আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
55 views
in সালাত(Prayer) by (5 points)
১/জোহরের ওয়াক্তের সময় আছে চার মিনিট। কিন্তু ফরজ নামাজ শেষ করতে ৮ মিনিটের মত লাগবে। তাহলে কিভাবে নিয়ত করবো? কায়া নাকি এমনি?

২/বিভিন্ন হাদিস দ্বারা ১ রাকাত বিতর পড়ার হুকুম পাওয়া যায়। দেশের অনেক বড় বড় আলেম ও এক রাকাত বিতর পড়ার অনুমতি দেন। কিন্তু আপনারা বলেন হানাফি মাযহাব অনুযায়ী বিতরের নামাজ পড়া যায় না।

আমি আগে মাযহাব বুঝতাম না। কিন্তু এখন বুঝি। আমাদের দেশে সবাই হানাফি মাযহাব মানে। হুজুর, মুফতিরাও হানাফি মাযহাবের। তাই আমাকেও সেটা মানতে হয়। এমন নয় যে আমি ছোট থেকে বুঝে শুনে হানাফি মাযহাব মানছি।
ক/এক্ষেত্রে আমার জন্য মাযহাব মানা কতটুকু দরকার? মাযহব না মানলে গুনাহ হবে?

খ/আমি কি সুবিধা অনুযায়ী হাদিস থেকে ও কিছু নিতে পারবো? যেমন-বিতরের এক রাকাত নামাজ পড়া।
গ/আমি কি কোনো মাযহাব না মানলে আহলে হাদিসের অন্তভুক্ত হবো?

ঘ/আমাদের দেশের বেশি আলেমরা তো মাযহাব মানে। সেক্ষেত্রে আমি কোনো মাযহাব না মেনে, বা আহলে হাদিস না মেনে শুধু তাদের থেকে শুনে আমল করতে পারবো?
জাযাকাল্লাহ খইরান

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
আপনি যদি চার মিনিটের মধ্যে ছোট কিরাআত দিয়ে দ্রুত নামাজ শেষ করতে না পারেন,সেক্ষেত্রে আপনি এখন নামাজ আদায় না করে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর কাজা আদায় করবেন।

আর যদি আপনার প্রবল বিশ্বাস হয় যে ছোট কিরাআত দিয়ে দ্রুত এই চার মিনিটের মধ্যেই জোহরের ফরজ নামাজ আদায় করতে পারবেন, তাহলে জোহরর নামাজ আদায়ের নিয়ত করবেন। কাজা নয়।

(০২)
আপন যেভাবে শরীয়ত মানছেন,এ পদ্ধতি জায়েজ নেই।
এতে নফসের অনুসরণ, নফসের পূজা হবে। 

সমস্ত মাসয়ালাতেই নির্দিষ্ট এক মাযহাব অনুযায়ী আমল করতে হবে।
অন্যথায় নফস ও খাহেশাতের পূজা হবে,যাহা হারাম। 

আল্লাহ তায়ালা সুরা সোয়াদের ২৬ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ 

 وَ لَا تَتَّبِعِ الۡهَوٰی فَیُضِلَّکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَضِلُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ لَهُمۡ عَذَابٌ شَدِیۡدٌۢ بِمَا نَسُوۡا یَوۡمَ الۡحِسَابِ ﴿۲۶﴾

আর প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, কেননা তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয় তাদের জন্য কঠিন আযাব রয়েছে। কারণ তারা হিসাব দিবসকে ভুলে গিয়েছিল।

বিস্তারিত জানুনঃ

★নির্দিষ্ট মাযহাব অনুসরণ করা ওয়াজিব।

এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ 
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)

উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
انما شفاء العي السوال 
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।
এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে?

যার তাকলীদ করা হবে, তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েঝেন।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ, উনার অমর গ্রন্থ আকিদাতুল-জায়্যিদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।মোটকথাঃ এ সমস্ত শর্তসমূহ আজকাল প্রায় বিরল।

 তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে যথাঃ-
(১)তাকলীদে শাখসী বা ব্যক্তি তাকলীদ।অর্থাৎ শরীয়তের প্রত্যেকটি মাস'আলায় নির্দিষ্ট কোনো একজনকে তাকলীদ করা।
(২)তাকলীদে গায়রে শাখসী বা স্বাধীন তাকলীদ, অর্থাৎ যেকোনো মাস'আলায় যেকোনো একজনকে তাকলীদ করা।সহজ কথা নিজের ইচ্ছানুযায়ী একেক মাস'আলায় একেকজনের তাকলীদ করা।

মুতাওয়াতির পর্যায়ের বর্ণনার মাধ্যমে প্রমাণিত রয়েছে যে, কারো কোনো মাস'আলা জানা না থাকলে না,তিনি বিজ্ঞজনের তাকলীদ করবেন।তাকলীদ করা ফরয।এটা হলো মতলকে তাকলীদ তথা সাধারণ তাকলীদের বিধান।সমস্ত উলামায়ে কেরাম এমনকি আহলে হাদীসের মুহাক্বিক ইমামগনও মতলকে তাকলীদ তথা সাধারণ তাকলীদকে স্বীকার করে থাকেন।অধিকাংশ আহলে হাদীস সাধারণ তাকলীদের ফরযিয়্যাতেরও প্রবক্তা।

সুতরাং অজ্ঞদের জন্য বিজ্ঞজনের তাকলীদ করা যে ফরয,এতে কারো দ্বিমত নেই,মতবিরোধ নেই।

তাকলীদের পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
তাকলীদে শাখসী করা হবে না গায়রে শাখসী করা হকে।
আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত তাকলীদে শাখসী গ্রহণযোগ্য মনে করেন।এবং এ ব্যাপারে তারা ওয়াজিবের বিধান প্রয়োগ করেন।ফরযের বিধান এজন্য আরোপ করেন না।
,
কেননা সাধারণ তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে।(ক)তাকলীদে শাখসী(খ)তাকলীদে গায়রে শাখসী।যেহেতু সর্বসম্মতভাবে মতলকে তাকলীদ ফরয।এবং তার দু'টি শাখা রয়েছে।তাই কোনো একটাকে মেনে নিলেই ফরয বিধান যে তাকলীদ রয়েছে,সেটা পালন হয়ে যাবে। চায় শাখসীকে পালন করা হোক বা গায়রে শাখসীকে পালন করা হোক।সুতরাং তাকলীদে গায়রে শাখসী করা দ্বারা ঠিক সেভাবেই ফরয দায়িত্ব আদায় হবে,যেভাবে তাকলীদে শাখসী দ্বারা ফরয দায়িত্ব আদায় হয়। 

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1936

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ক,
এক্ষেত্রে কোনো এক নির্দিষ্ট মাযহাব মানা আপনার উপর ওয়াজিব।
মাযহাব না মানলে ওয়াজিবের উপর আমল না করার দরুন গুনাহ হবে।

খ,
নিজ সুবিধা অনুযায়ী আপনি এমনটি করতে পারবেননা।

গ,ঘ,
এক্ষেত্রে কোনো এক নির্দিষ্ট মাযহাব মানা আপনার উপর ওয়াজিব।

আপনি কোনো এক নির্দিষ্ট মাযহাব না মেনে আহলে হাদীসের অন্তর্ভুক্ত হলে সব ক্ষেত্রে তাদের মাসয়ালাই মানতে হবে।
অন্য মাযহাবের মাসয়ালা মানতে পারবেননা।
এক্ষেত্রেও আপনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 265 views
0 votes
1 answer 73 views
asked Jul 13, 2022 in সালাত(Prayer) by Alif (18 points)
...