমেরিকার কোনো এলাকায় কতটি খ্রিস্টান স্কুল আছে তার তালিকা করে দেওয়া। হতে পারে তার করা তালিকার দ্বারা কোনো খ্রিস্টান ব্যক্তি সেই খ্রিস্টান স্কুলগুলোর জন্য অনুদান সংগ্রহ করবে। তো এখানে তালিকা করার মাধ্যমে খ্রিস্টানধর্মের কাজে সরাসরি সহযোগিতা করার কারণে সেই মুসলমান ব্যক্তি কি কাফের হয়ে যাবে? কারণসহ যদি বলতেন।

(৫) ধরুন করিমের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অতীতে অনেক ব্যক্তি কাফের হয়ে মারা গেছে। কিন্তু করিম যদি পরে ঈমান আনে, তবুও কি করিম কাফের বলে গণ্য হবে যেহেতু করিমের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অতীতে অনেক ব্যক্তি কাফের হয়ে মারা গেছে? কারণসহ যদি বলতেন।

(৬) সারাজীবন খ্রিস্টানধর্ম/নাস্তিকতা প্রচার করার পরে কেউ যদি শেষ বয়সে গিয়ে ইসলামের প্রতি ঈমান নিয়ে আসে তাহলে কি সে মুসলমান বলে গন্য হবে নাকি কাফের বলে গণ্য হবে (যদি তার প্রচারের কারণে অতীতে অনেক মানুষ খ্রিস্টান/নাস্তিক হয়ে মারা যায়)? কারণসহ যদি বলতেন।

(৭) কোনো হিন্দু যদি ইসলাম ধর্মে ঈমান আনার পর আবারও কাফের হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে আবার ঈমান নিয়ে আসে তাহলে কি তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ হবে?

(৮) এমন কোনো গুনাহ আছে কি যেটা করলে জীবীত থাকা অবস্থায় সংশোধন করার আর সুযোগ নেই বা তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেও ক্ষমা পাবে না?

(৯) এমন কোনো গুনাহ আছে যেটা একবারে তওবা করলে তওবা হয় না, একটা একটা করে গুনাহের কথা মনে করে তওবা করতে হয়?

by
ভাই আপনি ঈমান নিয়ে অত্যাধিক পরিমাণে টেনশন এ আছেন 
আপনাকে দেখলাম  বিশ এর উপরে এই নিয়ে প্রশ্ন করেছেন ।
আপনি এক কাজ করুন ইনাদের ঈমান সংক্রান্ত একটি করছে ভর্তি হয়ে যান

 এটি শয়তানের ওয়াসাসে বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে
আল্লাহ আলিম

1 Answer

0 votes
by (574,020 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
গুনাহ,শিরকের কাজ যেমন নিজে করা জায়েজ নেই,গুনাহের কাজে,শিরকি কাজে অন্যকে সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ- 
تنویر الأبصار مع الدر المختار:
"(ولا) 
يجوز أن (يحدث بيعة، ولا كنيسة ولا صومعة، ولا بيت نار، ولا مقبرة) ولا صنمًا حاوي (في دار الإسلام) ولو قرية في المختار، فتح".

رد المحتار :
"مَطْلَبٌ فِي أَحْكَامِ الْكَنَائِسِ وَالْبِيَعِ
(قَوْلُهُ: وَلَايَجُوزُ أَنْ يُحْدِثَ) بِضَمِّ الْيَاءِ وَكَسْرِ الدَّالِ وَفَاعِلُهُ الْكَافِرُ وَمَفْعُولُهُ بِيعَةً كَمَا يَقْتَضِيهِ قَوْلُ الشَّارِحِ، وَلَا صَنَمًا. وَفِي نُسْخَةٍ: وَلَا يُحْدِثُوا أَيْ أَهْلُ الذِّمَّةِ. اهـ. ح وَمِنْ الْإِحْدَاثِ نَقْلُهَا إلَى غَيْرِ مَوْضِعِهَا كَمَا فِي الْبَحْرِ وَغَيْرِهِ ط (قَوْلُهُ: بِيعَةً) بِالْكَسْرِ مَعْبَدُ النَّصَارَى وَالْيَهُودِ، كَذَلِكَ الْكَنِيسَةُ إلَّا أَنَّهُ غَلَّبَ الْبِيعَةَ عَلَى مَعْبَدِ النَّصَارَى، وَالْكَنِيسَةَ عَلَى الْيَهُودِ قُهُسْتَانِيٌّ. وَفِي النَّهْرِ وَغَيْرِهِ: وَأَهْلُ مِصْرَ يُطْلِقُونَ الْكَنِيسَةَ عَلَى مُتَعَبِّدِهِمَا وَيَخُصَّانِ اسْمَ الدَّيْرِ بِمَعْبَدِ النَّصَارَى. قُلْت: وَكَذَا أَهْلُ الشَّامِ دُرٌّ مُنْتَقًى وَالصَّوْمَعَةُ بَيْتٌ يُبْنَى بِرَأْسٍ طَوِيلٍ لِيُتَعَبَّدَ فِيهِ بِالِانْقِطَاعِ عَنْ النَّاسِ بَحْرٌ (قَوْلُهُ: وَلَا مَقْبَرَةً) عَزَاهُ الْمُصَنِّفُ إلَى الْخُلَاصَةِ، ثُمَّ ذَكَرَ مَا يُخَالِفُهُ عَنْ جَوَاهِرِ الْفَتَاوَى ثُمَّ قَالَ: وَالظَّاهِرُ الْأَوَّلُ وَمِنْ ثَمَّ عَوَّلْنَا عَلَيْهِ فِي الْمُخْتَصَرِ. مَطْلَبٌ لَا يَجُوزُ إحْدَاثُ كَنِيسَةٍ فِي الْقُرَى وَمَنْ أَفْتَى بِالْجَوَازِ فَهُوَ مُخْطِئٌ وَيُحْجَرُ عَلَيْهِ". ( كتاب الجهاد، فصل في الجزية، ۴ / ٢٠٢، ط: دار الفكر)
সারমর্মঃ-
খ্রিস্টানদের গীর্জা,ইহুদিদের ইবাদত খানা,অগ্নিপূজকদের অগ্নিপূজার ঘর,তাদের কবরস্থান ইত্যাদি নির্মান করা জায়েজ নেই।
যারা এই বিষয়ে বৈধতার ফতোয়া দেন,তারা ভূলকারী।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে সেই ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবেনা।
কেননা সে এখানে কাফের হয়ে যাওয়ার মতো কোনো বাক্য বলেনি,কাফের হয়ে যাওয়ার মতো কোনো কাজ করেনি।

(০২)
এর কারনে সেই মুসলমান ব্যাক্তি কাফের হবেনা।
তবে তার মারাত্মক গুনাহ হবে।

কেননা সে নিজে কাফের হয়ে যাওয়ার মতো কোনো কাজ করেনি।

(০৩)
না,সে কাফের বলে গন্য হবেনা।

(তবে গীর্জায় গিয়ে উপাসনা করলে ঈমান চলে যাবে।)

(০৪)
এক্ষেত্রে খ্রিস্টান ধর্মের কাজে সরাসরি সহযোগিতার কারনে সেই মুসলমান ব্যাক্তির মারাত্মক গুনাহ হলেও এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

কেননা এখানে সে কাফের হয়ে যাওয়ার মতো কোনো কাজ করেনি।

(০৫)
প্রশ্নের বিবরণ মতে করিম কাফের বলে গন্য হবেনা। 
কেননা করিম ঈমান এনেছে।
তাই এখন সে মুমিন।

(০৬)
সে মুসলিম বলে গন্য হবে। 
কেননা সে শেষ বয়সে হলেও ঈমান এনেছে।
তাই এখন সে মুমিন।

(০৭)
হ্যাঁ, এতে তার অতিতের গুনাহ সমুহ মাফ হয়ে যাবে।
,
তবে সে যদি শুধু গুনাহ মাফের জন্য চালাকি করে উক্ত অপরাধ মূলক পদ্ধতি অবলম্বন করে,সেক্ষেত্রে অনেক ইসলামী স্কলারগন তার এই ধোকামূলক কাজের দরুন গুনাহ মাফ না হওয়ার কথা বলেছেন।

(০৮)
জানা মতে নেই।

(০৯)
জানা মতে নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...