আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
376 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
edited by
হুজুর মাসালা নিয়ে আমি জানিনা তাই জানার জন্য কিছু প্রশ্ন করা।আমাদের মধ্যে ওইরকম কিছু হয়নি এইটা ১০০% কিন্তু মাসালা জাানর পর থেকে শুধু সন্দেহ হচ্ছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে

১)ঝগড়ার মূহুর্ত কি মুযাকারায়ে তালাক হয়?নিয়ত এবং উদ্দেশ্য ব্যতীত কি মুযাকারায়ে তালাক হয়?

২)প্রশ্ন ২
ক)) হুজুর কোন একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলে যেটা তালাক সংক্রান্ত নয় কিন্তুু ঝগড়ার কারণে ঝগড়ার সময় স্ত্রী যদি তালাক চায় স্বামী যদি কেনায়া বাক্য সম্পর্কে না জানে এবং তালাকের উদ্দেশ্য এবং নিয়ত ব্যতীত ওইরকম বাক্য বলে যেগুলো স্বামী জানেই না যে এগুলো দ্বারা কেনায়া তালাক হয়।একেএে কি তালাক হয়?

যেমন:যা ইচ্ছা করো,যা খুশি করো
যেমন মন চায় করো বা মন যেমন বলে তেমন করো
তুমি পছন্দ করো
তোমার বিষয় তোমার হাতে
তুমি যেটা চাও
অন্য কাউকে খুজে নাও

খ))  কোন একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলে যেটা তালাক সংক্রান্ত নয় কিন্তুু স্ত্রী  তালাক চাইলে স্বামী যদি তালাক চাওয়াতে আরো রেগে গিয়ে গালিগালাজ করে(তোমার জামাই না লাগলে বিয়ে করছো কেন,তোমাকে বিয়ে করে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি এইরকম) এবং উপরিউক্ত বাক্য সমূহ বলে, কারণ নিয়ত এবং উদ্দেশ্য তো দূরের কথা স্বামী নাই জানে যে উপরিউক্ত বাক্যসমূহ বললে কেনায়া তালাক হয়, একেএে কি তালাক হবে?

গ))অথবা কোন একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে যেটা তালাক সংক্রান্ত নয  ঝগড়ার সময় স্বামী বকাঝকা করার  কারণে স্ত্রী রাগের মাথায় তালাক চাচ্ছে, আর স্বামী উদ্দেশ্য এবং নিয়ত ব্যতীত এইসব উক্ত বাক্য বলে এবং স্বামী নাই জানে যে এসব কেনায়া বাক্য একেএে ও কি তালাক হবে?

৩)কাযা'আন এবং দিয়ানাতান তালাক কি?দিয়ানাতান তালাক না হলে কিন্তু কাযাআন তালাক হলে কি পুনরায় বিয়ে না করে সংসার করা যায়?

৪)প্রশ
ক))তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।

(স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে কাযা'আন তালাক হবে। দিয়ানাতান তালাক হবেনা।)))))এই পয়েন্টটা একটু বুঝায় বলবেন যে মুযাকারায়ে তালাক কি?আর মুযাকারায়ে তালাক হলে যেহেতু দিয়ানাতান তালাক হয় না তাই কাযাআন তালাক হলে কি সংসার করা যায়))

খ))অথবা কোন একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে যেটা তালাক সংক্রান্ত নয ঝগড়ার কারণে স্ত্রী রাগের মাথায় তালাক চাচ্ছে(উদ্দেশ্য এবং নিয়ত ব্যতীত) আর স্বামী উদ্দেশ্য এবং নিয়ত ব্যতীত এইসব উক্ত বাক্যের কোন একটা বলে এবং স্বামী নাই জানে যে এসব কেনায়া বাক্য একেএে ও কি তালাক)

1 Answer

0 votes
by (714,120 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
মুযাকারায়ে তালাক কাকে বলে?
এ বিষয়ে রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,
"(قَوْلُهُ: وَهِيَ حَالَةُ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ) أَشَارَ بِهِ إلَى مَا فِي النَّهْرِ مِنْ أَنَّ دَلَالَةَ الْحَالِ تَعُمُّ دَلَالَةَ الْمَقَالِ قَالَ: وَعَلَى هَذَا فَتُفَسَّرُ الْمُذَاكَرَةُ بِسُؤَالِ الطَّلَاقِ أَوْ تَقْدِيمِ الْإِيقَاعِ كَمَا فِي اعْتَدِّي ثَلَاثًا وَقَالَ قَبْلَهُ الْمُذَاكَرَةُ أَنْ تَسْأَلَهُ هِيَ أَوْ أَجْنَبِيٌّ الطَّلَاقَ".
( كتاب الطلاق، بَابُ الْكِنَايَاتِ، ٣ / ٢٩٧)
মুযাকারায়ে তালাকের অর্থ হল, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করা ,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন এবং তামান্না করা। এই উভয় প্রকারকে 'মুতালাবায়ে তালাক' নামে অভিহিত করা হয়।তাছাড়া স্বামী যদি ইতিপূর্বে স্ত্রীকে এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে এদ্বারাও মুযাকারায়ে তালাক প্রমাণিত হবে।এই তৃতীয় প্রকারকে  তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৯৭) 

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1049

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ঝগড়ার মূহুর্তকে মুযাকারায়ে তালাক বলা যাবে না। বরং স্ত্রী যদি তালাক চায়, তাহলে সেই তালাক চাওয়ার মজলিসকেই মুযাকারায়ে তালাক বলা হবে।

(২)
(ক)
ঝগড়ার মুহুর্তে শুধুমাত্র সে সব শব্দ দ্বারাই তালাক হবে, যেগুলো দ্বারা তালাকের আবেদনের সম্মতি বা গালিগালাজ বুঝায়, সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয় 

 "যা ইচ্ছা করো,যা খুশি করো
যেমন মন চায় করো বা মন যেমন বলে তেমন করো
তুমি পছন্দ করো
তোমার বিষয় তোমার হাতে
তুমি যেটা চাও
অন্য কাউকে খুজে নাও"

যেহেতু এই শব্দাবলী দ্বারা তালাকের সম্মতি বুঝায়, কাজেই এগুলো দ্বারা তালাকের আবেদনের ক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে।


(খ)
স্ত্রী তালাক চাইলে স্বামী যদি তালাক চাওয়াতে আরো রেগে গিয়ে গালিগালাজ করে(তোমার জামাই না লাগলে বিয়ে করছো কেন,তোমাকে বিয়ে করে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি এইরকম) এবং উপরিউক্ত বাক্য সমূহ বলে, তাহলে এক্ষেত্রে তালাক হবে না।

(গ)
একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে যেটা তালাক সংক্রান্ত নয়, ঝগড়ার কারণে স্ত্রী রাগের মাথায় তালাক চাচ্ছে, আর স্বামী উদ্দেশ্য এবং নিয়ত ব্যতীত যদি ঐসব বাক্য বলে যা সম্মতি বুঝায় তাহলেও এক্ষেত্র তালাক হয়ে যাবে। 

(৩)দিয়ানাতান তালাক না হলে পুনরায় বিয়ে না করেও সংসার করা যাবে যদি স্বামী স্ত্রী উভয়ের সম্মতি থাকে।

(৪)
(ক)
তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।

(স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে কাযা'আন তালাক হবে। দিয়ানাতান তালাক হবেনা।)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কাযাআন তালাক হলে এবং দিয়ানাতান তালাক না হলে, স্বামী স্ত্রী উভয় সম্মত থাকলে তখন কিন্তু পূনর্বার সংসার করা যাবে।

(খ)
কোন একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে যেটা তালাক সংক্রান্ত নয়, ঝগড়ার কারণে স্ত্রী রাগের মাথায় তালাক চাচ্ছে (উদ্দেশ্য এবং নিয়ত ব্যতীত) আর স্বামী উদ্দেশ্য এবং নিয়ত ব্যতীত এইসব উক্ত বাক্যের কোন একটা বলে এবং স্বামী নাই জানে যে এসব কেনায়া বাক্য এক্ষেত্রও দিয়ানাতান তালাক হবে না।স্বামী স্ত্রী উভয় সম্মত থাকলে তারা আবার সংসার করতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (714,120 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...