আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আমি এমন একজনকে বিয়ে করতে চাই যার একটি ফ্যামিলি আছে(স্ত্রী এবং ৭ বছরের একটি ছেলে)। উনি উনার অভিভাবককে জানিয়েছেন(বড় ভাই-ভাবিকে, উনার বাবা নেই)। কিন্তু উনার ফ্যামিলি মেনে নেন নি। আমিও আমার ফ্যামিলিতে বলেছি(আমার আম্মাকে)। অনেক কষ্টে আমার আম্মাকে রাজি করিয়েছি। এখানে বলে রাখি আমার আব্বু আছেন কিন্তু তিনি আমাদের কোন খোঁজখবর বা ভরণপোষণ করেন না। আমার ভাই ছোট(অপ্রাপ্তবয়স্ক)। আমার মামা/চাচা আছেন। কিন্তু তারা ফ্যামিলি আছে এমন কারো সাথে আমার বিয়ে মেনে নিবেন না। এমতবস্থায় আমি যদি আমার আম্মার সম্মতিতে বিয়ে করি তাহলে কি আমাদের বিয়ে শুদ্ধ হবে? কারণ যতদূর জানি, মেয়ের অভিভাবক হিসেবে মা কে কাউন্ট করা হয় না। অভিভাবক হবে বাবা না হয় বড় ভাই না হয় চাচা/মামা।

আমি যদি আমার মামা/চাচাকে উনার ফ্যামিলি আছে এই বিষয় টা গোপন করে বলি তাহলে হয়তো উনারা মত দিবেন। কিন্তু তাতে মিথ্যা/প্রতারণার আশংকা করছি। আর উনিও উনার বর্তমান ফ্যামিলিকে বিষয়টা এখনই জানাতে চান না। কিছুটা সময় নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জানাবেন। এক্ষেত্রে তার পক্ষেও কি স্ত্রীকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করা জায়েজ হবে? এ ব্যাপারে যতদূর জানি, ছেলের ক্ষেত্রে অভিভাবক আবশ্যক না। ছেলে নিজেই অভিভাবক। আর দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি আবশ্যক না।

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://www.ifatwa.info/6683  নং ফাতওয়ায় বর্ণিত রয়েছে ,

শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

 

আল্লাহ তায়ালা বলেন

فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع

তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)। (সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

 

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।

قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)

 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক।

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/6683

 

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ।

 

এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না।

 

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান।

 

হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. কোনো ব্যাক্তির যদি একাধিক বিবাহ বাস্তবেই খুবই প্রয়োজন হয়, বর্তমান স্ত্রী দ্বারা যদি তার শারিরীক চাহিদা ও অন্যান্য আবশ্যকীয় হক আদায় না হয়,আর সেই একাধিক স্ত্রীর চাহিদা পূরন করতেও সক্ষম হয়,তাদের ভরনপোষণ এর ব্যপারেও পূর্ণ সক্ষম হয়,আর একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে শরীয়তের শর্তাবলী পূর্ণ ভাবে মানার উপরেও সক্ষম হয়,তার জন্য একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে ইসলাম অনুৎসাহিত নয়।

 

২. শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

 

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দেখতে হবে যে, আপনার সাথে তিনি বিয়ে করলে তিনি দুইজন স্ত্রীর মাঝে সমতা রক্ষা করতে পারবেন কি না? আর্থিক ভাবে ও শারিরিক ভাবে? কোনো স্ত্রীর ক্ষেত্রে জুলুম করে ফেলেন কি না?

 

৩. প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে বিয়ে করলে অনেক সময় সংসারে অশান্তি হয়। ঝগড়া হয়। তাই আপনি চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন। বরং আমি আপনাকে পরামর্শ দিব যে, আপনার ও তার পরিবারের সবাইকে (বিশেষ করে প্রথম স্ত্রীকে) জানিয়ে বিয়ে করার। যাতে করে বিয়ের পরবর্তীতে কোনো ঝামেলা না হয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...