জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো কেহ যদি বল যে আমি পরকালে বিশ্বাস করিনা,আল্লাহ বলতে কিছুই নেই।
তাহলে সে কাফের।
পূর্বে যদি সে মুসলিম থেকে থাকে,তাহলে এখন সে নাস্তিক।
,
আর যদি বলে যে ""আমিতো আল্লাহমে বলি নাই যে আমাকে সৃষ্টি করো""
তাহলে এটা বলার দ্বারা আল্লাহর শানে বেয়াদবী হবে ঠিকই,তবে এটা বলার দ্বারা কেহ কাফের হবেনা।
এহেন বাক্য কখনোও বলা যাবেনা,
আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُوْل اللهِ ﷺ ذَاتَ يَوْمٍ إِذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعْرِ لَا يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ وَلَا يَعْرِفُه مِنَّا أَحَدٌ حَتّى جَلَسَ إِلَى النَّبِيِّ ﷺ فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إِلى رُكْبَتَيْهِ وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلى فَخِذَيْهِ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنِ الْإِسْلَامِ قَالَ «الْإِسْلَامُ : أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لَّا إِلهَ اِلَّا اللّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ وَتُقِيمَ الصَّلَاة وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيْلًا» قَالَ صَدَقْتَ قَالَ فَعَجِبْنَا لَه يَسْأَلُه وَيُصَدِّقُه قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الْإِيمَانِ قَالَ : «أَنْ تُؤْمِنَ بِاللهِ وَمَلَائِكَتِه وَكُتُبِه وَرُسُلِه وَالْيَوْمِ الْاۤخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِه وَشَرِّه» قَالَ صَدَقْتَ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الْإِحْسَانِ قَالَ : «أَنْ تَعْبُدَ اللهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّه يَرَاكَ» قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ قَالَ : «مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنْ السَّائِلِ» قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَتِهَا قَالَ : «أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا، وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ» قَالَ ثُمَّ انْطَلَقَ فَلَبِثْتُ مَلِيًّا ثُمَّ قَالَ لِي : «يَا عُمَرُ! أَتَدْرِي مَنِ السَّائِلُ؟» قُلْتُ اللّهُ وَرَسُولُه أَعْلَمُ قَالَ : «فَإِنَّه جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُمْ».
উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি আমাদের নিকট আত্মপ্রকাশ করলেন। ধবধবে সাদা তাঁর পোশাক। চুল তাঁর কুচকুচে কালো। না ছিল তাঁর মধ্যে সফর করে আসার কোন চিহ্ন, আর না আমাদের কেউ তাকে চিনতে পেরেছেন। তিনি এসেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসে পড়লেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাঁটুর সাথে তাঁর হাঁটু মিলিয়ে দিলেন। তাঁর দু’হাত তাঁর দুই উরুর উপর রেখে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে কিছু বলুন, অর্থাৎ- ইসলাম কি? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘ইসলাম হচ্ছে- তুমি সাক্ষ্য দিবে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত আর কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল, সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বায়িম করবে, যাকাত আদায় করবে, রমাযান মাসের সিয়াম পালন করবে এবং বায়তুল্লাহর হাজ্জ (হজ/হজ্জ) করবে যদি সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য থাকে।’’ আগন্তুক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন।’’ আমরা আশ্চর্যান্বিত হলাম একদিকে তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (অজ্ঞের ন্যায়) প্রশ্ন করলেন, আবার অপরদিকে রসূলের বক্তব্যকে (বিজ্ঞের ন্যায়) সঠিক বলে সমর্থনও করলেন।
এরপর তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘আমাকে ঈমান সম্পর্কে কিছু বলুন।’’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উত্তর দিলেন, ঈমান হচ্ছেঃ আল্লাহ তা‘আলা, তাঁর মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ), তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রসূলগণ এবং পরকালকে সত্য বলে বিশ্বাস করা। এছাড়া তাক্বদীরের উপর, অর্থাৎ- জীবন ও জগতে কল্যাণ-অকল্যাণ যা কিছু ঘটছে, সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হচ্ছে- এ কথার উপর বিশ্বাস করা। উত্তর শুনে আগন্তুক বললেন, ‘‘আপনি ঠিকই বলেছেন’’।
অতঃপর তিনি আবার বললেন, ‘‘আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন।’’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ইহসান হচ্ছে, ‘‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ‘ইবাদাত করবে যেন তুমি তাঁকে দেখছো। আর তুমি যদি তাকে না-ও দেখো, তিনি তোমাকে অবশ্যই দেখছেন’’।
আগন্তুক এবার বললেন, ‘‘আমাকে ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) সম্পর্কে বলুন।’’ উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘এ বিষয়ে যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে তিনি প্রশ্নকারীর চাইতে অধিক কিছু জানেন না।’’ আগন্তুক বললেন, ‘‘তবে ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে বলুন।’’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) নিদর্শন হলো, দাসী তাঁর আপন মুনীবকে প্রসব করবে, তুমি আরো দেখতে পাবে- নগ্নপায়ী বিবস্ত্র হতদরিদ্র মেষ চালকেরা বড় বড় দালান-কোঠা নিয়ে গর্ব ও অহংকার করবে।’’ ‘উমার (রাঃ) বললেন, অতঃপর আগন্তুক চলে গেলে আমি কিছুক্ষণ সেখানেই অবস্থান করলাম। পরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বললেন, হে ‘উমার! প্রশ্নকারী আগন্তুককে চিনতে পেরেছো?’’ আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, ‘‘ইনি হচ্ছেন জিবরীল (আঃ)। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দীন শিক্ষা দেবার উদ্দেশ্যে এসেছিলেন’’।
(মুসলিম ৮, আবূ দাঊদ ৪৬৯৫, নাসায়ী ৪৯৯০, সহীহ আত্ তারগীব ৩৫১, আহমাদ ৩৬৭,মিশকাতুল মাসাবিহ ০২)
★আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহঃ তার বিখ্যাত ফাতওয়া গ্রন্থ ফাতওয়া শামীতে উল্লেখ করেন-
لا خلاف في كفر المخالف في ضروريات الإسلام من حدوث العالم وحشر الأجساد ونفي العلم بالجزئيات وإن كان من أهل القبلة المواظب طول عمره على الطاعات كما في شرح التحرير (رد المحمتار، كتاب الصلاة، باب الإمامة، مطلب البدعة خمسة أقسام -2/300)
আহলে কিবলার মধ্য থেকে যে ব্যক্তি দীর্ঘ জীবন পর্যন্ত ইবাদত বন্দেগীর করার পরও যদি পৃথিবী সৃজিত, সশরীরে হাশরের ময়দানে উঠতে হবে, বা আল্লাহ তাআলার জ্ঞান সর্বত্র বিস্তৃত এরকম আবশ্যকীয় দ্বীনী বিষয়কে অস্বিকার করে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি যে, কাফের এতে কোন মতভেদ নেই। {ফাতওয়া শামী-২/৩০০}
আরো জানুনঃ