আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আমার পরিচিত এক দ্বীনি বোনের করা প্রশ্ন

আমার পরিবার একজনের সাথে বিয়ে ঠিক করে রেখেছে, তারা এবং আমাদের পরিবারের প্রায় সবাই রাজি এই বিয়েতে,,কিন্তু তাদের ইসলামিক জ্ঞান না থাকায় আমাদের দুজন কে হারামের মধ্যে রেখে দিয়েছে,,আমার পরিবার এখনি বিয়ে পড়ালে এখনি রাজি কিন্তু ছেলের বাড়ির লোকজন তারা ছেলের মেজ ভাই আসার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে,,,ছেলে অন্য ভাই বোনেরা সৎ তাদের সাথে সম্পর্কও তেমন ভালো না,,ছেলের কাছের লোক বলতে তারাই,,,বিয়ের সব খরচ থেকে শুরু করে মেয়ে ভরণপোষণ ছেলে নিজেই বহন করবে,,,,তাদের ভূমিকা শুধু এতোটুকু বিয়ে তে থাকবে,,কিন্তু তারা তাদের ছোট ভাইকে সবাই একসাথে হয়ে বিয়ে করাবে,,,তাদের এই গড়িমসির ফল আমাকে পোহাতে হচ্ছে,, গত ৬ মাস ধরে ওনার ভাই আসবে আসবে করে আসছে না,,ওনারা বলেছে ছেলের ভাই আসলেই বিয়ে পড়াবে,,কিন্তু ছেলের ভাই আসার কোন ঠিক নেই,,,ছেলের সাথে কথাবার্তা আর দেখা সাক্ষাৎ হয় একজন বাগদত্তা হিসেবে, যেটা দুই পরিবারের কেউ ই খারাপ চোখে দেখছে না,,,এটা তাদের কাছে নরমাল,,কিন্তু আমার দ্বীনের বুঝ থাকায়,,হারাম কি, তা যতটুকুই হোক না কেনো,,এসব জ্ঞান থাকার পরও আমার দ্বারা এসব ফিতনা হয়ে যাচ্ছে,, আমি নিজেকে হারামের মধ্যে থেকে কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না,,আমার ইবাদতে মন নেই,,আমার ইমান-আমল সব শেষের পথে৷ আমি অশান্তি তে মরে যাচ্ছি,,আমার শুধু পাগল হওয়া বাকি,,হারামে একবিন্দু আরাম নেই,,, ছেলে তার পরিবার কে হাজার বুঝিয়েও কোন কিচ্ছু করা সম্ভব হচ্ছে না,,আমার পরিবারেও আমি বলতে সাহস পাচ্ছি না,,তারা আমাকে খারাপ কথা শুনাবে আর বলবে অপেক্ষা করতে,,আমি শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পড়ে গেছি,,নিজেকে অনেক অপরাধী লাগছে,,কিছুতেই বাগদত্তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখতে পারছি না,,সম্পর্কের গভীরতা বাড়ছে বই কমছে না,,মাথায় সব সময় সুইসাইড করার চিন্তা আসে,,আমার রবের সাথে সেই সম্পর্ক আমি হারিয়ে ফেলেছি,

আমার এমন কারণে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা দুজন লুকিয়ে বিয়ে করে রাখব,,,,আমরা দুজন স্বাভাবিক ভাবেই জীবন কাটাবো কিন্তু আমরা দুজন সাক্ষীর সামনে বিয়ে করতে চাচ্ছি,, পরবর্তী তে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করব আমার এই বিয়ে টা করা ঠিক হবে? এই বিয়ে বৈধ হবে?

আর বিয়ের  নিয়ম নিয়ে কিছু প্রশ্ন হলো

বিয়ের সময় ছেলে নিজে খুৎবা পড়তে পারবে আর ইজাব টা ছেলে নিজে বলতে পারবে? আর যদি অন্য কেউ বিয়ে পড়ায় তাহলে যিনি বিয়ে পড়াচ্ছেন তাকে বাদ দিয়ে বাকী ২জন সাক্ষী লাগবে নাকি যিনি বিয়ে পড়াবেন ওনি আরেকজন সাক্ষী এই দুজন শুনলেই হবে?

আশাকরি শ্রীঘ্রই উত্তর পাবো,,

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)

অভিভাবক ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত জানুনঃ https://ifatwa.info/4801/

নিজে নিজে বিয়ে সম্পর্কে আরো জানুন- https://ifatwa.info/2730/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. যেভাবে হোক পিতা মাতাকে রাজি না করিয়ে বিয়ে করা উচিৎ নয়৷ তিনি পিতা-মাতাকে ও ছেলের পরিবারের লোকজনকে আরো বুঝাবে। বিয়ে করতে হলে কাবিন নামা করতেই হবে এটা তো জরুরী নয়। তাই উভয় পরিবারে উপস্থিতিতে মৌখিক ভাবে মহর নির্ধারণ করেও বিয়েটা হয়ে যেতে পারে। তারপর পরবর্তীতে অনুষ্ঠান করে ও কাজী ডেকে কাবিন নামা করলেন। তাই তিনি পিতা-মাতাকে আরো বুঝাবে। আশা করি তারা রাজী হয়ে যাবে।

 

২. জাহান্নামের শাস্তি অনেক কঠিন। তাই হারাম রিলেশন থেকে বিরত থাকা চাই। আল্লাহকে ভয় করুন। প্রথম থেকেই যদি জাহান্নামের শাস্তির চিন্তা করে কথা বলা থেকে বিরত থাকতেন তাহলে আর আজকের পরিস্থিতি হতো না। এখানো সময় আছে আল্লাহকে ভয় করুন। হারাম সম্পর্ক থেকে বিরত থাকুন।

 

. বিয়েতে খুতবা দেওয়া জরুরী নয় বরং ইজাব-কবুল ও স্বাক্ষী থাকা জরুরী। তাই বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। এভাবে বিয়ে করলেও বিয়ে সহীহ হয়ে যাবে।

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/56002/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...