আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
310 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
edited by
আসসালামু আ'লাইকুম,
.যখন সলাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে যায় তখন অস্থিরতা অনুভব করি ,কেমন জানি টেনশনে পড়ে যায়। ওযু করতে গেলে যেন বায়ুজনিত সমস্যা বেশি হয়। অথচ সাধারণ সময়ে বা অন্য কাজ করার সময় বায়ুজনিত সমস্যা তেমন হয় না। আমার মনে হয় সলাতের আদায়ের ব্যাপারে অস্থিরতা আর ভয় থেকে এমনটা হচ্ছে। এখন বারবার ওযু করলে বলতে গেলে প্রত্যেকবারই বার বার বায়ুজনিত সমস্যা হয় বা হচ্ছে বলে মনে হয়। সলাত আদায় শেষ করলে সব সমস্যা এক প্রকার চলে যায়। আবার অন্য সময়ের সলাত আদায়ে জন্য প্রস্তুতি নিতে গেলে শুরু হয়ে যায়। বিশেষ করে ওযু করে সলাতে দাড়ানোর সময় পর্যন্ত এমন টা হয়। আর সহ্য হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এসবে পাত্তা না দিয়ে একবারে সলাত আদায় করলেই আমি সুস্থ হয়ে যাব আস্তে আস্তে।  কিন্তু আবার এই ভয়ও লাগছে সত্যি যদি ওযু না থাকে সলাত তো হবে না। এই ভয় থেকে মাঝে মাঝে বারবার ওযু করি। এই সমস্যা কারণে আমি সলাতে ঠিকভাবে মনোযোগও দিতে পারি না। সলাত আদায় যেন এক প্রকার বোঝা হয়ে যায় আমার জন্য। আজকেও শেষ রাতে বিতরের সলাত আদায়ের জন্য উঠলাম ওযু করতে আর সলাত আদায়ের সময় মনে হচ্ছিল ওযু ভেঙ্গে যাচ্ছে,ওযু ভেঙে যাচ্ছে,বায়ুজনিত সমস্যা হচ্ছে। তবুও এক ওযুতেই আদায় করে ফেললাম। তারপর একপ্রকার সব ঠিক হয়ে গেল। এরপর ফজরের সলাত আদায়ের ওযু করতে গেলাম আবার একই ফিলিংস যেন বায়ু বের হচ্ছে। সলাত আদায়ের পর আর তেমন লাগছে না। আমি এটাও আলাদা করতে পারছি না সত্যিকার কখন বায়ু বের হয় আর কখন আমার শুধু ওয়াসওয়াসা হচ্ছে।

আমি খেয়াল করেছি সাধারণ হাত পা ধোয়ার সময় বা এমনেই সলাত আদায়ের মতো অঙ্গভঙ্গি (দাড়ানো,রুকু,সিজদা) করার সময় এই সমস্যা তেমন হয়ই না। কিন্তু সত্যিকারে যখন আমি ওযু করতে যায়, সলাত আদায় তখন হয়। আমার কি করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/18430/?show=18430#q18430 নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح :

আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

 

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

 

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!


প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয় যেহেতু আপনার মনের ধারনা মাত্র, আপনি এ সম্পর্কে (আওয়াজ,বা গন্ধ নেই, বা আপনি এই রকম বায়ু বের হওয়ার অন্যান্য সময় অভ্যাসও নেই) কোনোভাবেই  নিশ্চিত যেহেতু নন, তাই আপনার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।    

উল্লেখ্য যে, অনেক সময় নামাজের মধ্যে শয়তানে ওয়াসওয়াসা দেয়। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত বায়ুজনিত কারণে অযু ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত না হবেন ততক্ষণ পর্যন্ত এই দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ করবেন না। তাহলে দেখবেন যে, আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 193 views
...