আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in সাওম (Fasting) by (37 points)
১/সেই ছোট থেকে বালিগ হওয়া পর্যন্ত ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক রোজা ভেঙ্গেছি।কিন্তু এখন কয়টা রোজা ভেঙ্গেছে সেটা একদম মনে নেই।তাহলে এখন রোজা গুলা কিভাবে কাযা আদায় করব?

২/অনেক দিন যাবত নামাযে সুরা ফাতিহার হরফ একটা ভুল পড়ে এসেছি।এখন কয় ওয়াক্ত নামাযে এই রকম ভুল পড়ে আসছি সেটা জানিনা।এখন কি করব? নামায গুলা কি কাযা আদায় করব? কাযা আদায় করলেও কয় ওয়াক্ত কাযা আদায় করব সেটা তো জানিনা

৩/যখন আমি দশম শ্রেনিতে পড়ি তখন you tube দেখে মোমড়বাতিতে আগুন দিয়ে এবং কাগজ দিয়ে জাদুর মতো একটা কাজ করেছিলাম (যদিও সেটা জাদু না)।এটা করলে নাকি মনের আশা পূরন হয়।যে কাজের জন্য আমি এটা করেছিলাম সেটা সফল হয়েছে।( এখন আমি বুঝি যে এগুলার কোন শক্তি নেই কারো ভাল মন্দ কিছু করার।কিন্তু তখন বুঝিনি) এখন এটা কি শিরক হয়েছে? শিরক হলেও এটা কি ছোট শিরক নাকি বড় শিরক? আর যদি শিরক হয় তাহলে কি শুধু তওবাহ করলে আমি এই গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَمَا أَهْلَكَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: «صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا»

অনুবাদ- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। রাসূল সাঃ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী সাঃ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন রাসূল সাঃ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}

★★রোযার কাফফারা আদায় করার পদ্ধতিঃ 

আপনি যদি শারিরিকভাবে শক্ত সামর্থ হয়ে থাকেন। তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। মাঝখানে রোযা ভাঙ্গা যাবে না। যদি মাঝখানে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে আবার প্রথম থেকে ৬০ দিন গণনা করতে হবে। এভাবে ষাট দিন রোযা রাখলে আপনার রোযা ভঙ্গের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আর যদি লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হন, তাহলে প্রতি রোযার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবদের দান করে দেয়া আবশ্যক। তথা ষাট রোযার জন্য ষাটটি সদকায়ে ফিতির পরিমাণ অর্থ দান করা আবশ্যক।
প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া । 
 যেমন সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা যদি ৬০ টাকা হয়। তাহলে আপনার তিন হাজার ছয়শত টাকা দান করা আবশ্যক। কিন্তু মনে রাখতে হবে রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
“সহবাস ছাড়া অন্য কারণে রোযা ভঙ্গ করলে এক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্য যেমন একটি কাফফারা যথেষ্ট। তেমনি একাধিক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্যও একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে। একাধিক কাফফারা আদায় করা জরুরী নয়। 

কিন্তু যদি সহবাসের দ্বারা রোযা ভঙ্গ করে থাকে, তাহলে এক রমজানে যদি একাধিক রোযা ভঙ্গ করে থাকে সহবাস করে তাহলে এক কাফফারা আদায় করলেই সকল রোযা ভঙ্গের কাফফারা হয়ে যাবে। একাধিক আদায় করা জরুরী নয়।

কিন্তু যদি দুই রমজানে সহবাসের দ্বারা রোযা ভঙ্গ করে থাকে, তাহলে দুই রমজানের জন্য আলাদা দুইটি কাফফারা আদায় করতে হবে। এক কাফফারা আদায় যথেষ্ট হবে না”।
(ইমদাদুল ফাতাওয়া-২/১৩৪-১৩৬।) 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি প্রবল ধারনার ভিত্তিতে একটি আনুমানিক  হিসাব কষে সেই অনুযায়ী রোযার কাজা আদায় করবেন।

আপনি যদি রোযার নিয়ত করার পর সেটি এভাবে ভেঙ্গে ফেলেন, সেক্ষেত্রে কাজা আদায়ের পাশাপাশি আপনাকে কাফফারাও আদায় করতে হবে। 
এক্ষেত্রে রোযা রেখে সহবাসের দরুন রক্যা ভেঙ্গে না ফেললে একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে। 
নতুবা (রোযা রেখে সহবাসের দরুন রোযা ভেঙ্গে ফেললে) একাধিক রমজানের একাধিক কাফফারা আদায় করতে হবে।

(০২)
সুরা ফাতেহার কোন অংশ,তাহা কমেন্ট বক্সে বিস্তারিত বললে ভালো হতো।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে কবিরা গুনাহ হয়েছে।
আপনাকে তওবা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (37 points)
২/ আমিতো sure জানিনা সুরা ফাতিহার কোন জায়গায় ভুল পড়েছি। তবে ৯৫% মনে হয় আমি সুরা ফাতিহার (আউজু) এই জায়গায় পাতলা হরফ ঝাল এই জায়গায় মোটা হরফ জ  পড়ে ফেলেছি।
by (565,890 points)
আপনার নামাজ হয়ে গিয়েছে।
by (37 points)
উস্তাদ আরেকটা প্রস্ন।
আমি বিতির নামাযে দুয়া কুনুতে "ওয়ানাখ লাউ" এই যায়গায় "ওয়ানাক লাউ"  বলে ফেলেছি। মানে আরবি হরফ "খ" এর যায়গায় "কাফ" বলে ফেলেছি অনেক দিন ধরে।এখন এই বিতির নামায গুলা কি আবার কাযা আদায় করতে হবে? আমিতো জানিনা এই রকম কয় ওয়াক্তে ভুল পড়েছি।তাহলে কি করব?
by (565,890 points)
আপনার বিতির নামাজ গুলি আদায় হয়ে গিয়েছে। 
সেগুলো আর কাজা আদায় করতে হবেনা।

এর পর থেকে আর এভাবে ভূল পড়বেননা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...