আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (100 points)
edited by
১. ২০১৭/১৮ সালে কলেজে থাকাকালীন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উপবৃত্তি নিয়েছিলাম কিন্তু বাবার বেতন কম উল্লেখ করেছিলাম।

তখন আমাদের উপর যাকাত ফরজ ছিল না, ঋণগ্রস্ত ও ছিলাম না।

এখন ২০২৩সাল,আমার পরিবার ঋণগ্রস্ত, আমি একজন মেয়ে। উপবৃত্তির পরিমাণ কত ছিল ঠিক মনে নেই,কেউ কেউ বলল ৭০০০+। ধরে নিলাম এটা ১০,০০০টাকা ছিল।

এই টাকা কি আমায় সওয়াবের নিয়ত বাদে দান করে দিতে হবে কারণ এটা হারাম?

যদি করতে হয়, এটা আমার পরিবারের জন্য কঠিন,তারা ঋণগ্রস্ত।
তাহলে কি এই টাকা সওয়াবের নিয়ত বাদে দান করা আমার জন্য এই মুহূর্তে ফরজ? আমি যেহেতু ইনকাম ও করি না, বাবার আয় থেকেই দান করা লাগবে,যেটা ম্যানেজ করা কঠিন

২. আর এখন যদি আমি ইনকাম করা শুরু করি, তখন এর হুকুম কী? ইনকামের পরিমাণ উপবৃত্তির টাকার তুলনায় অনেক কম যদি হয়,এই টাকার মধ্যে  ইনকাম করতে এক্সট্রা পরিশ্রম করে কাজ করার জন্য খাওয়াদাওয়া ও কাজ রিলেটেড অন্যান্য খরচ-ও তুলতে হবে

৩. আমার আত্মীয়ের ইনকাম হারাম, কিন্তু তার টাকা দিয়ে আমার জায়নামাজ, ট্রাঙ্ক,মশারি,চাদর, কম্বল,কাঁথা এমন আরো অনেককিছু কেনা,যেগুলো আমি নতুন করে বাসায় চাইতে পারব না যেহেতু আত্মীয় দিয়েছে। এগুলোর অর্থ সওয়াবের নিয়ত বাদে দান করে দিতে হবে কি? আর তা না করা পর্যন্ত কি এগুলো ব্যবহার হারাম হচ্ছে?

৪. আমাকে মাঝেমাঝে আত্মীয়ের বাসায় যাওয়া লাগে যার ইনকাম হারাম, এই শহরে তারা বাদে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। যেহেতু পরিবার থেকে দূরে থাকি পড়াশোনার জন্য, মাঝেমাঝে ঐ আত্মীয়ের বাসায় যাওয়া লাগে। তখন তারা অনেক খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করে আমার জন্য কিন্তু সেগুলো গিলাটাও আমার জন্য কষ্টকর, তাও খাওয়া লাগে। হারাম খাওয়ার পাপবোধেও ভুগি। পরে এসে ঐ খাদ্যের অর্থ অনুমান করে দান করে দেওয়া লাগে সওয়াবের নিয়ত বাদে। কিন্তু শুরুতে তো ঠিকই হারাম খাওয়া লাগলো।  এখন এ থেকে মুক্তির উপায় কী?

এমন কোনো উপায় কি আছে যে আমি ঐ খাবার খেলেও তা হারাম হলো না শুরুতেও?  আমি কি শুরুতেই একটা আনুমানিক টাকা সওয়াবের নিয়ত বাদে দান করে দিতে পারি? নাকি এটা গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি না?

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾

সাদাকাহ হচ্ছে শুধুমাত্র গরীবদের এবং অভাবগ্রস্তদের, আর এই সাদাকাহর (আদায়ের) জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের এবং (দীনের ব্যাপারে) যাদের মন রক্ষা করতে (অভিপ্রায়) হয় (তাদের), আর গোলামদের আযাদ করার কাজে এবং কর্জদারদের কর্জে (কর্জ পরিশোধে), আর জিহাদে (অর্থাৎ যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য) আর মুসাফিরদের সাহায্যার্থে। এই হুকুম আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়।
(সুরা তওবা ৬০)

https://ifatwa.info/7744/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
যে ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ মালের মালিক হবে।চায় সে ক্রমবর্ধমান নেসাব পরিমাণের মালিক হোক বা অক্রমবর্ধমান মালের মালিক হোক।সর্বাবস্থায় ঐ ব্যক্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে ধনী হিসেবে বিবেচিত হবে। ঐ ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ করা কখনো জায়েয হবে না।বিস্তারিত জানুন- 1461

والأولى أن يفسر الفقير بمن له ما دون النصاب كما في النقاية أخذا من قولهم يجوز دفع الزكاة إلى من يملك ما دون النصاب أو قدر نصاب غير تام، وهو مستغرق في الحاجة،
ফকিরের উত্তম ব্যখা হলো,যার নেসাব পরিমাণ মাল নেই।সুতরাং যার নেসাব পরিমাণ মালে নামী(ক্রমবর্ধমান) নাই বা যার নেসাব পরিমাণ মালে গায়রে নামী(ক্রমবর্ধমান নয়)আছে, তবে সে হাজতে লিপ্ত, এমন ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে।
(বাহরুর রায়েক্ব-২/২৫৮)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 699

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি যেহেতু সেই সময়ে নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক ছিলেননা,আপনার উপর যেহেতু সেই সময়ে যাকাত প্রদান ফরজ ছিলোনা,সেই হিসেবে আপনার জন্য উক্ত বৃত্তির টাকা গ্রহন করা জায়েজ হয়েছে।
হারাম হবেনা।
হ্যাঁ,বাবার বেতন কম উল্লেখ করার দরুন মিথ্যা বলার গুনাহ হবে।
তবে সর্বপরি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উপবৃত্তি যেটি আপনাকে দেয়া হয়েছে,এটি আপনার জন্য হালাল।

তাই আপনাকে কোনো টাকা সদকাহ করতে হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
যেহেতু আপনার কোনো টাকা সদকাহ করতে হবেনা,তাই অন্য কোনো আবশ্যকীয় প্রয়োজন না থাকলে ইনকাম করার দরকার নেই।

(০৩)
যদি সেই আত্মীয়ের পুরো ইনকাম বা অধিকাংশ ইনকাম হারাম হয়,সেক্ষেত্রে এগুলোর অর্থ সওয়াবের নিয়ত বাদে দান করে দিতে হবে।
আর তা না করা পর্যন্ত এগুলো ব্যবহার হারাম হচ্ছে।

হ্যাঁ যদি সেই আত্মীয়ের অধিকাংশ ইনকাম হালাল হয়,সেক্ষেত্রে এগুলোর অর্থ সওয়াবের নিয়ত বাদে দান করে দিতে হবেনা।
এগুলো ব্যবহার আপনার জন্য হালাল হচ্ছে।

(০৪)
যদি সেই আত্মীয়ের অধিকাংশ ইনকাম হালাল হয়,সেক্ষেত্রে সেই আত্মীয়ের বাসায় খাবার খেতে তো শুরু থেকেই সমস্যা নেই।

কিন্তু যদি সেই আত্মীয়ের পুরো ইনকাম বা অধিকাংশ ইনকাম হারাম হয়,সেক্ষেত্রে আপনি আপনার সেই আত্মীয়কে আগেই আপনার খাবার পরিমান খরচ দিয়ে দিবেন।
তাহলে আপনি নিজ টাকা থেকে খাচ্ছেন, বলা ধরা হবে,তাই এক্ষেত্রে হারাম খাওয়া হবেনা।

শুরুতেই একটা আনুমানিক টাকা সওয়াবের নিয়ত বাদে দান করে দেয়া, এটি এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি নয়।

আপনি কম করে খাবেন,আর যতটুকু খাবেন,ততটুকুর টাকা আগেই সেই আত্মীয়কে হাদিয়া হিসেবে দিয়ে দিবেন।
বা পরবর্তীতে সেই পরিমান টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...