আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in সালাত(Prayer) by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
১.আমি শুনেছি নামাজে সিজদার সময় নাক মাটিতে লাগানো  থাকবে। কিন্তু যদি সিজদার তাসবি পড়তে পড়তে,, যদি নাক জমিন থেকে একটু উঁচু হয়ে যায়,,তাহলে কি নামাজ ভাঙে যাবে?

২.সালাতে সালাম ফেরানোর সময় রহমাতুল্লাহ  বলার সময় লাম এর পরে মোটা এর জায়গায়  যদি চিকন হা পড়ি তাহলে কি নামাজ ভেঙে যাবে?

৩.অনেক সময় নামাজে তিলাওয়াত ভুল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে যদি একই শব্দ অথবা একটি সম্পূর্ণ আয়াত একাধিকবার তেলাওয়াত করলে সালাত কি বাতিল হয়ে যাবে? আবার যদি একই (সূরা/ তাশাহুদ/ দরুদ) এর মধ্যে  অনেকগুলো শব্দ বা  অনেকগুলো আয়াত সহিহ ভাবে তিলাওয়াতের জন্য একাধিকবার রিপিট করা যাবে?? অনেক সময় একই সূরার মধ্যে বারবার  উচ্চারণ একটু ভুল হয়,,,তখন কি   বারবারই রিপিট করে শুদ্ধ করে নেয়া যাবে? এক্ষেত্রে এমন হতে পারে একই সূরার মধ্যে অনেকগুলো আয়াত বা অনেকগুলো শব্দ আমি একাধিকবার বলছি। এমন করা যাবে??

৪.অনেক সময় নামাজের মাঝে বা  পরে সন্দেহ হয় তিলাওয়াতের মধ্যে অমুক হয়তো ভুল হয়ে গেছে। আমি সিদ্ধান্ত  নিতে পারিনা। একবার মনে হয় ওয়াসওয়াসা। আরেকবার মনে হয় সত্যি ভুল হয়েছে। দুটোর সম্ভাবনা ৫০%। এক্ষেত্রে আমি কি নামাজটা আবার পড়ব??

৫.আমি হয়তো কোনো সূরার ৩য় লাইনের মাঝামাঝি পড়ছি এমন সময় যদি আমার মনে হয় ১ম লাইনে কোনো শব্দের মাখরাজে ভুল হয়েছে তখন ঐ ৩য় লাইনে আমি ঠিক যেই জায়গায় পড়ছি ( হতে পারে যেই লাইন পড়ছি সেই লাইনের কোনো শব্দ তখনও শেষ হয়নি) ঐ শব্দ / লাইনটা কি শেষ করব নাকি সেই জায়গায়ই থেমে যেয়ে আবার ঐ লাইনের শুরু থেকে (যেইটার মাখরাজ ভুল হয়েছে) সেইখান থেকে শুরু করব নাকি নামাজ ভাঙে দেব?

৬.ফজরের সালাতের পর আমি সূর্যোদায় পর্যন্ত জিকির করি। এরপর ইশরাকের নামাজ পড়ি।কিন্তু প্রত্যেকদিন ঐ জিকির করার সময়টা মানে ঐ (২৫-৩০) মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময়  আমার বায়ু আসে। এখন বায়ু আসলে তা  চেপে ধরে জিকিরটা শেষ করে ইশারাকের নামাজটা পড়ব,, নাকি বায়ু ছেড়ে দিয়ে পুনরায় ওজু করে এসে নামাজ পড়ব?

৭.আজকে দাদী পান খাওয়ার সময় আমাকে বলছে পাশের ঘর থেকে জদ্দার কৌটাটা আনতে কারন উনি বৃদ্ধা এক ঘর থেকে অন্য ঘরে হেটে যেতে সমস্যা হয়। আমি এনে দিলাম।এইজন্য কি আমি গুনাগার হবো?

৮.আমার নামাজে তেলাওয়াতে খুব অসুবিধা হয়। প্রত্যেক ওয়াক্তেই  তিলাওয়াত করতে গেলে আটকে যায়। এখন আমি যদি একই সূরার মধ্যে একটা শব্দ অনেকবার অথবা অনেকগুলো শব্দ অনেকবার করে করে/ বারবার করে করে উচ্চারণ করি  সহিহ করার জন্য তাহলে কি হবে? একই সূরার মধ্যে একটা /দুটো অথবা তারও  বেশি আয়াত যদি বারবার পড়ি  শুদ্ধ করার জন্য তাহলে কি সমস্যা হবে??   যেমনঃ আমি ফাতিহা তেলাওয়াত শুরু করলাম,,, এরপর আর রাহমানির রহিম বললাম।এখানে রহিম  বলার সময় রহিম  শব্দটি দুই তিনবার বললাম,,, শুদ্ধ করার জন্য। টাও ঠিক হলো না। এখন আবার ওইপুরো আয়াত টাই আবার বললাম,,, সহিহ নাহলে আবার বললাম। এরপরেও দেখা যাচ্ছে তেলাওয়াত শুদ্ধ হলো না।এরপর ওই আয়াতটায় আবারো বললাম। মানে এইরকম অন্য সূরা / তাশাহুদ / দরুদ/  ইত্যাদির ক্ষেত্রেও এমন করা যাবে কি? আবার দেখা যাচ্ছে  আমি তাশাহুদ /দরুদ/ দোয়া মাসুরা তিলাওয়াত  করছি। কোথাও ভুল গেল।
 আমি হয়তো একটু আগে থেকে অথবা প্রথম থেকে তেলাওয়াত শুরু করলাম। আবার হয়তো কোথাও ভুল হয়ে গেল। আবার কি প্রথম থেকে অথবা একটু আগে থেকে শুরু করা যাবে?? মানে এইভাবে যতবার ভুল হবে ততবারই কি ঠিক করে পড়া যাবে ?  একটা শব্দ বা আয়াত যতবার ঠিক না হবে ততবারই কি ঠিক করে পড়া যাবে? সূরা ফাতিহার সময় কি এইটা প্রযোজ্য হবে?
নাকি নামাজ ভাঙে দেব?
আমি হয়তো বিষয়টা ভালো করে বুঝাতে পারছি না।

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا بَكْرٌ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا سَجَدَ الْعَبْدُ سَجَدَ مِنْهُ سَبْعَةُ آرَابٍ وَجْهُهُ وَكَفَّاهُ وَرُكْبَتَاهُ وَقَدَمَاهُ " .

কুতায়বা (রহঃ) ... আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন কোন বান্দা সিজদা করে তখন তার সপ্ত অঙ্গ সিজদা করে। তার মুখমন্ডল, উভয় হাতের তালু, উভয় হাটু এবং তার উভয় পা।

সহিহ, ইবনু মাজাহ হাঃ ৮৮৫, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৯৯২/ক নাসায়ী ১০৯৭)

أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ السَّرْحِ، وَيُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، وَالْحَارِثُ بْنُ مِسْكِينٍ، قِرَاءَةً عَلَيْهِ وَأَنَا أَسْمَعُ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - عَنِ ابْنِ وَهْبٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةٍ - لاَ أَكُفَّ الشَّعْرَ وَلاَ الثِّيَابَ - الْجَبْهَةِ وَالأَنْفِ وَالْيَدَيْنِ وَالرُّكْبَتَيْنِ وَالْقَدَمَيْنِ " .

আহমদ ইবনু আমর ইবনু সারহ, ইবনু আবদুল আলা ও হারিস ইবনু মিসকীন (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি আদিষ্ট হয়েছি সাত অঙ্গের উপর সিজদা করতে। আর যেন আমি চুল ও কাপড় একত্র করে না রাখি (সে সাত অঙ্গ হচ্ছে ) ললাট, নাক, উভয় হাত, উভয় হাঁটু এবং উভয় পা।

সহিহ, বুখারি হাঃ ৮১২, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৯৯২,নাসায়ী ১০৯৯)

আরো জানুনঃ 


'فتاوی ہندیہ'' :
''وكمال السنة في السجود وضع الجبهة والأنف جميعاً ولو وضع أحدهما فقط إن كان من عذر لا يكره، وإن كان من غير عذر فإن وضع جبهته دون أنفه جاز إجماعاً ويكره، إن كان بالعكس فكذلك عند أبي حنيفة رحمه الله، وقالا : لا يجوز، وعليه الفتوى''۔(2/26)
সারমর্মঃ-
সেজদার মধ্যে সুন্নাতের পূর্ণতা হলো কপাল ও নাক উভয়টিই জমিনের উপর রাখা। যদি এদুটির কোনো একটি রাখে,সেক্ষেত্রে তাহা যদি ওযর বশত হয়,সেক্ষেত্রে মাকরুহ হবেনা।
আর যদি ওযর ছাড়াই হয়,সেক্ষেত্রে যদি কপাল রাখে,আর নাক জমিন থেকে উঠিয়ে নেয়,তাহলে তাহা জায়েজ আছে,তবে মাকরুহ,আর যদি শুধু নাক জমিনে রাখে,কপাল উঠিয়ে নেয়,সেক্ষেত্রে ফতোয়া হলো নামাজ জায়েজ হবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
,
তবে রুকুর পুরোটা সময় ওযর ছাড়া সম্পূর্ণ নাক উঁচু করে রাখলে নামাজ মাকরুহ হবে।

(০২)
এক্ষেত্রে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
নামাজ হয়ে যাবে।

(০৩)
তিলাওয়াতে ভুল হলে যদি একই শব্দ অথবা একটি সম্পূর্ণ আয়াত একাধিকবার তেলাওয়াত করা হয়,সেক্ষেত্রে সালাত বাতিল হয়ে যাবেনা।

(০৪)
নামাজ আবার পড়তে হবেনা।

(০৫)
ঐ শব্দ শেষ করবেন। তারপর থেমে যেয়ে আবার ঐ লাইনের শুরু থেকে (যেইটার মাখরাজ ভুল হয়েছে) সেইখান থেকে শুরু করবেন।

(০৬)
এক্ষেত্রে বায়ুর চাপ বেশি হলে বায়ু ছেড়ে দিয়ে পুনরায় ওজু করে এসে নামাজ পড়বেন।

(০৭)
এর জন্য আপনি গুনাহগার হবেননা।

(০৮)
আপনার যদি তিলাওয়াত বাস্তবে শুদ্ধ হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে এগুলো আপনার মনের সন্দেহ মাত্র।
পুনরায় পড়তে হবেনা।

আর যদি আপনার তিলাওয়াত শুদ্ধ না হয়,সেক্ষেত্রে নামাজের বাহির মশক করে ঠিক করে নিবেন।
এভাবে নামাজের মধ্যে বিশেষ করে সুরা ফাতেহার ক্ষেত্রে ও প্রথম রাকাতের তাশাহুদের ক্ষেত্রে এরুপ করবেননা।

ভুল সম্পর্কে নিশ্চিত হলে ভুলের স্থান থেকে পুনরায় পড়বেন।
বা সেই আয়াতের শুরু থেকে পড়বেন।

ভুলের স্থান থেকে পড়ে আবার আয়াতের শুরু থেকে পড়বেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম 
apnar uttorer last line ta aktu likhsi erpor question korsi 
ভুলের স্থান থেকে পড়ে আবার আয়াতের শুরু থেকে পড়বেননা।
oneksomoi vulei sthan theke porar poreo mone hoi aktu sommossa hoyese..mane porer line ta r mone ase  na..ba mone thake na kontuku double bar porlam..airokom karone jodi...vuler sthan theke porar por abar oi ayat ta ayeter onsho abar pori tahole ki salat batil hoye jabe?? Aktu kosto kore reply ta diyen khubb dorkar 
by (561,180 points)
এক্ষেত্রে সালাত শুদ্ধ হয়ে যাবে।
সমস্যা হবেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...