আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
123 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
retagged by
আসালামুয়ালাইকুম শায়েখ।
১. আমার কিছু রোগের কারণে আমার মন খুব দূর্বল হয়ে গিয়েছিল। খুব ভয় হচ্ছিল যে কোনো কারণে , বিশেষ করে ধর্মের জন্য যা কিছু করছিলাম ভয় হচ্ছিলো। আর মনে নানা রকম প্রশ্ন আসছিল ।
তাই আমি মনে মনে ভাবলাম কিছুদিন নামাজ পড়বনা সুস্থ হয়ে পড়বো।  এই ভাবনা ভুল আমি জানি । হুজুর এর জন্য কি আমি কাফের হয়ে যাবো ??

২. একদিন নামাজে আল্লাহর কাছে দুয়া করেছিলাম আমার মন যেনো শক্ত করে দেই। কেউ একটু কষ্ট দিলে কান্না করতাম । মন ভেঙে যেত দুঃখ পেতাম। এটা আমার অনেক দিন থেকে হত। তাই আল্লাহর কাছে রাসূলের দোহাই দিয়ে দুয়া করেছিলাম । এখন আমার মন শক্ত হয়েছে।
এইরকম দুয়ার জন্য কি আমি কাফের হয়ে যাবো ?? ঈমান চলে যাবে?

৩. হুজুর রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলাম সামনে একটা অপরিচিত মেয়ে যাচ্ছিল আমি তাকিয়ে ছিলাম,
হটাৎ আমার মনে মনে বললাম তালাক হবে। কোনো কারণ ছাড়াই মনে মনে বললাম  দিয়ে আমি ভেবে পেলাম না কেনো মনে মনে এমন হলো। ওই মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করিনি আর আমার স্ত্রী কে তো উদ্দেশ্য করিনি।
সেই সময় থুথু ফেলার জন্য জিহ্ববা নড়ে ছিল কিন্তু মনে মনে বলার জন্য নড়ে নি।
কোনো উদ্দেশ্য ছিল না । হুজুর এর জন্য কি তালাক হবে?
কোনো নিয়ত বা উদ্দেশ্য ছিল না হুজুর। হটাৎ এমন হলো।

৪. হুজুর কেউ যদি মোবাইল এ খারাপ কিছু দেখছে সেই সময় আজান দিলো সেও খারাপ জিনিস দেখা ১০ সেকেন্ড  মধ্যে বন্ধ করে দিলো তাহলে কি তার ঈমান চলে যাবে বা কাফের হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَيْنَ الْعَبْدِ وَبَيْنَ الْكُفْرِ ترك الصَّلَاة» . رَوَاهُ مُسلم

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মু’মিন) বান্দা ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করা।

সহীহ : মুসলিম ৮২, আবূ দাঊদ ৪৬৭৮, নাসায়ী ৪৬৪, তিরমিযী ২৬২০, ইবনু মাজাহ্ ১০৭৮।


এই হাদীসের ব্যখ্যাঃ-

উপরোক্ত হাদীসটি দৃঢ়তার সাথে প্রমাণ করে যে, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বর্জন কুফরীকে অনিবার্য করে দেয়। সকল মুসলিম মনীষীর ঐকমত্যে, বিশ্বাস সহকারে কেউ সালাত বর্জন করলে সে কাফির হয়ে যাবে। তবে সালাত আদায় ওয়াজিব মনে করে ও অলসতাবশত কেউ সালাত বর্জন করলে তার কুফরীর ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে।

★কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে ঐ ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবে। 

তবে অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের বক্তব্য হল, এমন ব্যক্তি কাফের হবে না। তাকে ফাসেক বলা হবে। তাদের দলিল হল, হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
‘আল্লাহ তাআলা তো এমন ব্যক্তির প্রতি জাহান্নাম হারাম করে দিয়েছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২৫]

উক্ত হাদিসে বলা হয়েছে, শুধু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললেই মানুষ কোনো এক সময় জান্নাতে যেতে পারবে। নামাজের কথা এই হাদিসে বলা হয়নি। সুতরাং নামাজ না পড়লে যদি ব্যক্তি কাফেরই হয়ে যায় তাহলে সে তো জান্নাতে যেতে পারত না।

আরেক হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে পালন করবে, আর অবহেলাহেতু এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা (যথাযথভাবে) আদায় করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৪২০]

এই হাদিস থেকেও বুঝা যাচ্ছে, নামাজ না পড়লে ব্যক্তি কাফের হবে না। যদি কাফের হয়ে যেত তাহলে নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নামে পাঠাবেন। জান্নাতে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। অথচ হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করলে তাকে জাহান্নামে দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
সুতরাং নামাজ অস্বীকারকারী নয় এমন ব্যক্তি নামাজ না পড়লে কাফের হবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে এর দরুন আপনার মারাত্মক গুনাহ হবে।
তবে আপনি কাফের হয়ে যাবেননা।

(০২)
এইরকম দুয়ার জন্য আপনি কাফের হয়ে যাবেননা। ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার স্ত্রীর উপর কোনো তালাক পতিত হবেনা। 
আপনি নিশ্চিত থাকুন। 

(০৪)
তাহলে তার ঈমান চলে যাবেনা। সে কাফের হয়ে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...