আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
267 views
in পবিত্রতা (Purity) by (26 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,
হুজুর কখনও কখনও সকালের দিকে ইশরাকের পর ঘুমালে স্বপ্নদোষের মতো হয়,মানে আমার স্বামীর সাথে ইন্টিমিসি হচ্ছে সেই অনুভুতিটা পাই, কিন্তু স্বপ্নে কিছু দেখি না। ঘুম থেকে উঠার পর বিষয়টা আমার মনেই থাকে না, আবার এমন কিছু আলামত কাপড়ে ও দেখি না। মুলত দেখা যায় ভুলেই যাই, ফলে ফরজ গোসলের কথা মনে থাকে না। আসলে মেয়েদের স্বপ্নদোষ হয়, এবং সেটা যে ফরজ গোসল করতে হয় আমি জানতাম না। পরে জেনেছি। এই বিষয়টা খুব কম হয়, আর আমি বিষয়টা ভুলেই যাই। এখন বিষয়টা হলো, আজকে সকালে এমনটা হয়েছিল কিন্তু ঘুম থেকে উঠার পর আমার এই বিষয়টা মনেই ছিল না আর তেমন কোন আলামত কাপড় বা শরীরে লেগেছে মনে হয়নি। ফলে ওয়াক্ত হলে আমি যোহরের সালাত আদায় করি, পরে সাংসারিক কাজ শেষ করে সাধারন ভাবে যেমন গোসলের ৩ ফরজ নিয়ে যেমন সাধারন গোসল করি তেমন করেই গোসল করি। এরপর আসর, মাগরিব আদায় করি।এশার সময় হঠাৎ স্বপ্নদোষের একটা বিষয় সামনে আসলে আমার তখন সকালের ব্যাপারটা মনে পড়ে। কিন্তু তখন আমি এই বিষয়ে আপনার দেওয়া কিছু মাসায়ালা দেখে কনফিউজড হয়ে যাই কারন আমার সকালের স্বপ্নের অনুভুতির বিষয়টা মনে আছে কিন্তু ঘুম থেকে উঠার পরের অবস্থা মনে নেই (কাপড়ে বা শরীরে কিছু লেগে ছিল কিনা?)। আবার ফরজ গোসলই যদি করতে হয় তাহলে অন্য ৩ ওয়াক্ত নামাজও পড়তে হবে। সব মিলিয়ে অনেক কনফিউজড হয়ে আমি এশার নামাজ ওযু করেই কন্টিনিউ করি। পরদিন ফজরের নামাজও এভাবেই পড়ি।
এখন আমার প্রশ্ন

১. এই অবস্থায় আমার উপর কি গোসল ফরজ ছিল?
২. সাধারন গোসল করলে কি ফরজ গোসল আদায় হয়?
৩.যদি স্বপ্নের অনুভুতির ফলে গোসল ফরজ হয়ে থাকে তাহলে আমাকে কি আজকে ফরজ গোসল করে গতকালকের সব ওয়াক্তিয়া নামাজগুলা পড়তে হবে?

৪. ভবিষ্যতে যদি এমন অবস্থা আবার হয় স্বপ্নের কথা ভুলে গেছি তখন কি করবো? আর পুর্বের এই অবস্থা গুলার কোন কাফফারা দিতে হবে?

হুজুর দয়া করে উত্তরটা তাড়াতাড়ি দিবেন কারন আমি আসলে বুঝে পাচ্ছি না আমার নামাজ হচ্ছে কি হচ্ছে না, আমি কিভাবে কি করবো?

জাঝাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

মহিলাদেরও বীর্যপাত এর ক্ষেত্রে গোসল ফরয হবে। হযরত উম্মে সালমা রা. থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, ‘একবার হযরত উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান রা. নবী করিম সা. এর দরবারে উপস্থিত হলেন। অত:পর বললেন হে আল্লাহর রাসুল! সা. সত্যের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা সংকোচ বোধ করেন না। মহিলাদের যখন পুরুষদের মতো স্বপ্নে স্বপ্নদোষ হতে দেখে, তবে কি তাদের ওপর গোসল ফরজ? প্রতিউত্তরে রাসুল সা. বললেন,

فَلْتَغْتَسِلْ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ إِذَا رَأَتْ ذَاكِ

হ্যাঁ, যখন সে তরল পদার্থ বা পানি দেখে, তখন যেন সে গোসল করে নেয়।’ সহীহ বুখারী, হাদিস নং- ২৮২

সুতরাং উক্ত হাদিস দ্বারা বুঝা গেলো পুরুষের ন্যায় মহিলাদেরও স্বপ্নদোষ হয়। মহিলাদের স্বপ্নদোষ জানার উপায় হলো দুটি। যেটা ইমাম নববী (রহ:) উল্লেখ করেছেন,

 

১) যখন মহিলার বীর্যের গন্ধ পুরুষের বীর্যের গন্ধের ন্যায় হবে।

২) বীর্যপাতের সময় আনন্দ উপভোগ করা এবং বীর্যপাতের পর যৌন চাহিদা  দুর্বল হয়ে পড়া। এ দুটি উপায় থেকে কোনো একটি উপায় পাওয়া গেলে সকল ফুকাহায়ে কেরাম একমত যে তার ওপর গোসল ফরজ।

 

উল্লেখ্য যে, স্বাভাবিক ভাকে মহিলার যৌনিদ্বার দ্বারা যেই পানি বের হয় তাকে Cervical fluid বলে।

আর মেডিক্যাল সাইন্স অনুযায়ী ‘যে ডিসচার্জ দ্বারা নারী উত্তেজনা অনুভব করে তাকে Arousal fluid বলে।

আর ইসলামী ফিকহ সাইন্সে এটার সাথেই নারীর গোসল ফরয হওয়ার হুকুম প্রদান করা হয়েছে।

 

কি কি কারণে গোসল ফরজ হয় ও গোসলের ফরজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/3604/ 

গোসলের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/21252/?show=21252#q21252

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

-. শুধু স্বপ্নে (সহবাস করতে) দেখলেই হবে না বরং যোনীদ্বার দিয়ে বীর্যও নির্গত হতে হবে সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি কাপড়ে বীর্যপাতের কোনো আলামত দেখে থাকেন তাহলে আপনার উপর গোসল ফরজ হয়ে ছিলো, অন্যথায় নয় আর আপনার উক্ত গোসল করার সময় যদি গোসলের ফরজগুলো আদায় হয়ে যায় তাহলে আপনার ফরজ গোসল আদায় হয়েছে অন্যথায় নয়

. বাস্তবেই যদি আপনার উপর গোসল ফরজ হয়ে থাকে আর এটা আপনি ভুলে যান তো যখন মনে পড়বে তখন গোসল করে নিবেন এবং গত নামাজগুলোও কাযা করে নিবেন


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 688 views
...