আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (89 points)
১. ক্লাসে পড়ানোর সময় অনেক সময় ক্লাসে কিছু লেট হয়ে যায়, (ভিন্ন কাজের জন্য), কখনো ছাত্র দের পড় দিয়ে মোবাইলে বিভিন্ন জিনিস দেখি( ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার মানা আছে), তবে ক্লাসের বাচ্চাদের পড়া বা লেখা দিয়ে মোবাইল দেখি একটু, এতে কি বেতন হারাম হবে?

২. একটা নাতে রাসূলের লাইন, " সবছে আওলা ও আলা, হামারা নবী,খলক সে আউলিয়া, আউলিয়া সে রাসুল, আউর রাসুলুছে আলা হামারা নবী"  এই নাতে রাসুলে নবী নূরের ইত্যাদি কথা ও আছে,তবে এই দুটি লাইন খুব ই পছন্দ আমার এদুই লাইন গাইলে কোনো সমস্যা না তো? আসলে আমরা নামাজে "সুবহানা রাব্বিয়াল আলা "বলি, যেখানে আমাদের রবকেও আলা বলে সম্ভোদন করি, এতে কি এই নাতে রাসুলের লাইনে কি শিরক বা কিছু হবে? না কি গাইতে পারবো?

৩. একজনকে বললাম যে আজকে স্বপ্নে দেখেছি তুমি শয়তান হয়ে গেছো.. এট শুনে সে বললো যে "আমি শয়তা* হয়ে গেছি" এর ফলে কি তার কুফর হবে?

৪. এক হিন্দু মহিলার মেয়ে সম্পর্কে বলতে গিয়ে কেও যদি বলেন," এ তো মইরা গেলো নে, এরা দোয়া করতে করতে হিন্দুরায় যেমনে যা করে তা কইরা ইটারে বাছাইছে" এভাবে বলায় কি কুফর হবে?

৫. কেও যদি হেসে হেসে বলে, " এই মেয়ের নাম রাখছে পুজা,এখন এরে পুজা করো" তবে কি কুফর হবে?

৬. ওয়াজ শুরু শব্দ শুনে কেও যদি বলে, শুরু ওইছে হুজুর এরার চিল্লানি এতে কি কুফর হবে?

৭. হারাম খেতে হলে অল্প না খেয়ে বেশি করে খাওয়া উচিত এবং ভালো কেও যদি এমন বুঝায় এবং এমন বুঝানোর জন্য কেও যদি বলে, " গু খানা হে তো হাতি কা গু খা লো" এতে কি কুফর হবে?

৮. অনেক বেলা হয়ে গেছে বুঝানোর জন্য কেও যদি মজা করে বলে জোহর ওয়াক্তো ওই গেছে। (সে জানে এখনো হয় নি ওয়াক্তো)
এতে কি গুনাহ বা কুফর হবে?

৯. গান শুনতে না করায় একজন বললো কি করবো ভালা লাগে না এর জন্য শুনি, পরে হতাশ হয়ে বললো," দুনিয়ার সব ই গুনাহ" তার এই কথায় কি কুফর হবে?

১০.যাদুর প্রভাব রয়েছে, এই প্রভাব কে যদি কেও ক্ষমতা ভেবে বিশ্বাস করে,যে যাদুর ক্ষমতা আছে (মূলত প্রভাব), বা বলে প্রভাব বুঝানোর জন্য বলে যাদুর ক্ষমতা আছে তবে কি কুফরি হবে?

1 Answer

0 votes
by (677,400 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
এতে বেতন হারাম হবেনা।

(০২)
এই নাতে রাসুলের লাইনে শিরক বা কিছু হবেনা।  গাইতে পারবেন।

(০৩)
আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহঃ তার বিখ্যাত ফাতওয়া গ্রন্থ ফাতওয়া শামীতে উল্লেখ করেন-

لا خلاف في كفر المخالف في ضروريات الإسلام من حدوث العالم وحشر الأجساد ونفي العلم بالجزئيات وإن كان من أهل القبلة المواظب طول عمره على الطاعات كما في شرح التحرير (رد المحمتار، كتاب الصلاة، باب الإمامة، مطلب البدعة خمسة أقسام -2/300)

 আহলে কিবলার মধ্য থেকে যে ব্যক্তি দীর্ঘ জীবন পর্যন্ত ইবাদত বন্দেগীর করার পরও যদি পৃথিবী সৃজিত, সশরীরে হাশরের ময়দানে উঠতে হবে, বা আল্লাহ তাআলার জ্ঞান সর্বত্র বিস্তৃত এরকম আবশ্যকীয় দ্বীনী বিষয়কে অস্বিকার করে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি যে, কাফের এতে কোন মতভেদ নেই। {ফাতওয়া শামী-২/৩০০} শরহে আকাইদে নাসাফিয়্যাহ এর ব্যখ্যাগ্রন্থ নিবরাস গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

اهل القبلة فى اصطلاح المتكلمين من يصدق بضروريات الدين (الى قوله) فمن انكر شيئا من الضروريات (الى قوله) لم يكن من اهل القبلة، ولو كان مجاهد بالطاعات وكذالك من باشر شيئا من امارات التكذيب كسجدة الصنم ولاإهانة بامر شرعى والإستهزاء عليه فليس من اهل القبلة ان لا يكفر بارتكاب المعاصى ولا بانكار الامور الخفية غير المشهورة هذا ما حققه المحققون، 

আহলে কিবলা মুতাকাল্লিমীন তথা আক্বায়িদবীদতের পরিভাষায় ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যিনি দ্বীনের আবশ্যকীয় সকল বিষয়কে বিশ্বাস স্বীকার করেন। জরুরিয়্যাতে দ্বীন তথা দ্বীনের আবশ্যকীয় বিষয়ের কোন একটিকেও যদি অস্বিকার করে তাহলে সে আহলে কিবলা নয়। যদিও সে ইবাদত বন্দেগীতে খুবই তৎপর হয়। এমনিভাবে ঐ ব্যক্তি ও আহলে কিবলা নয়, যে কুফরী বা বাতিলের কোন একটি বিষয়ও করে থাকে, যেমন মুর্তিপূজা করা, অথবা শরয়ী কোন বিষয়কে ঠাট্টা করা, মজা করা, তাহলে এ ব্যক্তিও আহলে কিবলা নয়। আর আহলে কিবলাকে কাফির না বলার দ্বারা উদ্দেশ্য হল, গোনাহ করার কারণে কোন আহলে কিবলাকে কাফের বলা হবে না। সাথে এমন বিষয়কে অস্বিকার করলেও কাউকে কাফের বলা যাবে না যা জরূরিয়্যাতে দ্বীন তথা দ্বীনের আবশ্যকীয় বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত নয়। {নিবরাস} 

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
দ্বীনের অকাট্য বিষয়, যেগুলোর বিপক্ষে বললে/অস্বীকার করলে/ঠাট্রা করলে ইমানে সমস্যা হবে,তাহা হলো কুরআন দ্বারা প্রমানীত কোনো বিধান।

তবে এক্ষেত্রে কুরআনের যেকোনো আয়াত,যেকোনো হাদীস অস্বীকার করলে/ঠাট্রা করলে ইমানে সমস্যা হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ 

‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)। 

 فَنَذَرُ الَّذِيْنَ لاَ يَرْجُوْنَ لِقَاءَنَا فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ 

‘সুতরাং যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে ব্যতিব্যস্ত করে রাখি’ (ইউনুস ১১)। 

وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا-
‘আর কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারী করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে। অন্যথা তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একই জায়গায় সমবেত করবেন’ (নিসা ১৪০)। 

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এর ফলে তার কুফর হবেনা।

(০৪)
এখানে মূলত অসিলা বুঝানো উদ্দেশ্য, তাই কুফরি  হবেনা।

তবে কেহ আল্লাহকে বাচানোর মালিক মনে না করে উক্ত কথা বললে সে কাফের হয়ে যাবে। 

(০৫)
এতে কুফর হবেনা।

(০৬)
এতেও কুফর হবেনা।

(০৭)
এতে কুফর হবেনা।

(০৮)
এতে গুনাহ বা কুফর হবেনা।

(০৯)
তার এ কথায় কুফর হবেনা।

(১০)
প্রভাব বুঝানোর জন্য বললে আর আকীদা বিশুদ্ধ থাকে যে সমস্ত ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহই,জাদুর ক্ষমতা নেই, তাহলে এতে কুফরি হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...