আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (28 points)

আসসালামু আলাইকুম হুজুর, 

হুজুর আমি আপনাদের থেকে জেনেছিলাম যে, জমি বন্ধক রাখা জায়েজ আছে তবে বন্ধক গ্রহণ করলে সেই জমি ভোগ করা জায়েজ হবে না। এটি জানার পরেও আমার মনে নানা ধরনের যুক্তি আসতে থাকে যে, জমি বন্ধক রাখাও জায়েজ নেই। উল্লেখ্য যে, আমি একজন সাধারণ মানুষ। কোনো আলেম নই। জমি বন্ধক রাখা জায়েজ নেই বা জমি বন্ধক রেখে টাকা ভোগ করা হারাম- এই বিষয়ে নানা ধরনের যুক্তি নিয়ে চিন্তা করি এবং বিষয়গুলো আমার কাছে যুক্তিযুক্তও মনে হয়। এমতাবস্থায় আমি ধারণা করেছিলাম যে,জমি বন্ধকের টাকা হারাম বা ধারণা করেছিলাম যে, হালাল বা হারাম কি হয় হোক; আমি জমি বন্ধকের টাকা দিয়ে ব্যবসা(কনফেকশনারি)  শুরু করি। যদিও আমি হারাম টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে চাই নি। হারাম থেকে দূরে থাকতে চেয়েছিলাম। তারপরেও মনে হয়েছে - হালাল বা হারাম কি হয় হোক ব্যবসা শুরু করি। বা ভেবেছিলাম হারাম হলে হোক ; ব্যবসা শুরু করি। (আমি জানতাম যে, কেউ যদি হারাম টাকা দিয়ে হালাল ব্যবসাও করে তবে তার সব ইনকাম হারাম হবে)।
আমার বাবা আমাকে জমি বন্ধক রেখে টাকা দেয়। সেই টাকা আমি দোকানে লাগাই। উল্লেখ্য যে, আমি আমার বাবা মায়ের মতের বিরুদ্ধে দোকানটি দিয়েছি। তারা কেউ চান না যে, আমি দোকান করি। তারা চান আমি যেন চাকরি করি।
ক) প্রত্যেকটি কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। আমার নিয়ত যেহেতু ছিল- বন্ধকের টাকা হারাম হলেও ব্যবসায় লাগাই বা হালাল হারাম কি হয় হোক টাকা ব্যবসায় লাগাই। আমার এমন মানসিকতার কারণে ব্যবসায় লাগানো টাকাগুলো হারাম হয়ে গেছে? হয়ে গেলে এখন করণীয় কি?
খ) আমার শ্বশুরের সুদের ব্যবসা ছিল এক সময়। এখন করে কিনা জানি না। আমার শ্বশুর তার বাবার কাছ থেকে অনেক দামি জমি পেয়েছিল। সেগুলোর অনেকগুলোই বিক্রি করেছে। মানে আমি শুনেছি, আমার শ্বশুর সমস্যায় পড়লেই জমি বিক্রি করে। আমার শ্বশুরের বেসরকারি হাসপাতালে কিছুটা শেয়ারের ব্যবসা এবং চাউলের ব্যবসা আছে। আমার শ্বশুরের এসব ব্যবসায় ইনভেস্টের টাকাগুলো হালাল ছিল কিনা তা বলতে পারছি না। আর আমার মনে হয় - উনি নিজেও হয়ত বলতে পারবেন না। উনি বলতে পারলেও আমার এসব প্রশ্ন করতে একটু সংকোচ লাগে। আমার মনে হয়, উনি সঠিকভাবে বলতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে যে- তার ব্যবসা দুইটির ইনভেস্টের টাকাগুলো হালাল ছিল নাকি হারাম ছিল। আমার শ্বশুর তার বাবার কাছ থেকে যেসব সম্পদ পেয়েছেন সেসবের কিছু অবৈধ থাকলে থাকতেও পারে।
আমার শ্বশুর বাড়ি থেকে অনেক কিছু বাধ্য হয়ো নিতেও হয়। কারণ তাদের মেয়ের বাড়িতে তারা এটা ওটা দেয়। বাধা দিলেও পাঠায়। আমি এখন কি করব? অনেক নিষেধ করেছি। আবার নিয়েওছি। আমি আমার শ্বশুরের দেওয়া হাজার দুয়েক বা এমন সামান্য কিছু পরিমাণ টাকা আমার দোকানে লাগিয়েছি। তারা তাদের মেয়ের বাড়িতে কিছু পাঠায় এবং ভবিষ্যতেও পাঠাবে। কি করব? না নিলেও হচ্ছে না
আমার করণীয় বলুন।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


বন্ধক রাখা হয় ঋণ আদায়ের নিশ্চয়তাস্বরূপ। এতে ঋণদাতা নিশ্চিত থাকেন যে ঋণ আদায় না করলেও বন্ধককৃত বস্তু থেকে আদায় করে নেওয়া যাবে। 

পবিত্র কোরআনেও এর নির্দেশ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর যদি তোমরা সফরে থাকো এবং কোনো লেখক না পাও, তাহলে হস্তান্তরিত বন্ধক রাখবে। আর যদি তোমরা একে অপরকে বিশ্বস্ত মনে করো, তবে যাকে বিশ্বস্ত মনে করা হয়, সে যেন স্বীয় আমানত আদায় করে এবং নিজ রব আল্লাহকে ভয় করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৮৩)
,
বন্ধককৃত বস্তু বন্ধকগ্রহীতার কাছে আমানতস্বরূপ। 

★বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতার কোনো ফায়দা হাসিল করা নাজায়েজ ও হারাম। এমনকি বন্ধকদাতা এর অনুমতি দিলেও পারবে না। কারণ বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতা কোনো ধরনের ফায়দা উপভোগ করা সুদের অন্তর্ভুক্ত, যা হারাম। (বাদায়েউস সানায়ে : ৬/১৪৬)

ইবনে সিরিন (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক লোক সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.)-এর কাছে জিজ্ঞেস করল, এক ব্যক্তি আমার কাছে একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, তা আমি আরোহণের কাজে ব্যবহার করেছি। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, তুমি আরোহণের মাধ্যমে এর থেকে যে উপকার লাভ করেছ তা সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৭১)
,
বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম কাজি শুরাইহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সুদ পান করা কিভাবে হয়ে থাকে? তিনি বলেন, বন্ধকগ্রহীতা বন্ধকি গাভির দুধ পান করা সুদ পানের অন্তর্ভুক্ত। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৬৯)
,     
বৈধ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনঃ 

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত মাসয়ালা জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
ক,
আপনি যে টাকা নিয়েছেন,এটি ঋন। 
সুতরাং এ টাকা হালাল।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার এমন মানসিকতার কারণে ব্যবসায় লাগানো টাকাগুলো হারাম হয়ে যায়নি।

আপনি নিশ্চিন্তে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন,কোনো সমস্যা নেই।

খ,
প্রশ্নের বিবরণ মতে বুখা যাচ্ছে যে আপনার শশুর যরি এখনো সূদী লেনদেনে জড়িত থাকে,তবুও তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল হওয়ায় তার দেয়া হাদিয়া,টাকা গ্রহন করা জায়েজ আছে।

এ টাকা যে আপনার দোকানে লাগিয়েছেন,এতে কোনো সমস্যা হবেনা।
তারা তাদের মেয়ের বাড়িতে কিছু পাঠায় এবং ভবিষ্যতেও পাঠাবে,এতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...