আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
115 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (7 points)
১.হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একবার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়েছিলাম। ইতোমধ্যে তাঁর কাছে একজন লোক এলো। সে এসে বলল, 'ইয়া রসূলাল্লাহ! আমার তো সম্পদ কমে গেছে। আমি অভাবে পড়ে গেছি।'

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, '(এমনটা তো হবেই) কারণ তুমি তো রিযিকের চাবিকাঠি এবং ফেরেশতাদের দু'আ ও সকল সৃষ্টিজীবের তাসবীহ থেকে দূরে আছ।' লোকটি জিজ্ঞেস করল, 'এগুলো কী ইয়া রসূলাল্লাহ?' রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'সুবহে সাদিকের পর থেকে ফযরের নামায আদায় করার মধ্যবর্তী সময়ে

سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ اَسْتَغْفِرُ اللهَ.

একশত বার পড়লে দুনিয়া অপদস্থ ও লাঞ্ছিত হয়ে তোমার কাছে আসবে।' [তাম্বীহুল গাফেলীন সুত্রে তানযীহুশ শরীআহ, ২য় খণ্ড, ৩১৮ পৃ.]

২.ইমাম বাগাভী (রহ.) কর্তৃক সংকলিত "মাআলাম আলতানজিল" নামক তাফসীরে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে একটি হাদীসে কুদ্সী উদ্ধৃত করা হয়েছে; রাসূল (সা.) বলেন- আল্লাহ তা'য়ালা ফরমান, যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাযের পর- ১. সূরা ফাতিহা, ২. আয়াতুল কুরসী, ৩.আল ইমরানের ১৮ নং আয়াত, ৪. আলে-ইমরানের ২৬ নং আয়াত পড়বে, তাকে আমি ছয়টি পুরস্কার প্রদান করব- ১. তার ঠিকানা জান্নাতে বানিয়ে দেব। ২. হাজিরাতুল কুদছে তাকে স্থান দিব। ৩. প্রতিদিন আমি তার দিকে সত্তরবার রহমতের দৃষ্টিতে তাকাব। ৪. তার সত্তরটি প্রয়োজন পুরা করব। ৫. হিংসুক এবং শত্রুর ক্ষতি থেকে তাকে আশ্রয় দিব। ৬. হিংসুক ও দুশমনের উপর তাকে বিজয় দান করব।

হযরত এই হাদিস সমূহের সনদ সম্পর্কে জানতে চাই। মওযূ হলে আমল করা বন্ধ করে দিব। আর যদি সহিহ হয় তাহলে একটু জানাবেন কোন কোন মুহাদ্দিস কেরাম সহিহ বলেছেন।

1 Answer

0 votes
by (672,120 points)
জবাবঃ- 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীস গ্রহনযোগ্য কোনো হাদীসের কিতাবে খুজে পাইনি।

তবে এই বাক্য খুবই দামী,তাই আপনি আমল চালিয়ে যেতে পারেন।
যেমন হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ حَدَّثَنَا عُمَارَةُ بْنُ الْقَعْقَاعِ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَلِمَتَانِ خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ ثَقِيلَتَانِ فِي الْمِيزَانِ حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمٰنِ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’টি কলেমা যা জবানে অতি হাল্কা, মীযানে ভারী, আর রাহমানের নিকট খুব পছন্দনীয়; তা হচ্ছে ‘সুবহানাল্লাহ্ ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল আযীম’। 
[বুখারী ৬৬৮২.৬৪০৬] (আধুনিক প্রকাশনী-৫ ৬২১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২২৫)

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীস কোনো হাদীসের কিতাবে খুজে পাইনি।
আপনি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়তে পারেন এবং নিম্নোক্ত সহীহ হাদীস গুলোতে বর্ণিত আমল গুলি করতে পারেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: إِنَّ فُقَرَاءَ الْمُهَاجِرِينَ أَتَوْا رَسُولَ اللهِ ﷺ فَقَالُوْا ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالدَّرَجَاتِ الْعُلَى وَالنَّعِيمِ الْمُقِيمِ فَقَالَ وَمَا ذَاكَ قَالُوْا يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّى وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ وَلاَ نَتَصَدَّقُ وَيُعْتِقُونَ وَلاَ نُعْتِقُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَفَلاَ أُعَلِّمُكُمْ شَيْئًا تُدْرِكُونَ بِهِ مَنْ سَبَقَكُمْ وَتَسْبِقُونَ بِهِ مَنْ بَعْدَكُمْ وَلاَ يَكُوْنُ أَحَدٌ أَفْضَلَ مِنْكُمْ إِلاَّ مَنْ صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُمْ قَالُوْا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ تُسَبِّحُونَ وَتُكَبِّرُونَ وَتَحْمَدُونَ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ مَرَّةً فَرَجَعَ فُقَرَاءُ الْمُهَاجِرِينَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَقَالُوْا سَمِعَ إِخْوَانُنَا أَهْلُ الأَمْوَالِ بِمَا فَعَلْنَا فَفَعَلُوا مِثْلَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ ذَلِكَ فَضْلُ اللهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, একদা মুহাজেরীনদের একটি গরীবের দল আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিবেদন করে বলল, ধনীরা (বেহেশতের) সমস্ত উঁচু উঁচু মর্যাদা ও স্থায়ী সম্পদের মালিক হয়ে গেল। কারণ, তারা নামায পড়ে যেমন আমরা পড়ি, রোযা রাখে যেমন আমরা রাখি, কিন্তু তারা দান করে আমরা করতে পারি না, দাস মুক্ত করে আমরা করতে পারি না। (এখন তাদের সমান সওয়াব লাভের কৌশল আমাদেরকে বলে দিন।) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন আমলের কথা বলে দেব না, যাতে তোমরা প্রতিযোগিতায় অগ্রণী লোকদের সমান হতে পার, তোমাদের পশ্চাদ্বর্তী লোকদের আগে আগে থাকতে পার এবং অনুরূপ আমল যে করে সে ছাড়া তোমাদের থেকে শ্রেষ্ঠ আর কেউ হতে না পারে?

সকলে বলল, অবশ্যই বলে দিন, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, তোমরা প্রত্যেক নামাযের পর ৩৩ বার করে তাসবীহ, তাহমীদ ও তাকবীর পাঠ করবে। (মুহাজেরীনরা খোশ হয়ে ফিরে গেলেন। ওদিকে ধনীরা এ খবর জানতে পেরে তারাও এ আমল শুরু করে দিল।) মুহাজেরীনরা ফিরে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের ধনী ভাইয়েরা এ খবর শুনে তারাও আমাদের মত আমল করতে শুরু করে দিয়েছে। (অতএব আমরা আবার পিছে থেকে যাব।) মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ হল আল্লাহর অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করে থাকেন। (এতে তোমাদের করার কিছু নেই।)
(বুখারী ৮৪৩, মুসলিম ১৩৭৫)

عَنْ عَبدِ الله بنِ الزُّبَيْرِ رَضِيَ الله تَعَالٰـى عَنهُمَا أَنَّه كَانَ يَقُولُ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ حِيْنَ يُسَلِّمُ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَـهُ لَـهُ المُلْكُ وَلَـهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ اللهُ وَلاَ نَعْبُدُ إِلاَّ إيَّاهُ لَـهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الحَسَنُ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ اللهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الكَافِرُونَ قَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ : وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يُهَلِّلُ بِهِنَّ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ

আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি প্রতিটি নামাযের পশ্চাতে যখন সালাম ফিরতেন, তখন এই দু‘আটি পড়তেন,

‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, লাহুল মুলকু অলাহুল হামদু অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। লা হাউলা অলা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি। লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অলা না’বুদু ইল্লা ইয়্যা-হু লাহুন্নি’মাতু অলাহুল ফাযলু অলাহুস সানা-উল হাসান, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুখলিস্বীনা লাহুদ্দীনা অলাউ কারিহাল কা-ফিরূন।’

অর্থাৎ, এক অদ্বিতীয় আল্লাহ ব্যতীত আর কোন সত্য উপাস্য নেই। তাঁর কোন শরীক নেই। (বিশাল) রাজ্যের তিনিই সার্বভৌম অধিপতি। তাঁরই যাবতীয় স্ত্ততিমালা এবং সমস্ত বস্তুর উপর তিনি ক্ষমতাবান। আল্লাহর প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎকাজ করার (নড়া-সরার) শক্তি নেই। আল্লাহ ব্যতীত কেউ সত্য উপাস্য নেই। তাঁর ছাড়া আমরা আর কারো ইবাদত করিনা, তাঁরই যাবতীয় সম্পদ, তাঁরই যাবতীয় অনুগ্রহ, এবং তাঁরই যাবতীয় সুপ্রশংসা, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। আমরা বিশুদ্ধ চিত্তে তাঁরই উপাসনা করি, যদিও কাফেরদল তা অপছন্দ করে।

ইবনে যুবাইর (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত দু‘আটি প্রত্যেক নামাযের পর পড়তেন।
(মুসলিম ১৩৭১)

হযরত আবু-উমামাহ রাযি থেকে বর্ণিত

أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ بِشْرٍ ، بِطَرَسُوسَ ، كَتَبْنَا عَنْهُ قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حِمْيَرٍ قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( مَنْ قَرَأَ آيَةَ الْكُرْسِيِّ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ مَكْتُوبَةٍ لَمْ يَمْنَعْهُ مِنْ دُخُولِ الْجَنَّةِ إِلَّا أَنْ يَمُوتَ ) .

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে,তার জান্নাতে প্রবেশ করাতে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো প্রতিবন্ধকতা নাই(সুনানে কুবরা-৯৮৪৮,তাবারানি কাবির-৭৫৩২,ইবনুস-সুন্নি- আ'মলুল ইয়াওমি ওয়াল-লাইল-১২৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (7 points)
জাজাকাল্লাহ হযরত। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...