আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
203 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (82 points)
edited by
আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ

১।ধরেন মেয়েটিকে আর তার স্বামীকে  অন্য কোন  কাগজ বলে তালাকের কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নিলে কি তালাক হবে? ধরেন বিয়ে হচ্ছে সেটা ভেবে না পড়ে সাঈন করলে স্বামী বা স্ত্রী তাহলে কি তালাক হবে? মানে বিয়ে দিবে বলে মেয়েটির মা বাবা ধোকা দিয়ে সাইন করিয়ে নিলে? ছেলেটির এখন একটু টাকা কম কিন্তু য্খন বিয়ে করে তখন টাকা ছিল। কিন্তু বাকি সব দিক দিয়ে ছেলেটি আরো এগিয়ে মেয়েটির  চাইতে। সমাজের সবাই পছন্দ করে । চাকরি করে না দোকান বা ব্যবসা করে আর সমবয়সী তাই মেয়েটির মা বাবা মেনে নিতে চায় নি। মেয়েটির মা বাবা চাকরী করে  তাই তাদের ঐ ধরনের ছেলে পছন্দ।এখন মেনে নিছে বলে অন্য কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নিলে কি তালাক হবে?

২। হুজুর আপনি বলছিলেন খালি স্টাম্ফে সাইন করিয়ে নিলে অন্য কাগজ বলে পরে সেটা তালাকের কাগজ বানিয়ে ফেললে তালাক হবে না। তাহলে ১ নম্বরের কারণে তালাক হওয়ার কারণটা যদি বুঝিয়ে বলতেন তাহলে ভালো হয়। কিছু মনে করিয়েন না।বুঝার জন্য জিগ্যেস করেছি ।

৩। শুনেছি স্ত্রী তালাক চয়লে অথবা যদি বলে মুক্তি দাও বলে। স্বামী যদি শুধু "ঠিক আছে/ok"  বললে এমনিতে স্ত্রিকে থামানোর জন্য অথবা নিয়ত ছাড়া তাহলে তালাক হয় না। আর কিছু না শুধু ঠিক আছে বললে। এটা কি সত্য?

৪। এখানে মনে হয় মানে এই সাইটে প্রশ্ন করে জানতে পেরেছিলাম যে স্ত্রী তালাক না চাইলে এমনকি স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিবে বললেও এরপর স্বামী নিয়ত ছাড়া কেনায়া শব্দ বললে তালাক হয় না কারণ স্ত্রি  তালাক চায় নি তাই। কয়েক বার করেছি মনে হয় এই প্রশ্নটা। তালাক হবে না বলেছিল মনে হয় সবসময়।

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জানে যে এটি তালাকনামা,সেক্ষেত্রে সেখানে সাইন করার দরুন তালাক নামার বিবরণ অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী জানেইনা যে সেটি কিসের কপি, যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাক প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে সে তালাক নামায় সাইন করেছে বা তালাক দিয়েছে, এটার তারই লেখা,তাহলে স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবেনা।
 
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে স্বামী যদি জানে যে সেটি তালাকনামা,তাহলে তালাক হবে।
নতুবা যদি তাকে জানতে না দেয়া হয়,সম্পূর্ণ ফহোকা দেয়া হয়,আর স্বামীও তালাক প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে সে তালাক নামায় সাইন করেছে বা তালাক দিয়েছে, তাহলে তালাক হবেনা।

(০২)
এখানে উক্ত কাগজ যেহেতু খালি নয়,সেটি একটি তালাক নামা,যেখানে পুরো বিবরণ বিস্তারিত লেখাই থাকে,বা লেখার পরেই মূলত সাইন করানো হয়,তাই লিখিত যেকোনো কাগজে সাইন করার আগে যেকোনো ব্যাক্তির তারা পড়ে নেয়ার বা জানার প্রয়োজনীয়তা থাকে।

(০৩)
হ্যাঁ, এটি সত্য।

(০৪)
হ্যাঁ, তালাক হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (82 points)
১।মানে এখানে   উপরের স্বামী যদি না জানেন যে সেটা তালাকনামা  আর না জেনে বা না পড়ে  সাঈন করলে তালাক হবে না?এটা বুঝাতে চেয়েছেন?

২। মানে উপরের স্বামীকে যদি জানতে  দেয়া না হয় অথবা ধোকা দিয়ে সাইন নিয়ে নেয় অথবা পড়তে না দিয়ে সাইন করিয়ে নিলে তাহলে তালাক হবে না ? এটা বুঝাতে চেয়েছেন?
by (682,440 points)
(০১)
হ্যাঁ, এরকম হলে তালাক হবেনা।

(০২)
স্বামী যদি জানতে না পারে যে এটি তালাক নামা,তাহলে তালাক হবেনা।
by (82 points)
edited by
উপরের ৪ নম্বর প্রশ্নের মত স্ত্রী যদি বলে তুমাকে ছেড়ে  চলে যাব অথবা বলে ছেড়ে দিয়ে চলে যাব। স্বামী ধরেন নিয়ত ছাড়া বলে যাও বা যাওগা।স্ত্রি যাবে গা বলছে তাই ধরেন যাওগা বলছে তালাকের নিয়তে না।তাহলে তালাক হবেনা তাই না? কারন স্ত্রী তালাক চায় নি তাই। এমন প্রশ্নের উত্তরে তালাক হবেনা বলেছিল মনে হয় আগে। ৯৫% মনে হচ্ছে তালাক হবে না বলেছিল এই সাইটে প্রশ্ন করার পর।
by (682,440 points)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা।
by (5 points)
edited by
উস্তায যদি স্বামী কর্তৃক পাঠানো তালাকের নোটিশের ভিতরে লেখা থাকে প্রতিপক্ষকে রেজিস্টিকৃত তালাকের রেজাই গ্রহণ করিলাম তাহলে কি তালাক পতিত হবে? স্বামী যদি নিচে তালাক দাতার স্বাক্ষরে জেনে বুঝেই সাইন করে নিজে স্ত্রীর ঠিকানায় পাঠায়? আর প্রতিপক্ষ হিসেবে স্ত্রীর নাম যদি আংশিক ভুল হয় তাহলেও? এক্ষেত্রে স্বামী যদি স্ত্রী তালাক চেয়েছে বলে স্ত্রীকে ভীতি প্রদর্শন করতে বা সংশোধনের নিয়তে নোটিশ পাঠায় তাহলেও তালাক পতিত হবে? আর যদি উক্ত নোটিশ  পাঠানোর সময় মনে তিন তালাকের নিয়ত থাকে কিন্তু নোটিশে তিন তালাকের উল্লেখ না থাকে তাহলেও কি তালাক হবে? হলে তিন তালাক হবে নাকি এক তালাক? তালাক হলে উক্ত স্ত্রীর যদি খালওয়াতে সহীহা না হয় তাহলে কি তা বায়েন তালাক হিসেবে হবে? নোটিশ পাঠানোর আগে এবং পরে স্বামী সবাই জানান যে উনি স্ত্রী চেয়েছেন বিধায় তালাকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশ সম্ভবত স্বামী নিজেই প্রিন্ট করে তৈরি করতে পারেন তবে নিশ্চিত নই। নোটিশ হুবুহু তালাকের নোটিশের মতই যেমন থাকে তেমন। উপরে লেখা তালাকের নোটিশ। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন ৭(১) অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী। নোটিশটা স্ত্রী যে স্থানে থাকেন সে এলাকার কমিশন বরাবর ছিলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। নোটিশে বিভিন্ন বিষয়ের মাঝে আরও উল্লেখ থাকে... প্রতিপক্ষ স্ত্রী ছিলো বটে। কিন্তু... ইত্যাদি কারণে সব রকম চেষ্টায় ব্যর্থ হইয়া বাধ্য হইয়া গভীর চিন্তা বশত  সম্পর্ক ছিন্ন করার মনস্থ করিয়াছি।.. তারিখ হতে নিম্ন স্বাক্ষরকারী প্রতিপক্ষকেই রেজিস্ট্রিকৃত তালাকের রেজাই গ্রহণ করিলাম। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আপনার সমীপে নোটিশ প্রেরণ করিলাম এবং ইহার একটি নকল প্রতিপক্ষকেও প্রেরণ করিলাম। নোটিশ পাঠানোর ঐ সময় স্বামীর মনের প্রকৃত নিয়ত নিশ্চিত নই। তবে পরবর্তীতে স্বামী জানান তিনি তালাক দাতার স্বাক্ষরের জায়গায় নোটিশে সাইন করার মাধ্যমে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। নোটিশে স্ত্রীর নামের বানানে ভুল (যেমন, আফিয়া তানহার জায়গায় আফিয়া তাহমিনা), নিজের নামের বানানের সামান্য ভুল (যেমন,শরিফুলের জায়গায় সরিফুল),প্রতিপক্ষকে রেজিস্ট্রিকৃত তালাকের রেজাই প্রদান করিলাম না লিখে গ্রহণ করিলাম এইসকল ভুলের ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বামী এগুলোকে প্রিন্টিং মিসটেক বলেন। এবং বলেন উনার মনে তিন তালাকের ইচ্ছে/নিয়ত ছিলো। একবারে নাকি তিন তালাক দিয়েছেন। যদিও নোটিশে তিন তালাকের উল্লেখ নেই। নোটিশ পাঠানোর সময় মুখেও উচ্চারণ করেননি। নোটিশে কেন তিন তালাকের উল্লেখ নেই এ ব্যাপারে স্বামীর কাছ থেকে জানা যায়নি। পরবর্তীতে আরও জানা যায় স্বামী নোটিশ পাঠানোর কিছুদিন পর মুখে তিন তালাক উচ্চারণ করেন। মনে মনে তিন তালাকের সংকল্প করে নোটিশে  তিন তালাকের উল্লেখ না করে নোটিশের  মাধ্যমেই যদি স্ত্রীকে তিন তালাক দেন তাহলে পরে আবার মৌখিকভাবে কেন একসাথে তিন তালাক দিয়েছেন তাও অজানা। স্ত্রীকে উক্ত নোটিশ পাঠানোর মাধ্যমে তালাক হলে কয় তালাক হয়েছে উস্তায এবং হলে সেটা কি উক্ত স্ত্রীর জন্য বায়েন তালাক হবে? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...