আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
93 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
আচ্ছালামু আলাইকুম,
১. হারাম টাকা(ব্যাংক চাকুরি) ইনকাম করে এমন ভাইদের দেওয়া হাদিয়া (খাবার, কিতাব) বা তাদের টাকায় কোথাও ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি সুবিধা গ্রহণ করা যাবে কিনা?
২. গোপন গুনাহ সম্পর্কে কেউ জিজ্ঞেস করলো। এখন, গোপন গুনাহ লুকানোর জন্য মিথ্যা বললো, যে না আমি করি না। যেহেতু হাদীসে নিষেধ আসছে গোপন গুনাহ প্রকাশ না করতে। এখন এই মিথ্যা বলার কারণে কি আলাদা গুনাহ হবে।

৩. নামাযে একজন কি পরিমাণ হাসি হাসলে তার অজু ভেঙ্গে যাবে? অনেকে বলে, মুচকি হাসা যাবে, দাত দেখা গেলে অজু ভাঙবে, অনেকে বলে দাত দেখা গেলেও ভাঙবে না যেহেতু অট্টহাসি না।

৪. সালাতে কেউ হাঁচি দেওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ পড়লে কি সালাত ভেঙ্গে যাবে?  https://photos.app.goo.gl/gufi265m1iBthmoG8

ছবির মূলনীতি অনুযায়ী আমার কাছে মনে হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ বলা হাঁচি দেওয়ার জন্যই বলা হচ্ছে তাহলে এটা তো একটা ইস্যুর জন্যই বলা হচ্ছে, তাহলে তো সালাত ভাঙার কথা আর এটাই জানতাম। কিন্তু দারসে এবং পরীক্ষার প্রশ্নে উত্তর আসলো সালাত ভাঙবে না। তাই বিষয়টা সঠিক ভাবে জানতে চাচ্ছি। মূলনীতিতে মিলানোর ক্ষেত্রে হয়তো ভুল হয়েছে আমার সঠিক টা জানাবেন ইনশা আল্লাহ।
৫.  নারীদের জন্য বিয়ের পর তাদের বাপের বাড়ি কি ওয়াতনে আসলি হবে?  https://photos.app.goo.gl/N1UMWakU2WjtRjvm9
ছবিতে বলা হয়েছে পরিত্যাগ করলে মুসাফির হবে? এখন এই পরিত্যাগ করা বলতে কি বুঝিয়েছে? সাধারণত বিয়ের পর নারীরা বছরে বা মাসে কয়েকবার যায় নিজের বাড়ি বেড়াতে।

৬. দ্বীনি সংঘটন জনিত কোনো কাজ করলে সাওয়াব এর আশা করা যায়? আর দ্বীনি সংঘটন জনিত কোনো কাজ নিজের ইচ্ছায় না করে অমুক ভাই আজ আসছে তাই গিয়ে করি বা অন্যজন অনেক অনুরোধ করতেছে তাই করি। এতে কি গুনাহ বা রিয়া হবে? যেমন, তাবলিগের তালিমে বসা, গাস্তে যাওয়া।
৭. https://ifatwa.info/48320/ এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো এখনো নতুন কিছু অ্যাড হচ্ছে। তাই হয়তো হাইড করা হয়েছে। উত্তর এর অপেক্ষায় আছি।

1 Answer

0 votes
by (676,360 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)


https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,


فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن  كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع

যদি এমন কেউ কাউকে কিছু হাদিয়া দেয়,যার অধিকাংশ সম্পত্তি হালাল,তাহলে সেই মালকে গ্রহণ করা নাজায়েয নয়।তবে যদি সে জানতে পারে যে,দাতা হারাম থেকে দিচ্ছে তাহলে এমতাবস্থায় সেটা জায়েয হবে না।আর যদি তার মালের অধিকাংশই হারাম থাকে,তাহলে এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।এমন ব্যক্তির ওখানে আহার করাও যাবে না, যতক্ষণ না সে হালাল খাবারের সংবাদ দিচ্ছে বা এটা বলছে যে,সে ধার করে নিয়ে এসে আহার করাচ্ছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির যদি আর কোনো ইনকাম সোর্স না থাকে,তাহলে তাহলে তার দেয়া এসব হাদিয়া ইত্যাদি গ্রহন করা যাবেনা।
তার টাকায় ঘুরতে যাওয়াও যাবেনা।
,
আর যদি তার অন্য কোনো ইনকাম সোর্স থাকে,তাহলে তার হালাল ইনকাম বেশি হলে তার দেয়া গিফট,দাওয়াত ইত্যাদি গ্রহন করা যাবে।

আর যদি তার হারাম ইনকাম বেশি হয়,তাহলে তার দেয়া গিফট,দাওয়াত ইত্যাদি গ্রহন করা যাবেনা।

(০২)
এখানে সে তাওরিয়াহ করবে।
বলবে যে আমার মতো মানুষ এমন কাজ করতে পারে?
আপনার কি বিশ্বাস হয়,আমি এমন কাজ করিবো?

(০৩)
নামাজে যদি হাসে,তাহলে এক্ষেত্রে তিন ছুরত।
যদি শুধু দাঁত খুলে,হাসির আওয়াজ একেবারেই না হয়,তাহলে নামাজও ভেঙ্গে যাবেনা।
অযুও ভেঙ্গে যাবেনা। 
তবে এটি মাকরুহ।
(আলমগীরী ১/১২.আদ্দুররুল মুখতার ১/১৪৫)
,
আর যদি এতটুকু আওয়াজ হয় যে নিজে শুনতে পারে,অথবা একেবারে কাছের মানুষ শুনতে পারে,তাহলে শুধু নামাজ ভেঙ্গে যাবে। 
,
আর যদি এত জোড়ে হাসে,যে অন্যান্য লোকেরা অথবা মজলিসের লোকেরা শুনতে পারে,তাহলে নামাজ এবং অযু উভয়টাই ভেঙ্গে যাবে।
(আলমগীরী ১/১২.আদ্দুররুল মুখতার ১/১৪৫)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৪)
এতে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا رِفَاعَةُ بْنُ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيُّ، عَنْ عَمِّ، أَبِيهِ مُعَاذِ بْنِ رِفَاعَةَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَطَسْتُ فَقُلْتُ الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى . فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْصَرَفَ فَقَالَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " . فَلَمْ يَتَكَلَّمْ أَحَدٌ ثُمَّ قَالَهَا الثَّانِيَةَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " . فَلَمْ يَتَكَلَّمْ أَحَدٌ ثُمَّ قَالَهَا الثَّالِثَةَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " . فَقَالَ رِفَاعَةُ بْنُ رَافِعِ ابْنِ عَفْرَاءَ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " كَيْفَ قُلْتَ " . قَالَ قُلْتُ الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدِ ابْتَدَرَهَا بِضْعَةٌ وَثَلاَثُونَ مَلَكًا أَيُّهُمْ يَصْعَدُ بِهَا " .

রিফা'আ ইবনু রাফি' (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে নামায আদায় করছিলাম। হঠাৎ আমার হাঁচি বের হল। আমি বললাম, মুবারাকান আলাইহি কামা ইউহিববু রবরুনা ওয়া ইয়ারদা।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামায শেষ করে ফিরে বসলেন তখন প্রশ্ন করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? কেউ কোন সাড়া শব্দ করল না। তিনি দ্বিতীয় বার প্রশ্ন করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? এবারও কেউ কোন কথা বলল না। তিনি তৃতীয় বার প্রশ্ন করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? (রাবী) রিফা'আহ ইবনু রাফি ইবনু আফরাআ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কথা বলেছি। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কিভাবে বললে? রাবী বলেন, আমি বলেছি, "আল্লাহর জন্য অশেষ প্রশংসা, পবিত্রময় প্রশংসা, বারকাতময় প্রশংসা (এবং প্রশংসাকারীর জন্য) বারকাতময় প্রশংসা যা আমাদের প্রতিপালক ভালবাসেন ও পছন্দ করেন।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমি দেখছি তিরিশের বেশি ফিরিশতা তাড়াহুড়া করছে কে কার আগে এটা নিয়ে উপরে উঠবে।  (তিরমিজি ৪০৪ সহীহ আবু দাউদ- ৭৪৭, মিশকাত— (৯৯২)।

আরো জানুনঃ- 

(০৫)
প্রশ্নের বিবরণ মতে ঐ নারীর তো আর বাবার বাসায় একেবারে যাওয়ার নিয়ত নেই,তার নিয়ত হলো সে স্থায়ী ভাবে স্বামীর বাসাতেই থাকবে,সুতরাং তার বাবার বাসা তার ওয়াতনে আসলি নেই।


(০৬)
হ্যাঁ ছওয়াব পাওয়া যাবে,ইনশাআল্লাহ। 

(০৭)
জী।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (56 points)
আর দ্বীনি সংঘটন জনিত কোনো কাজ নিজের ইচ্ছায় না করে অমুক ভাই আজ আসছে তাই গিয়ে করি বা অন্যজন অনেক অনুরোধ করতেছে তাই করি। এতে কি গুনাহ বা রিয়া হবে? যেমন, তাবলিগের তালিমে বসা, গাস্তে যাওয়া।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 88 views
...