আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
203 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আমি খুব মানসিক অশান্তিতে ভুগতেছি,আমি শান্তি পাইতেছি না,তার উপরে আমার ওয়াসওয়াসার সমস্যা তো আছেই। আর আমি ইন্ট্রোভার্ট প্রকৃতির মানুষ,তাই কাউকে কিছু খুলেও বলতে পারছি না। আল্লাহর ওয়াস্তে সঠিক পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবেন। আমার বিয়ে হয় ২০২১ এ। বিয়ের পর থেকে ১ বছর আমি বাবার বাড়িতেই ছিলাম কিছু কারণে(আমি স্বামীর কাছেই চলে আসতাম,কিন্তু কিছু সমস্যার জন্য সেটা সম্ভব হচ্ছিল না)। গত বছর জুনে আমার স্বামীর কাছে চলে এসেছি। সমস্যা হচ্ছে,আমি যখন আমার বাবার বাড়িতে ছিলাম,বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই উনার সাথে আমার ঝগড়া লেগেই থাকতো। যদিও উনিও চাইতেন না ঝগড়া হোক,আমিও চাইতাম না,কিন্তু তারপরও অনিচ্ছা সত্বেও ঝগড়া হতোই। উনি না চাইতেও আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করতেন, পান থেকে চুন খসলেই দুর্ব্যবহার করতেন।পরে ঠিকই এসবের জন্য মন খারাপ করতেন। আমি চলে আসার পর থেকে আলহামদুলিল্লাহ সব ঝগড়া ঝাটি,রাগারাগি সব বন্ধ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে। কিন্তু সমস্যা যেটা হয়েছে,যখন আমি বাবার বাড়ি ছিলাম,উনি ছোট থেকে ছোট যে কোনো কিছুতে এত অস্বাভাবিক পর্যায়ে রেগে যেতেন,এক পর্যায়ে গালাগাল পর্যন্ত করতেন,মাঝখানে সব কিছু মিলিয়ে ওনার আচরণে মনে হচ্ছিল,উনি যাদু আক্রান্ত(ওই অবস্থায় আমাদের মধ্যে বিচ্ছেদের জাদুর লক্ষণ গুলো পুরো মিলে গিয়েছিল,এখন অবশ্য নেই আলহামদুলিল্লাহ)। আমি বাবার বাড়ি থাকাকালীন একদিন উনি আমার উপর রেগে যান ফোনে কথা বলার সময়,আর উনি তখন প্রায়ই রেগে গিয়ে বলতেন তোমাকে তালাক দিয়ে দিবো,তোমাকে আর রাখবনা আমি। সেদিন ও ওই কথা বার বার বলেছিলেন,যখন উনি রেগে যাচ্ছিলেন,আমি ভয় পেয়ে কল কেটে দেই,উনি বারবার কল দিচ্ছিলেন,কিন্তু আমি ধরি নি,পরে উনি আমার মোবাইল এ মেসেজে ১ তালাক লিখে পাঠান, উল্লেখ্য,১ তালাক দিলাম,বা দিয়েছি,এসব কিছুই লিখেন নি উনি। পরবর্তীতে একই ঘটনার আবার পুনরাবৃতি ঘটে।(মানে আমার হাসব্যান্ড একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছিলেন কিন্তু, আমি যেভাবে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছি,একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছিল। উনি একইভাবে রেগে যান,এবং আমি পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কল কেটে দেই,এবং উনি আবার এক তালাক লিখে পাঠান। মানে একই ঘটনা ২ বার ঘটেছে একবার এপ্রিল এ, একবার মে তে। এবং জুন মাসে আমি চলে এসেছিলাম আমার স্বামীর কাছে),উস্তাদ আমার ঘটনা এতটুকুই মনে আছে,কল কেটে দেয়ার আগে উনি আমাকে তালাক বলেছেন কিনা মনে নেই আমার, শুধু লিখে পাঠানোর ঘটনাগুলো মনে আছে।
ঘটনার ২ মাসের মধ্যেই আমি উনার কাছে চলে আসি। আমি আসার পরে উনাকে বারবার সেদিনের ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি,উনি আমাকে বলেছেন, উনি আমাকে ভয় দেখানোর জন্য এরকম করেছেন,ওনার আমাকে তালাক দেয়ার কোনো নিয়ত ছিলো না,এবং উনিও চান না আমার থেকে আলাদা হতে।  আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে ২ বার একই ঘটনা,তাই আমি বলেছি আল্লাহর কসম করে বলুন আমাকে,উনি তারপর আল্লাহর কসম করেই বলেছেন আমাকে। আমি চিন্তায় চিন্তায় শেষ,আমাদের কি তালাক হইছে না হয় নাই,শয়তান আমার মনে নানারকমের ওয়াসওয়াসা দিয়েই যাচ্ছে,আমি কোনোভাবে শান্ত হতে পারছি না। আমি কি করবো? আমার পাগল হওয়ার অবস্থা। উঠতে বসতে আমার শুধু এসব চিন্তা আসে মাথায়,আর অনেক কান্না আসে। এসব বেশি হয় যখন আমি একা থাকি,আমার স্বামী বাসায় থাকলে আমার এসব মনে হয় না। আর উনি মাঝে মাঝে কোনো কিছু নিয়ে রেগে যদি বলেন এমন করো না আমি উল্টা পাল্টা কিছু করে ফেলবো,আমার ভয় হয় উনি কি তালাকের নিয়তে বলে ফেললেন নাকি?উনাকে জিজ্ঞেস করতেও ভয় লাগে। সারাক্ষণ ভয় লাগে,আতংক কাজ করে আমার মধ্যে। শান্তি পাই না। আমি শান্তিতে সংসার করতে চাই,কিন্তু এসব কিছু মিলিয়ে আমি পেরে উঠছি না,উস্তাদ অনুগ্রহ করে আমাকে বিস্তারিত সমাধান দিন। জাজাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইয়াকিন বিশ্বাস ব্যতিত কোনো হুকুম প্রমাণিত হয়না।
যেমন ইতিপূর্বে একটি মূলনীতি আমরা উল্লেখ করেছি যে,
আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,
اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ
ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ} 
ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]

মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।
হাদীসটি এই,
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয়।এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়,যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে।(আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)............ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/293

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার স্বামী পরপর দুই তালাক মুবাইল মেসেজে লিখে দিয়েছেন, এটা প্রায়ই নিশ্চিত।তবে এক তালাক মুখে বলেছিলেন কি না? সেটা নিশ্চিত নয়।এমনকি তিনি কসম করেও বলেছেন যে, তিনি তালাক দেননি। তাই আপনাদের সংসারে শুধুমাত্র দুই তালাকই পতিত হয়েছে। আপনারা এখন সংসার করতে পারবেন। ভবিষ্যতে নিশ্চিতভাবে আরো এক তালাক দিলে তখন আপনারা আর সংসার করতে পারবেন না।যতদিন না তালাক সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে, সংসার করতে পারবেন।অযথা তালাক নিয়ে কোনো প্রকার সন্দেহ বা ওয়াসওয়াসাতে লিপ্ত হবেন না।জাযাকুমুল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...