আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
149 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)
আসসালামু আলাইকুম

১) বিভিন্ন সময় দেখা যায় বিভিন্ন মানুষ তাদের কাজ গুলো সঠিক ভাবে পালন করতেছে না এবং তারা তাদের দায়িত্বে অনিয়ম করতেছে তাদের এই অনিয়ম সম্পর্কে বা দায়িত্ব অবহেলা সম্পর্কে অন্যদের সাথে আলোচনা করা হয়, তখন কি তা গীবত হবে ?

২) কাউকে নিয়ে কখন সমালোচনা করা জায়েজ হবে?

৩) ১ নং পয়েন্ট এর কিছু উদাহরণ দাও, যখন কোন শিক্ষককে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতেছে না তখন অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে বা শিক্ষকের সমালোচনা করলে তখন কী তা গীবত হবে?

৪) ১ নং পয়েন্টের আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে যা আমাদের সমাজে লক্ষ্য করা যায়, যেমন : ডাক্তার রোগীর ভুল  চিকিৎসা করেছে বা কোন এক  কোম্পানি মানুষের টাকা মেরে দিয়েছে বা কোন এক শিক্ষার্থী অন্য সকলের সাথে ঝামেলা করে বেড়ায়।

৫)  গঠনমূলক সমালোচনা করলে কী গীবত বা গুনাহ হবে?

৬) ৩ ও ৪ নং পয়েন্ট ছাড়াও আরও অনেক উদাহরণ রয়েছে। এখন কারো কোন দায়িত্বে অবহেলা বা অনিয়মের কারণে তার সমালোচনা করা বা তার দোষ ত্রুটিগুলো অন্যদের বললে  কী গীবত হবে?

৭) যদি  উপরোক্ত সবগুলোতেই গীবত হয় তাহলে যখন কেউ তার দায়িত্বে থাকাকালীন গাফিলতি করে যায় বা ভুল-ত্রুটি করে থাকে তখন ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে কী করা উচিত?

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে,
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ " . قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ قَالَ " إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ " .
 রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি জান, গীবত কী জিনিস? তারা বললেন, আল্লাহ ও তার রসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন, (গীবাত হলো) তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলো, আমি যা বলছি তা যদি আমার ভাই এর মধ্যে বাস্তবিকই থেকে থাকে তবে আপনি কি বলেন? তিনি বললেন, তুমি তার সম্পর্কে যা বলছ তা যদি তার মধ্যে প্রকৃতই থেকে থাকে তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। (সহীহ মুসলিম-৬৩৫৭)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/58314


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) 
যদি দেখা যায় যে, কেউ তার দায়িত্বকে সঠিক ভাবে পালন করতেছে না এবং সে তার দায়িত্বে অনিয়ম করছে, তাহলে তার এই অনিয়ম বা দায়িত্ব অবহেলা সম্পর্কে অন্যদের সাথে আলোচনা করা যাবে না।বরং শুধুমাত্র তার উর্ধতন কর্মকর্তা বা এমন কাউকে বলা যাবে, যিনি ঐ ব্যক্তির অনিয়মকে দূর করতে পারবেন। 

(২) 
কাউকে নিয়ে কখন সমালোচনা করা জায়েয, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1715

৩)
যদি কোন শিক্ষক সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে থাকেন,তাহলে তখনও অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলা যাবে না বা শিক্ষকের সমালোচনা করা যাবে না।হ্যা, প্রেন্সিপাল বা অধ্যক্ষর কাছে বললে সেটা গীবত হবে না।

(৪)
হযরত মু'আবিয়া ইবনে হাইদাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
معاوية بن حيدة رضي الله عنه ، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ( أَتَرعُونَ عَنْ ذِكْرِ الْفَاجِرِ ! اذْكُرُوهُ بِمَا فِيهِ كَي يَعْرِفَهُ النَّاسُ وَيَحْذَرَهُ النَّاسُ ). 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,তোমরা কি ফাসিকের সমালোচনা থেকে বিরত থাকবে?বরং তোমরা ফাসিকের কৃত অপরাধ নিয়ে সমালোচনা করো,যাতেকরে লোকজন সেই অপরাধ থেকে বিরত থাকে।আস-(সুনানুল কুবরা-বায়হাক্বী-১০/২১০) এই হাদীসের সনদে কালাম থাকার ধরুণ মুহাদ্দিসিনে কেরাম এটা যঈফ হাদীস বলে বিবেচনা করেছেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সমাজকে ক্ষতি থেকে বাচাতে, অপর ভাইকে ক্ষতি থেকে বাচাতে ক্ষতিকারকের ভুলত্রুটি নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
"ডাক্তার রোগীর ভুল  চিকিৎসা করেছে বা কোন এক  কোম্পানি মানুষের টাকা মেরে দিয়েছে বা কোন এক শিক্ষার্থী অন্য সকলের সাথে ঝামেলা করে বেড়ায়।"

এদের সম্পর্কে অন্যকে সতর্ক করার নিমিত্তে তাদের ভুলকে সমাজে বলা যাবে।

(৫)
গঠনমূলক সমালোচক যদি এমন ব্যক্তি হন, যার সমালোচনা করা হচ্ছে, তার উপর সমালোচকের কর্তৃত্ব রয়েছে, এমন সমালোচনার রুখসত রয়েছে। অযথা কারো সমালোচনা করা যাবে না।

(৬)
কারো কোন দায়িত্বে অবহেলা বা অনিয়মের কারণে তার সমালোচনা করা বা তার দোষ ত্রুটিগুলো অন্যদের বললে গীবত হবে।

(৭) কেউ যদি তার দায়িত্বে থাকাকালীন গাফিলতি করে যায় বা ভুল-ত্রুটি করে থাকে, তাহলে হয়তো তাকেই সতর্ক করবেন অথবা উর্ধতন কাউকে বলবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...