আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
442 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (11 points)
edited by
মুফতি সাব হুজুর আমি একটা বদ অভ্যাসে আক্রান্ত ছিলাম বেশ কিছুদিন যাবত। বদ অভ্যাস টা হলো হস্ত মৈথুন এর মতোন জঘন্য গুনাহে জড়িয়ে গেছিলাম।আমি এই গুনাহ থেকে বাচতে নিজের উপর কসম করি যে আমি যদি ৩০/৪০ দিন  এর মধ্যে পুনরায় হস্ত মৈথুন(অর্থাৎ হস্ত মৈথুন বলতে আমরা বা দুনিয়ার সকল মানুষ যা বুঝে,খাহেশাতের সাথে কোনো কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত করা) করি তাহলে আমার বিবি তালাক হয়ে যাবে।এখানে বিবিকে তালাক দেয়া আমার কোনো উদ্যেশ্যেই ছিলোনা,আমার উদ্যেশ্য ছিলো আমি যাতে এই গুনাহ থেকে দূরে থাকতে পারি এবং বদঅভ্যাস থেকে পরিত্রাণ পাই।আলহামদুলিল্লাহ আমি উক্ত সময় পর্যন্ত এই গুনাহ থেকে হেফাজত ছিলাম।আমার দ্বারা এই গুনাহ হয়নাই..কিন্তু মাঝে মাঝে খাহেশাতের সহিত অনেক সময় লিঙ্গে হাত গেছে,খাহেশাতের অনুভূতি আসছে কিন্তু হস্ত মৈথুন কখোনোই হয়নাই,,অর্থাৎ বীর্যপাত হয়নাই বা গোসল ফরজ হয়নাই।

১/এখন মনে ওয়াসওয়াসা আসতেছে যে লিঙ্গে হাত দেয়ার দ্বারাও কি শর্ত ভঙ্গ হবে?তালাক পতিত হবে? ইত্যাদি বিভিন্ন প্রশ্ন মাথায় এসে আমাকে ভাবিয়ে তুলতেছে।

২/হুজুর কেও যদি গুনাহ থেকে বাচার জন্যে, আল্লাহ কে সন্তুষ্ট করার জন্যে কোনো গুনাহ কে তালাকের সাথে শর্তারোপ করে তাহলে কি উক্ত শর্ত ভঙ্গ করলে বা গুনাহ করলে বিবি তালাক হবে? (একজন আলেমের বয়ান শুনছিলাম..উনি বলছিলেন গুনাহ থেকে বাচার উদ্যেশ্যে নিজের উপর এভাবে শর্তারোপ করলে তালাক হবেনা,কারন এখানে তালাক উদ্যেশ্য নয় বরং গুনাহ থেকে বেচে থাকা উদ্যেশ্য।এখানে সে কসম ভঙ্গের কাফফারা আদায় করবে)

৩/হুজুর কেও শর্তারোপ করলো (পর্ণ তথা উলঙ্গ নারিকে দেখবেনা,,,এখানে উলঙ্গ বলতে পুরা উলঙ্গ বুঝানো উদ্যেশ্য..,)তথা যার শরিরে কোনো কিছুই নেই।  এখন সে এমন উলঙ্গ কিছুই দেখলোনা কিন্তু আবেদনময়ী নারিকে দেখলো বা বিকনি তথা তার লজ্জাস্থান সমুহ ঢাকা এমন কোনো নারিকে দেখলো.. এ ক্ষেত্রে কি তালাক পতিত হবে? এমন নারিকে পৃথিবীতে সবাই অর্ধ উলঙ্গ বলে..,যা পেপার পত্রিকা তেও আসে এবং সে এটা জানতো।

আর তার শর্ত ছিলো উলঙ্গ নারি,যেথায় নারির লজ্জাস্থান এবং স্তন সমুহ দেখা যায়...,কিন্তু সে যা দেখেছে সেখানে লজ্জাস্থান সমুহ ঢাকা ছিলো..এবং এমন পোষাক যা অনেকেই পরিধান করে এবং বিভিন্ন নাটক সিনেমাতেও থাকে,,এই অর্ধ উলঙ্গ তার শর্ত ছিলোনা। কারন সে জানতো এমন পোশাক অবস্থায় নারির ছবি তার সামনে আসবেই বা এটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসেই তার সামনে।যেহেতু এই অর্ধ উলঙ্গ তার শর্ত ছিলোনা,সেক্ষেত্রে কি এইটা দেখার কারন তালাক পতিত হবে?   (মূলত হুজুর এখানে প্যাচ লাগছে মনে বা ওয়াসওয়াসা আসতেছে যে বিষয়ে তা হলো "শর্ত ছিলো উলঙ্গ মেয়ে না দেখা" আর দেখা হয়েছে বা হয় "অর্ধ উলঙ্গ" মেয়েকে..এখন অর্ধ উলঙ্গ এর মধ্যে উলঙ্গ শব্দটা তো আছে।এখন অর্ধ উলঙ্গ দেখার জন্যে যদি উলঙ্গ এর যেই শর্ত ছিলো সেটা যদি আসে) যদিও এক্বিনান আমি উলঙ্গ বলতে যৌণক্রিয়া অবস্থায় নগ্ন বা এমনি পুরো নগ্ন বুঝাইছি।আর অর্ধ উলঙ্গ এর মধ্যে কখোনোই এগুলা আসেনা অর্থাৎ শর্তকৃত বিষয় এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

কারন তালাক কে যে বিষয়ের সাথে শর্ত দিয়ে দেয়া হয়,হুবুহু সেই বিষয় পাওয়া গেলেই তো তালাক হবে বলে বলেছিলেন এবং এমনটাই জানি।এখানে তো সেই বিষয় পাওয়া যায়নাই।তাও মন কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে প্রশ্ন করলাম,যাতে মনে ওয়াসওয়াসা না আসে।

(হুজুর আমি নিশ্চিত থাকি এবং ছিলাম ও যে আমি আলহামদুলিল্লাহ শর্ত ভঙ্গ করিনাই আমার বিবিও তালাক হয়নাই,,কিন্তু তালাকের মাসালা পরার পর থেকে বিভিন্ন ওয়াসওয়াসা এসে আমাকে অতিষ্ঠ করে তুলছে,এটার দ্বারা যদি এমন হয়.. অইটার দ্বারা যদি এমিন হয় তখন!সেজন্য হুজুর সরাসরি আপনার কাছে প্রশ্ন করলাম।এর আগে কয়েকজন হুজুর কে বলেছিলাম তারা বলেছিলেন বীর্য বের না হলে তালাক হবেনা,তালাকের শর্ত হুবুহু না পাওয়া গেলে তালাক হবেনা)

৪/গুনাহের কথা প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়েছে,আলহামদুলিল্লাহ গুনাহ থেকে হেফাজত আছি..কিন্তু শয়তান বার বার খেয়াল করায় দেয় এবং মনের ভিতর ওয়াসওয়াসা ঢালে।এক্ষেত্রে কি করনিয়।

৫/হুজুর এবার একটা প্রশ্ন করবো, যা করতেও আমার লজ্জা লাগতেছে...কিন্তু ওয়াসওয়াসা এমন ভাবে আসলো আমি ভয় পেয়ে গেলাম।সেজন্য প্রশ্ন ইডিট করে আবার আরেকটা প্রশ্ন এড করলাম। হুজুর প্রশ্ন হলো আমি উলঙ্গ কোনো মেয়ে ছেলে দেখবোনা এবং অন্য কোনো ছেলে মানুষকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখবোনা।অর্থাৎ উলঙ্গ অবস্থায় ছেলে মেয়ের কোনো ভিডিও বা ছবি দেখবোনা,,যা আমরা অনলাইনে সচারাচর দেখে থাকি।তো হুজুর আমি এগুলা জানতাম এবং এটাও জানতাম যে আমি অন্য কোনো ছেলে মেয়ের কথা বুঝাইছি এবং মুখ দিয়েও সুস্পষ্ট ভাবে উচ্চারণ করেছি,এখানে নিজের কোনো কথা বলিনাই বা এতে আমি অভ্যস্ত নয়। কিন্তু হুজুর আল্লাহ মাফ করুক,,,আমি তো নিজের শরির উলঙ্গ অবস্থায় দেখেছি,নিজের যৌনাঙ্গ দেখেছি,অনেক সময় ছবি তুলছি, নিজের ওয়াইফ কে দিয়েছি বা... আর না বলি হুজুর (যখন এমন কর্ম করেছি তখন মাথায় ছিলো যে আমি তো অন্য কারো কিছু দেখিনাই, আমি তো নিজের টা দেখেছি আর এইটা শর্তের অন্তর্ভুক্ত ছিলোনা এবং আমি শর্তও দেইনি।

হজুর আমার প্রশ্ন হলো আমি এখানে অন্যদের কথা সুস্পষ্ট ভাবে বলেছি এবং আবার উদ্যেশ্যেও ছিলো অন্য নারি পুরুষ অর্থাৎ যাদের কে দেখা আমার জায়েজ নাই তাদের কে না দেখা। এখন এই অবস্থায় কি আমার বিবাহিত জীবনে কোনো সমস্যা হবে?আমি তো শর্ত মোতাবেক কোনো শর্ত ভঙ্গ করিনাই।আমি নিজের মধ্যে না রেখে সব খুলে বললাম,যাতে আর পুনরায় ওয়াসওয়াসা না আসে।আমি এই বিষয়ে আজিবন সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত ছিলাম এবং জানতামও যে কিছুই হয়নাই।এমনকি এটা নিয়ে সন্দেহ আসবে তাও কল্পনা করিনাই কখোনো।কিন্তু অন্যান্য ওয়াসওয়াসা আসাতে এখন এই ওয়াসওয়াসা আসা শুরু হইছে।যতো তালাক নিয়ে ঘাটাঘাটি করি ততো তালাক সংক্রান্ত ওয়াসওয়াসা বাড়ত্রি থাকে।ভাবি যে এবার ভেবে বাদ দিবো,কিন্তু ভাবা শুরু করলে একটা থেকে আরেকটা সংশয় শুরু হয়।সেজন্য মনের ভিতর ভাবনা যেনো না বাড়ে সেজন্য আপনাকে প্রশ্ন করে ফেললাম।কারন এখন এইটা মনের ভিতর ঘুরপাক খেতেই থাকবে আর পেরেশানি বাড়াবে।আল্লাহ ক্ষমা করুন।
by (11 points)
প্রশ্ন এডিট করা হয়েছে।আর হুজুর উত্তর পাইলে প্রশ্ন ডিলিট করে দিবো।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

ألفاظ الشرط إن … ومتی ومتی ما ففي ہٰذہٖ الألفاظ إذا وجد الشرط انحلت الیمین وانتہت؛ لأنہا لا تقتضي العموم والتکرار، فبوجود الفعل مرۃ تم الشرط وانحلت الیمین فلا یتحقق الحنث بعدہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵) 
সারমর্মঃ
শর্তের কিছু বাক্য আছে,যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে এবং শেষ হয়ে যাবে।
সেই শর্ত অনুপাতে হুকুম ফিরে আসবেনা।
কেননা এটি বারংবার কে চায়না।  

إذا وجد الشرط انحلت الیمین۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵، کذا في الہدایۃ / باب الأیمان في الطلاق ۲؍۳۵۸، البحر الرائق / باب التعلیق ۴؍۸ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে। 

আরো জানুনঃ- 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
(০১)
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র লিঙ্গে হাত দেয়ার দ্বারা শর্ত ভঙ্গ হবেনা। তালাক পতিত হবেনা।

(০২)
কেউ যদি গুনাহ থেকে বাঁচার জন্যে, আল্লাহ কে সন্তুষ্ট করার জন্যে কোনো গুনাহ কে তালাকের সাথে শর্তারোপ করে, তাহলে উক্ত শর্ত ভঙ্গ করলে বা গুনাহ করলে বিবি তালাক হবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে তালাক পতিত হবেনা।
পূর্ণ উলঙ্গ নারীকে দেখলেই কেবল তালাক পতিত হবে। 

(০৪)
আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে পানাজ চাইতে হবে।

এমন চিন্তা মাথায় আসলেই 
اعوذ بالله من الشيطان الرجيم 
لا حول ولا قوة الا بالله العلي العظيم 
বেশি বেশি পড়তে হবে।

প্রয়োজনে লা হাওলা,,,,, তিনবার পড়ে বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলবেন।

(০৫)
এই অবস্থায় আপনার বিবাহিত জীবনে কোনো সমস্যা হবেনা।
নিজের শরীর বা নিজ স্ত্রীর শরীর এভাবে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখার দরুন কোনো তালাক হবেনা।
শর্ত ভঙ্গ হবেনা।
আপনি নিশ্চিত থাকুন। 
আপনার বিবাহিত জীবনে কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...