জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
দুটি পদ্ধতিতে সাধারণত জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
,
এক.স্থায়ী পদ্ধতি–যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (র.) বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন: و هو محرم بالاتفاق অথাৎ স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতক্রমে হারাম।(উমদাতুল ক্বারীঃ ১৪/১৪ পৃঃ)
হাদিস শরিফে এসেছে, ইব্নু মাস’ঊদ রাযি. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
كُنَّا نَغْزُوْ مَعَ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم لَيْسَ لَنَا نِسَاءٌ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلاَ
نَسْتَخْصِي فَنَهَانَا عَنْ ذَلِكَ.
আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সঙ্গে জিহাদে অংশগ্রহণ করতাম।
আমাদের সঙ্গে আমাদের বিবিগণ থাকত না। তাই আমরা বললাম, হে
আল্লাহর রসূল! আমরা কি খাসি হয়ে যাব? তিনি আমাদেরকে তা করতে নিষেধ করলেন।(সহীহ
বুখারী, হাদীস ৫০৭৫)
দুই.অস্থায়ী পদ্ধতি– যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না। যেমন : আযল করা (সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো), Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল (Pill) খাওয়া,জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদি।এ পদ্ধতি কেবল নিম্মোক্ত ক্ষেত্রে বৈধ হবে।
—দুই বাচ্চার জন্মের মাঝে কিছু সময় বিরতি দেওয়া যাতে প্রথম সন্তানের লালন-পালন, পরিচর্যা ঠিকমত হয়।
— কোন কারণে মহিলার বাচ্চা লালন-পালনের সামর্থ না থাকলে।
—মহিলা অসুস্থ ও দূর্বল হওয়ার কারণে গর্ভধারণ বিপদজনক হলে।
عن جابر قال كنا نعزل على عهد النبي صلى الله عليه و سلم ـ صحيح البخاري – (2 / 784)، باب العزل
হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আযল(যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি) করতাম। (বুখারী ২/৭৮৪)
আরো জানুনঃ
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
লাইগেশন বলা হয় অপারেশনের মাধ্যমে (ফেলোপিয়ন টিউব) ডিম্ববাহী নালি কেটে বেঁধে দেওয়া হয়। ফলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্ব জরায়ুতে আসতে পারে না। (যদিও এ কারণে যৌন ক্ষমতা, বীর্য স্খলন ও মাসিক চালু থাকে)
,
এটি স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি,
আর স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতক্রমে হারাম।
,
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতও হারাম।
প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলা যে কাজটি করেছেন, সেটি তার না করা উচিত ছিল।
তার জন্য প্রয়োজনে অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত ছিলো।
যা-ই হোক তিনি যেটা করেছেন, তার জন্য আল্লাহু রাব্বুল আলামিনের কাছে তওবা করতে হবে। অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহু রাব্বুল আলামিনের কাছে যদি আল্লাহর বান্দা ক্ষমা চায়, তওবা করে, আল্লাহু রাব্বুল আলামিন হয়তো ক্ষমা করতে পারেন।