জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
সুরা জিনের ২৬ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন।
عٰلِمُ الۡغَیۡبِ فَلَا یُظۡہِرُ عَلٰی غَیۡبِہٖۤ اَحَدًا ﴿ۙ۲۶﴾
তিনিই গায়েবী বিষয়ের জ্ঞানী, তিনি তাঁর গায়েবের জ্ঞান কারও কাছে প্রকাশ করেন না।
(একমাত্র তিনিই অদৃশ্যের জ্ঞানী, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না।)
,
এই আয়াতের শানে নুযূল হিসেবে তাফসীরে ইবনে কাসিরে এসেছেঃ
এখানে আল্লাহ্ তা'আলা রাসূলকে আদেশ করেছেন যে, যেসব অবিশ্বাসী আপনাকে কেয়ামতের নির্দিষ্ট দিন তারিখ বলে দেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করে তাদেরকে বলে দিন, কেয়ামতের আগমন ও হিসাব নিকাশ নিশ্চিত; কিন্তু তার নির্দিষ্ট দিন তারিখ আল্লাহ্ তা'আলা কাউকে বলেন নি। তাই আমি জানি না কেয়ামতের দিন আসন্ন, না আমার রব এর জন্যে দীর্ঘ মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দিবেন।
,
সুরা জিন এর ২৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন
اِلَّا مَنِ ارۡتَضٰی مِنۡ رَّسُوۡلٍ فَاِنَّہٗ یَسۡلُکُ مِنۡۢ بَیۡنِ یَدَیۡہِ وَ مِنۡ خَلۡفِہٖ رَصَدًا ﴿ۙ۲۷﴾
কিন্তু তার মনোনীত রাসূল ছাড়া।
(অর্থাৎ তার কিছু মনোনীত রাসুলদেরকেই আল্লাহ তায়ালা কিছু গায়েবের ইলম দিয়ে থাকেন,)
সে ক্ষেত্রে আল্লাহ তাঁর রাসূলের সামনে এবং পিছনে প্রহরী নিয়োজিত করেন।
{এখানে রাসুল দ্বারা আল্লাহ তায়ালা যাদেরকে দুনিয়াতে তার রিসালাতের দাওয়াত দেওয়ার জন্য নবী,রাসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন,অন্য কোনো ব্যাক্তিবর্গ এখানে উদ্দেশ্য নয়।)
,
তাফসীরে ইবনে কাসিরে এসেছে যে
অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা যখন অহীর মাধ্যমে গায়েবী বিষয়ের কোন জ্ঞান তার হেকমত অনুসারে তাঁর রাসূলের কাছে পাঠান তখন তার রক্ষণাবেক্ষণ ও পাহারাদারীর জন্য চারপাশে প্রহরী মোতায়েন করেন।
[সা’দী] আর এখানে প্রহরী বলতে ফেরেশতা উদ্দেশ্য।
অর্থাৎ, অহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় পয়গম্বরের আগে-পিছে ফিরিশতাগণ থাকেন। তাঁরা শয়তান এবং জ্বিনদেরকে অহীর বাণী শোনা হতে বিরত রাখেন।
নবী রাসুলদের গায়েবের ইলম জানা সম্পর্কে তাফসীরে আহসানুল বয়ানে এসেছে যে
তাঁর পয়গম্বরকে কোন কোন এমন অদৃশ্য বিষয় সম্বন্ধে জ্ঞাত করিয়ে দেন, যার সম্পর্ক তাঁর নবুঅতের দায়িত্বের সাথে থাকে অথবা তা তাঁর নবুঅত সত্য হওয়ার দলীল হয়। আর আল্লাহর জানিয়ে দেওয়াতে পয়গম্বর ‘আ-লিমুল গায়ব’ হতে পারেন না। কেননা, পয়গম্বর নিজেই যদি অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাতা হন, তাহলে তাঁকে আল্লাহর জানিয়ে দেওয়ার কোন অর্থ হয় না। মহান আল্লাহ যে সময় অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে কোন রসূলকে অবগত করেন, সেই সময়ের পূর্বে এ বিষয়ে রসূলের কোন কিছুই জানা থাকে না। অতএব কেবল আল্লাহর সত্তাই অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাতা। এই বিষয়টাকেই এখানে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
,
তাফসীরে তবারীতে আছে
) يعني بعالم الغيب: عالم ما غاب عن أبصار خلقه، فلم يروه فلا يظهر على غيبه أحدا، فيعلمه أو يريه إياه إلا من ارتضى من رسول، فإنه يظهره على ما شاء من
যার সারমর্ম হলো আল্লাহ তায়ালা তার রাসুলদের মধ্যে হতে যাকে ইচ্ছা,ইলমে গায়েব সম্পর্কে কিছু অবহিত করেছেন।
,
{ إلا من ارتضى من رسول فإنه } مع إطلاعه على ما شاء منه معجزة له { يسلك } يجعل ويسير { من بين يديه } أي الرسول { ومن خلفه رصدا } ملائكة ...
যার সারমর্ম হলো এগুলো জানা রাসুল সাঃ দের জন্য মু'জিযা।
এবং তাদের সাথে ফেরেশতাদেরকেও নিযুক্ত করা হয়েছে।
,
أى : هو - سبحانه - عالم الغيب ، فلا يطلع على غيبه أحدا من خلقه ، إلا الرسول الذى ارتضاه ... إلا من ارتضى من رسول فإنه يظهره على ما يشاء من غيبه ; لأن الرسل مؤيدون بالمعجزات
সারমর্মঃ কেননা রাসুল সাঃ গন মু'জিযা দেখানোর শক্তি রাখে,তাই তাদের কিছু এই ইলম দেওয়া হয়েছে।
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ""আল্লাহ চাইলে যে কাওকে গায়েবের খবর জানাতে পারেন,শুধু নবি-রসূল নন।যেমন:কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন থেকে এরকম ব্যাখ্যা করা হয়।এই ব্যাখ্যা সঠিক নয়।
,
এটি কুরআনের অপব্যখ্যা।
এখানে শুধু আল্লাহ প্রেরিত রাসুল গনই উদ্দেশ্য, যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা নবুয়ত দান করেছেন।