আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
403 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (36 points)
আসসালামুআলাইকুম, আমি গত কয়েকদিন আগে একটি প্রশ্ন করেছিলাম।তা ছিল:                                                                        আমি আমেরিকায় থাকি।আমি ও আমার মা জব করতাম।এখন কোভিড ১৯ এর জন্য সরকার থেকে বাসা ভাড়ার জন্য আর্থিক সাহায্য দিতে চাচ্ছে।এর মধ্যে আমার আম্মুর চাকরি চলে গেছে এক মাস আগে।তারা আমাদের মার্চ ও জুলাই মাসের ২ জনের উপার্জনের প্রমাণ ও বর্তমান মাসের ব্যাংক statement চেয়েছেন যাতে আমাদের সাহায্য করতে পারেন।এখন আমরা কী যেকোন ১ ১ জনের উপার্জন গোপন রেখে ও ব্যাংক থেকে টাকা সব তুলে ফেলে তারপর তাদের থেকে সাহায্য নিলে তা কী হালাল হবে? এর উওরে যা পেয়েছি তা হল:                                                       প্রথমত ধোঁকা হওয়ার জন্য এবং দ্বিতীয়ত দারুল আমান রাষ্ট্রের কাফিরের জানমাল মাহফুজ হওয়ার কারণে আপনি নিজ ইনকাম লুকিয়ে এভাবে সুবিধাদি গ্রহণ করা জায়েজ হবে না।আমি ২য় কারণটি ভালভাবে বুঝতে পারিনি।বিস্তারিত জানতে চাই।             আর আরেকটি প্রশ্ন এখন করতে চাচ্ছি।তাহল:                                     আমি জুলাই মাসে জানতে পারি যদি কোন প্রতিষ্ঠানের অর্জিত মোট লভ্যাংশ হারাম উপার্জন থেকে আসে তাহলে সেখানে কাজ করা হারাম।আমি যেখানে কাজ করি সেখানকার মোট লভ্যাংশ জুয়া,লটারি,শুকরের মাংস ও হারাম অন্যান্য মাংস থেকে আসে।সিংহভাগই আসে জুয়ার পয়সা থেকে।আমি ও আমার মা রান্নাঘরে থালাবাসন মাজার কাজ করেছি।আমিও আমার মায়ের জমা টাকার বেশিরভাগই হারাম উপার্জনের।আমি বর্তমানে তিনমাসের ছুটিতে আছি।আমি এরপর চাকরি ছেড়ে দিব।আমাদের এই মুহু্র্তে অন্য হালাল উপার্জনের ব্যবস্থা নেই।আমাদের দেশেও কোন অর্থ সম্পদ নেই।শুধু লকডাউনের সময় ৪-৫ মাস সরকার থেকে বেকারভাতা পেয়েছি।এখন এই টাকা কী ব্যয় করা জায়েজ হবে বা ভোগ করা হালাল হবে?নাকি দান করে দিতে হবে?আর যদি দান করি কতটুকু দান করব তা কীভাবে হিসাব করব?নাকি হালাল চাকরি পাওয়া পর্যন্ত প্রয়োজন পূরণ করে এরপর দান করব?আর যদি হারাম উপার্জন যদি দান করে দিতে হয় তবে কী সেই পরিমাণ অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে বাকিটা সরকারকে দেখাব বাসা ভাড়ার সাহায্য পাওয়ার জন্য কেননা এই অর্থ তো আমরা নিজেদের প্রয়োজনে খরচ করতে পারবনা।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
 بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
উক্ত ছুরতটি নাজায়েজ হওয়ার কারন হলো ধোকা দেওয়া।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

(০২)

হারাম মাল থেকে বেতন পাওয়ার বিষয়ের ক্ষেত্রে শরয়ী মূলনীতি হল-যদি বেতনটি হালাল ও হারাম মালের সাথে মিশ্রিত হয়, আর হারাম মাল বেশি হয়, তাহলে তা নেয়া জায়েজ নয়। তবে যদি হারাম মাল কম হয় তাহলে বেতন নেয়া জায়েজ হবে।

ولا يجوز قبول هدية أمراء الجور لأن الغالب في مالهم الحرمة إلا إذا علم أن أكثر ماله حلال بأن كان صاحب تجارة أو زرع فلا بأس به لأن أموال الناس لا تخلو عن قليل حرام فالمعتبر الغالب (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الثاني عشر في الهدايا والضيافات-5/342)

অনুবাদ-জালেম বাদশাহর হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ নয়। কেননা তার অধিকাংশ মাল হয় হারাম। তবে যদি জানা যায় যে, তার অধিকাংশ মাল হালাল, এ হিসেবে যে সে ব্যাবসায়ী বা জমিদার, তাহলে তার থেকে হাদিয়া গ্রহণ করাতে সমস্যা নেই। কেননা সাধারণত মানুষের মাল অল্প হারাম থেকে মুক্ত নয়। তাই এতে আধিক্যের বিষয়টি বিবেচিত হবে। { ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২}

তবে যদি হারাম মাল কম হয় তাহলে তা নেয়া জায়েজ হবে,ব্যবহার  করাও জায়েজ আছে। 
চাইলে ছদকাহও করতে পারে।
তবে তারপরেও এটা না নেওয়াই উত্তম।

আরো জানুনঃ 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু বেতনে বেয়াহির ভাগ অংশই হারাম মাল এর অন্তর্ভুক্ত। 
তাই সেখানে চাকুরী করা জায়েজ নেই।
,
যেইভাবেই হোক এখনই সেই চাকুরী ছেড়ে দিয়ে অন্যত্রে হালাল চাকুরী করতে হবে।
বেতনের যতটুকু অংশ হারাম ছিলো,ততটুকুর সব গরিবদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া ছদকাহ করে দিতে হবে।
,
হারাম সম্পদ দান করার পর নিজের অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থা দেখিয়ে  সরকার থেকে সাহায্য নিতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...