আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
170 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম।

এখানে আমি বিস্তারিত লিখে দিচ্ছি দয়া করে ভালোভাবে বুঝে উত্তর দিবেন। আমি খুবই বিচলিত।

আট মাস আগের কথা; একদিন স্ত্রী স্বামীর কাছে তালাক চায়। স্বামী রাগান্বিত হয়ে তাকে সংখ্যা উল্লেখ করে ১ তালাক দেয়। তখন স্বামী স্ত্রী কেউই কারোর কাছে না। ফোনকলে তালাক দেয় স্বামী। দুজনের মধ্যে সমঝতা আসলে তারা স্বামী স্ত্রী (মাস) স্পর্ষ  করে এতে তালাক নষ্ট হয়ে যায়।

চারপাঁচমাস পর স্ত্রী আবারো তালাক চায় এবং খুব খারাপ ব্যবহার করে। স্বামী রাগান্বিত হয়ে ফোনে আবারো তালাক দেয় বলে (আমি তোমাকে তালাক দিলাম) কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি। এবারও সমঝোতায় আসে। ইদ্দত শেষ হওয়ার আগে স্বাক্ষির উপস্থিতিতে আবারো বিবাহ পড়ানো হয়।

এর কয়েক মাস পর ঝগড়ার একটা পর্যায়ে স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেয়া। কিন্তু কোনো সংখ্যা উল্লেখ না করে, ফোন কোরে বলে (আমি তোমাকে তালাক দিলাম)। কিন্তু দুজনের আবারো সমঝোতায় আসতে চায়। একে অন্যের জন্য কান্নাকাটি করে। পরে এক মুফতি হাসেবকে জানালে তিনি বলেন, মাজহাব পরিবর্তান করে আপনার উভয় যদি শাফী মাজহাব অনুস্মরণ করেন, তাহলে আপনারা বিবাহ করতে পারবেন।

দুজন শাফী মাজহাব গ্রহন করে তারা আবারো সাক্ষির উপস্থিতিতে বিবাহ পড়িয়ে নেয়। আজ এই দাম্পত্যের কর্তা কোরান তেলাওয়াত করছিলেন। সূরা বাকারার ২৩০ নং আয়াত পড়ে সে খুব ভেঙ্গে পড়ে। সেখানে তৃতিয় তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আল্লাহ অন্য স্বামী গ্রহণের শর্ত দিয়েছেন। এদিকে তৃতিয়বার বিবাহের পরও তাদের সহবাস হয়েছে।

 এখন জানার বিষয় হচ্ছে, ফোনকলের এই তালাক কি তালাক হিসাবে কার্যকর হবে? তাদের তৃতিয় বিবাহকি সঠিক হয়েছে?

তারা একসাথে সংসার করতে চায় এখন কী করনিয়?
বাস্তারিত জানিয়ে উপকার করবেন আশাকরি

1 Answer

0 votes
by (679,600 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তিন উক্ত স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।      
এখানে সকল ইসলামী স্কলারদের মতেই তিন তালাক হবে।
ইমাম শাফেয়ী রহঃ সংক্রান্ত যেই বিষয় উপরে উল্লেখ রয়েছে,তাহা তার নামে স্পষ্ট মিথ্যাচার।
বাস্তবতার সাথে এর কোনো মিল নেই।       

উল্লেখিত স্বামী স্ত্রীর ঘর সংসার স্পষ্ট যেনা হচ্ছে।  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
★তিন তালাক দেবার পর উক্ত মহিলা আর নিজের স্ত্রী থাকে না। পর মানুষ হয়ে যায়। এটিই অমোঘ বিধান। 

এক্ষেত্রে সূরত একটিই বাকি আছে। তা হল, সেই স্ত্রীর অন্যত্র বিবাহ হতে হবে।তারপর সেই স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে হবে। এমনকি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে। তারপর উক্ত স্বামী যদি সেই স্ত্রীকে তালাক দেয়, তারপর ইদ্দত শেষ হয়, তাহলেই কেবল ১ম স্বামী আবার উক্ত মহিলাকে বিবাহ করতে পারবে। এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবে। এছাড়া দ্বিতীয় কোন রাস্তা খোলা নেই।


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠] 

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে,তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা;যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]

وقال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك

হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন-“যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২, ২/৮০৩}

عن مجاهد قال كنت عند ابن عباس فجاء رجل فقال إنه طلق امرأته ثلاثا. قال فسكت حتى ظننت أنه رادها إليه ثم قال ينطلق أحدكم فيركب الحموقة ثم يقول يا ابن عباس يا ابن عباس وإن الله قال (وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا) وإنك لم تتق الله فلم أجد لك مخرجا عصيت ربك وبانت منك امرأتك

অর্থ: হযরত মুজাহিদ রহঃ. বলেন,আমি ইবনে আব্বাস রাঃ-এর পাশে ছিলাম। সে সময় এক ব্যক্তি এসে বলেন-‘সে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ চুপ করে রইলেন। আমি মনে মনে ভাবছিলাম-হয়ত তিনি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার কথা বলবেন (রুজু করার হুকুম দিবেন)। কিছুক্ষণ পর ইবনে আব্বাস রা. বলেন,তোমাদের অনেকে নির্বোধের মত কাজ কর;[তিন তালাক দিয়ে দাও!] তারপর ‘ইবনে আব্বাস! ইবনে আব্বাস! বলে চিৎকার করতে থাক। শুনে রাখ আল্লাহ তা‘য়ালা বাণী-“যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘য়ালাকে ভয় করে আল্লাহ তা‘য়ালা তার জন্য পথকে খুলে দেন। তুমিতো স্বীয় রবের নাফরমানী করেছো [তিন তালাক দিয়ে]। এ কারণে তোমার স্ত্রী তোমার থেকে পৃথক হয়ে গেছে। {সুনানে আবু দাউদ-১/২৯৯, হাদীস নং-২১৯৯, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৪৭২০, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১৪৩}

আরো জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
এখন সংসার করার আর কোনো পথ নাই?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...