আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম।

হুজুর একটা ফতোয়া জানতে চাই।একজন মুফতি সাহেবের নিকট থেকে মাসালা জানলাম।মনের ভিতর কেমন জানি লাগতেছে সেজন্য আপনাদেরকে আস্ক করলাম।প্রশ্ন টা এখানে হুবুহু তুলে দিলাম।(এটা আমার না)

প্রশ্নঃ আমি একজন কৃষক, জমিনে কাজ করে খাই। একদিন সকালে কাজে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রীকে বললাম, সকাল ১০ টায় জমিনে খানা পাঠিয়ে দিবে। কিন্তু আমার স্ত্রী যথাসময়ে খানা না পাঠালে আমি বড় আওয়াজে বললাম, অমুকের মেয়ে অমুক; তালাক! তালাক! তালাক! কিন্তু আমি আমার স্ত্রীর নাম ভুল বলেছি। তার নাম না বলে অন্য একটি নাম বলেছি। তবে তার পিতার নাম সঠিক বলেছিলাম । এখন আমার জানার বিষয় হল, উপর্যুক্ত ক্ষেত্রে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আমি সংসার করতে পারব কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

মুফতি সাহেবের উত্তরঃ আপনি স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে পারবেন। আপনার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়নি। কেননা নাম উচ্চারণ করে তালাক দেয়ার সময় নামটাই মুখ্য হয়ে থাকে। নাম যদি ভুল হয়ে যায় তাহলে অন্যান্য নিসবাত সঠিক হলেও তালাক পতিত হবে না। উল্লিখিত সুরতে আপনি পিতার নাম সঠিক বললেও স্ত্রীর নাম ভুল বলেছেন। তাই আপনার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়নি। (আল-বাহরুর রায়েক- ৩/৪৪৩, আল-মুহিত- ৪/৪০২) ।

হুজুর! এখানে যে মুফতী সাহেব ফতোয়া দিয়েছেন, তা কি সঠিক?মাসালা টা জানতে চাচ্ছিলাম। (একটু বিস্তারিত জানাবেন দয়া করে,কারন কি?কি কারনে হলো।কয়েকজন হুজুর আবার বলেন হয়ে যাবে)

একটু দ্রুত জবাব পাইলে খুবই উপকৃত হইতাম।

হুজুর একটু দ্রুত জবাব দিবেন মেহেরবানী করে।

জাজাকাল্লাহ
by (682,000 points)
জী,জবাব দেয়া হয়েছে।

1 Answer

0 votes
by (682,000 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী যদি তার স্ত্রীকে তালাক প্রদানের নিয়তেই উক্ত বাক্য বলে থাকে,সেক্ষেত্রে তালাক হবে।
নতুবা তালাক হবেনা।

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ-

الفتاوى الهندية (8/ 157)
"وَلَوْ قَالَ: امْرَأَتُهُ الْحَبَشِيَّةُ طَالِقٌ، وَلَا نِيَّةَ لَهُ فِي طَلَاقِ امْرَأَتِهِ، وَامْرَأَتُهُ لَيْسَتْ بِحَبَشِيَّةٍ لَا يَقَعُ عَلَيْهَا، وَعَلَى هَذَا إذَا سَمَّى بِغَيْرِ اسْمِهَا وَلَا نِيَّةَ لَهُ فِي طَلَاقِ امْرَأَتِهِ، فَإِنْ نَوَى طَلَاقَ امْرَأَتِهِ فِي هَذِهِ الْوُجُوهِ طَلُقَتْ امْرَأَتُهُ، كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ".
সারমর্মঃ-
কেহ যদি বলে,তার হাবশী স্ত্রী তালাক,আর তার স্ত্রীকে তালাক প্রদানের নিয়ত না থাকে,আর তার স্ত্রী হাবশী না হয়,তাহলে তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবেনা। 
যদি স্বামী স্ত্রীর নাম ব্যাতিত অন্য নাম বলে,আর তার স্ত্রীকে তালাক প্রদানের নিয়ত না থাকে,তাহলেও তালাক হবেনা।
তবে এসব ছুরতে যদি নিজ স্ত্রীকে তালাক প্রদানের নিয়ত করে থাকে,সেক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে। 

البحر الرائق شرح كنز الدقائق (3/ 273)
"ولو قال: امرأته الحبشية طالق، وامرأته ليست بحبشية لا يقع ... وفي المحيط: الأصل أنه متى وجدت النسبة وغير اسمها بغيره لا يقع؛ لأن التعريف لا يحصل بالتسمية متى بدل اسمها؛ لأن بذلك الاسم تكون امرأة أجنبية، ولو بدل اسمها وأشار إليها يقع". (البحر الرائق شرح كنز الدقائق (3/ 273) 

সারমর্মঃ-
কেহ যদি বলে,তার হাবশী স্ত্রী তালাক,আর তার স্ত্রীকে তালাক প্রদানের নিয়ত না থাকে,আর তার স্ত্রী হাবশী না হয়,তাহলে তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবেনা। 
,,, যদি স্ত্রীর নাম ব্যাতিত অন্য দিকে নিসবত করা হয়,তাহলে তালাক পতিত হবেনা। যখন নাম পরিবর্তন করবে,তখন তার স্ত্রীর পরিচিতি লাভ হবেনা।
কেননা ঐ নাম দ্বারা অপরিচিত মহিলা হতে পারে।
যদি কেহ স্ত্রীর নাম পরিবর্তন করে,আর তার স্ত্রীর দিকেই ইশারা করে,সেক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 88 views
...