জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
ক,
তখন মেয়েরা মসজিদে দ্বিতীয় জামাত করতোনা।
বরং এক জামাতই হতো,এক ইমামের পিছনেই পুরুষদের,অতঃপর শিশু,খুনছাদের কাতারের পিছনে তারা ইক্তেদা করতো।
★রাসুল সাঃ নিজে বলেছেন যে মসজিদ অপেক্ষা ঘরে নামাজ আদায় করা তাদের জন্য উত্তম।
হযরত উম্মে হুমাইদ আস সাআদী রাযি. থেকে বর্ণিত, একবার তিনি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর নিকট এসে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনার পিছনে নামাজ আদায় করতে চাই। নবী করীম ﷺ উত্তরে বললেন,
قَدْ عَلِمْتُ أَنَّكِ تُحِبِّينَ الصَّلاةَ مَعِي وَصَلاتُكِ فِي بَيْتِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي حُجْرَتِكِ وَصَلاتُكِ فِي حُجْرَتِكِ خَيْرٌ مِنْ صَلاتِكِ فِي دَارِكِ وَصَلاتُكِ فِي دَارِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ وَصَلاتُكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي مَسْجِدِي قَالَ فَأَمَرَتْ فَبُنِيَ لَهَا مَسْجِدٌ فِي أَقْصَى شَيْءٍ مِنْ بَيْتِهَا وَأَظْلَمِهِ فَكَانَتْ تُصَلِّي فِيهِ حَتَّى لَقِيَتْ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ
‘আমি ভালো করেই জানি, তুমি আমার পিছনে নামাজ আদায় করতে চাও। কিন্তু তোমার জন্য তোমার রুমে নামাজ আদায় করা অন্য রুমে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার ঘরের কোনো রুমে আদায় করা বাড়িতে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার বাড়িতে নামাজ আদায় করা কওমের (এলাকার ) মসজিদে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার কওমের (এলাকার ) মসজিদে নামাজ আদায় করা আমার পিছনে নামাজ আদায় করার চেয়ে উত্তম। এরপর ঐ মহিলা তার অন্ধকার কুঠরিতে নামাজের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে নেয়। এবং মৃত্যু পর্যমত সেখানেই নামাজ আদায় করতে থাকে।’ (মুসনাদে আহমাদ ৩৭/৪৫)
,
★শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের মসজিদে জামাআতের সহিত নামাজ আদায়ের জন্য যাওয়া মাকরুহে তাহরিমি।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﻗَﺮْﻥَ ﻓِﻲ ﺑُﻴُﻮﺗِﻜُﻦَّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺒَﺮَّﺟْﻦَ ﺗَﺒَﺮُّﺝَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ ﻭَﺃَﻗِﻤْﻦَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺁﺗِﻴﻦَ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺃَﻃِﻌْﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻴُﺬْﻫِﺐَ ﻋَﻨﻜُﻢُ ﺍﻟﺮِّﺟْﺲَ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﺒَﻴْﺖِ ﻭَﻳُﻄَﻬِّﺮَﻛُﻢْ ﺗَﻄْﻬِﻴﺮًﺍ
তরজমাঃ তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।(সূরা-আহযাব-৩৩)
★আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
لَوْ أَدْرَكَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ مَا أَحْدَثَ النِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ كَمَا مُنِعَتْ نِسَاءُ بَنِي إِسْرَائِيلَ
‘যদি রাসুলুল্লাহ ﷺ বর্তমানকালের মহিলাদের অবস্থা দেখতেন তাহলে তাদেরকে মসজিদে আসতে নিষেধ করতেন। যেমন নিষেধ করা হয়েছিল বনি ইসরাইলের মহিলাদেরকে।’ (সহীহ বুখারী ১/২৯৬)
রাসুলুল্লাহ সাঃ ও সাহাবাদের যামানায় মহিলারা যে মসজিদে গিয়েছিলেন,তার কারন বিস্তারিত জানুনঃ-
খ,
মসজিদে না যাওয়াই উত্তম।
আর তওয়াফের ক্ষেত্রে মহিলাদের যে স্থান নির্দিষ্ট আছে,সেখান হয়ে তওয়াফ করবে।
গ,
হাদীসের নির্দেশনাই এখানে মূল বিষয়।
যাহা "ক" নং জবাবে উল্লেখ রয়েছে।
ঘ,
স্বপ্ন কোনো শরীয়তের দলিল নয়।
যার কাজ বাস্তবে বিদআত,তার কাজকে বিদআতই বলতে হবে।
ঙ,
এমন বক্তব্যের কথা শুনিনি।
যদি বলে থাকেন,তাহলে এমনটি সম্ভব নয়।
এক্ষেত্রে বুযুর্গ গন হয়তোবা আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে জান্নাতে যাওয়ার জন্য সুপারিশ করবেন,বিষয়টি বুঝানো হয়েছে।
চ,
তার শাস্তির বিধান সরকারের উপর দায়িত্ব।
আমাদের উপর নয়।
ছ,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
قوله تعالى {وَنَحنُ أَقرَبُ إِلَيهِ مِن حَبلِ الوَرِيدِ} [ق 16]
আর আমি বান্দার গলদেশের শিরার চেয়েও বেশি নিকটবর্তী। {সূরা কাফ-১৬}
فَلَوْلا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ (83) وَأَنْتُمْ حِينَئِذٍ تَنْظُرُونَ (84) وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلَكِنْ لا تُبْصِرُونَ (85)
অতঃপর এমন কেন হয়না যে, যখন প্রাণ উষ্ঠাগত হয়। এবং তোমরা তাকিয়ে থাক। এবং তোমাদের চেয়ে আমিই তার বেশি কাছে থাকি। কিন্তু তোমরা দেখতে পাওনা {সূরা ওয়াকিয়া-৮৩,৮৪,৮৫}
قوله تعالى { وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَمَا كُنتُمْ } [ الحديد – 4 ]
তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথে আছেন {সূরা হাদীদ-৪}
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীন ভাই/বোন,
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আমাদের সাথে আছেন দেখার দ্বারা, শ্রবনের দ্বারা।
এ সমস্ত আয়াতের শাব্দিক অর্থ হিসেবে বলতে হবে যে, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। যেদিকে তাকাই আমাদের রব আছেন। কোন ব্যাখ্যা করা যাবে না।
আল্লাহ তায়ালা স্থান কাল ও পাত্র থেকে পবিত্র। তার ইলম ও ক্ষমতা সর্বত্র রয়েছে। তার জাত ও সত্তা বিষয়ে আমরা কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবো। এটাই প্রকৃত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অবস্থান।
বিস্তারিত জানুনঃ-
★নামাযে আমরা আল্লাহর সামনে আছি এইটা কল্পনা করবেন।
বাস্তবেই সর্বদা আমরা আল্লাহর সামনে থাকি।
ii)
আল্লাহ মুমিনের ক্বলবে থাকেন।
এটি উপরোক্ত আয়াত গুলির মর্মার্থ।
এক্ষেত্রে ব্যাখ্যা হবে, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। যেদিকে তাকাই আমাদের রব আছেন। কোন ব্যাখ্যা করা যাবে না।
জ,
স্বপ্নে তিনি দেখেছেন মর্মে অনেক কিতাবে পাওয়া যায়।
যেহেতি এটি স্বপ্ন,তাই এর উপর শরীয়তের কোনো বিধান আরোপ হবেনা।
তাই কেহ যদি এটি বিশ্বাস না করে,সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।
ঝ,
i,
হ্যাঁ, এটা সত্য।
ii
বিবির হক তারা ফজরের পর হতে ইশার আগ পর্যন্ত,মাঝের যেকোনো সময়ে আদায় করেছেন।
ঞ,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ: كَانَ النِّدَاءُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوَّلُهُ إِذَا جَلَسَ الْإِمَامُ عَلَى الْمِنْبَرِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ فَلَمَّا كَانَ عُثْمَانُ وَكَثُرَ النَّاسُ زَادَ النِّدَاءَ الثَّالِثَ عَلَى الزَّوْرَاء. رَوَاهُ البُخَارِيّ
সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবূ বাকর (রাঃ) ও ‘উমার (রাঃ)-এর খিলাফাতকালে জুমু‘আর প্রথম আযান দেয়া হত ইমাম মিম্বারে বসলে। ‘উসমান (রাঃ) খলীফা হবার পর, লোকের সংখ্যা বেড়ে গেলে তিনি যাওরা-এর উপর তৃতীয় আযান বাড়িয়ে দিলেন।
(বুখারী ৯১২, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০৭১, আত্ তিরমিযী ৫১৬, ইবনু মাজাহ্ ১১৩৫,মিশকাত ১৪০৪।)
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ مُوسَى الْقَطَّانُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، جَمِيعًا عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ مَا كَانَ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِلاَّ مُؤَذِّنٌ وَاحِدٌ فَإِذَا خَرَجَ أَذَّنَ وَإِذَا نَزَلَ أَقَامَ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ كَذَلِكَ فَلَمَّا كَانَ عُثْمَانُ وَكَثُرَ النَّاسُ زَادَ النِّدَاءَ الثَّالِثَ عَلَى دَارٍ فِي السُّوقِ يُقَالُ لَهَا الزَّوْرَاءُ فَإِذَا خَرَجَ أَذَّنَ وَإِذَا نَزَلَ أَقَامَ .
সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাত্র একজন মুয়াযযিন ছিল। তিনি যখন (খুতবাহ দিতে) বের হতেন, তখন সে আযান দিতো এবং তিনি যখন (মিম্বার থেকে) নামতেন, তখন সে ইকামত দিতো। আবূ বাকর ও উমার (রাঃ) এর আমলেও এ নিয়মই চালু থাকে। উসমান (রাঃ) এর আমলে মুসলিমদের সংখ্যা বেড়ে গেলে তিনি বাজারে অবস্থিত আয-যাওরা নামক স্থান থেকে তৃতীয় আযান দেয়ার ব্যবস্থা করেন। অতঃপর তিনি যখন বের হতেন, তখন মুয়াযযিন আযান দিতো এবং তিনি মিম্বার থেকে নামলে সে ইকামত দিতো।
(বুখারী ৯১২-১৩, ৯১৫-১৬; তিরমিযী ৫১৬, নাসায়ী ১৩৯২-৯৪,ইবনে মাজাহ ১১৩৫ আবূ দাঊদ ১০৮৭, আহমাদ ১৫৩০১।)
★হযরত উসমান গনি রাঃ যখন এই আযান চালু করেছিলেন,তখন ছাহাবাদের কেউ দ্বীমত করেননি,এই ভিত্তিতে ছাহাবা সহ উম্মতের ইজমা' এই আযানের উপর হয়েছে।
তাই ইজমা' র ভিত্তিতে এই আযান এখনো চলছে ও চলবে ইনশাআল্লাহ ।