মুফতি সাব হুজুর আমি একটা বদ অভ্যাসে আক্রান্ত ছিলাম বেশ কিছুদিন যাবত। বদ অভ্যাস টা হলো হস্ত মৈথুন এর মতোন জঘন্য গুনাহে জড়িয়ে গেছিলাম।আমি এই গুনাহ থেকে বাচতে নিজের উপর কসম করি যে আমি যদি ৩০/৪০ দিন এর মধ্যে পুনরায় হস্ত মৈথুন(অর্থাৎ হস্ত মৈথুন বলতে আমরা বা দুনিয়ার সকল মানুষ যা বুঝে,খাহেশাতের সাথে কোনো কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত করা) করি তাহলে আমার বিবি তালাক হয়ে যাবে।এখানে বিবিকে তালাক দেয়া আমার কোনো উদ্যেশ্যেই ছিলোনা,আমার উদ্যেশ্য ছিলো আমি যাতে এই গুনাহ থেকে দূরে থাকতে পারি এবং বদঅভ্যাস থেকে পরিত্রাণ পাই।আলহামদুলিল্লাহ আমি উক্ত সময় পর্যন্ত এই গুনাহ থেকে হেফাজত ছিলাম।আমার দ্বারা এই গুনাহ হয়নাই..কিন্তু মাঝে মাঝে খাহেশাতের সহিত অনেক সময় লিঙ্গে হাত গেছে,খাহেশাতের অনুভূতি আসছে কিন্তু হস্ত মৈথুন কখোনোই হয়নাই,,অর্থাৎ বীর্যপাত হয়নাই বা গোসল ফরজ হয়নাই।
১/এখন মনে ওয়াসওয়াসা আসতেছে যে লিঙ্গে হাত দেয়ার দ্বারাও কি শর্ত ভঙ্গ হবে?তালাক পতিত হবে? ইত্যাদি বিভিন্ন প্রশ্ন মাথায় এসে আমাকে ভাবিয়ে তুলতেছে।
২/হুজুর কেও যদি গুনাহ থেকে বাচার জন্যে, আল্লাহ কে সন্তুষ্ট করার জন্যে কোনো গুনাহ কে তালাকের সাথে শর্তারোপ করে তাহলে কি উক্ত শর্ত ভঙ্গ করলে বা গুনাহ করলে বিবি তালাক হবে? (একজন আলেমের বয়ান শুনছিলাম..উনি বলছিলেন গুনাহ থেকে বাচার উদ্যেশ্যে নিজের উপর এভাবে শর্তারোপ করলে তালাক হবেনা,কারন এখানে তালাক উদ্যেশ্য নয় বরং গুনাহ থেকে বেচে থাকা উদ্যেশ্য।এখানে সে কসম ভঙ্গের কাফফারা আদায় করবে)
৩/হুজুর কেও শর্তারোপ করলো (পর্ণ তথা উলঙ্গ নারিকে দেখবেনা,,,এখানে উলঙ্গ বলতে পুরা উলঙ্গ বুঝানো উদ্যেশ্য..,)তথা যার শরিরে কোনো কিছুই নেই। এখন সে এমন উলঙ্গ কিছুই দেখলোনা কিন্তু আবেদনময়ী নারিকে দেখলো বা বিকনি তথা তার লজ্জাস্থান সমুহ ঢাকা এমন কোনো নারিকে দেখলো.. এ ক্ষেত্রে কি তালাক পতিত হবে? এমন নারিকে পৃথিবীতে সবাই অর্ধ উলঙ্গ বলে..,যা পেপার পত্রিকা তেও আসে এবং সে এটা জানতো।
আর তার শর্ত ছিলো উলঙ্গ নারি,যেথায় নারির লজ্জাস্থান এবং স্তন সমুহ দেখা যায়...,কিন্তু সে যা দেখেছে সেখানে লজ্জাস্থান সমুহ ঢাকা ছিলো..এবং এমন পোষাক যা অনেকেই পরিধান করে এবং বিভিন্ন নাটক সিনেমাতেও থাকে,,এই অর্ধ উলঙ্গ তার শর্ত ছিলোনা। কারন সে জানতো এমন পোশাক অবস্থায় নারির ছবি তার সামনে আসবেই বা এটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসেই তার সামনে।যেহেতু এই অর্ধ উলঙ্গ তার শর্ত ছিলোনা,সেক্ষেত্রে কি এইটা দেখার কারন তালাক পতিত হবে? (মূলত হুজুর এখানে প্যাচ লাগছে মনে বা ওয়াসওয়াসা আসতেছে যে বিষয়ে তা হলো "শর্ত ছিলো উলঙ্গ মেয়ে না দেখা" আর দেখা হয়েছে বা হয় "অর্ধ উলঙ্গ" মেয়েকে..এখন অর্ধ উলঙ্গ এর মধ্যে উলঙ্গ শব্দটা তো আছে।এখন অর্ধ উলঙ্গ দেখার জন্যে যদি উলঙ্গ এর যেই শর্ত ছিলো সেটা যদি আসে) যদিও এক্বিনান আমি উলঙ্গ বলতে যৌণক্রিয়া অবস্থায় নগ্ন বা এমনি পুরো নগ্ন বুঝাইছি।আর অর্ধ উলঙ্গ এর মধ্যে কখোনোই এগুলা আসেনা অর্থাৎ শর্তকৃত বিষয় এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
কারন তালাক কে যে বিষয়ের সাথে শর্ত দিয়ে দেয়া হয়,হুবুহু সেই বিষয় পাওয়া গেলেই তো তালাক হবে বলে বলেছিলেন এবং এমনটাই জানি।এখানে তো সেই বিষয় পাওয়া যায়নাই।তাও মন কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে প্রশ্ন করলাম,যাতে মনে ওয়াসওয়াসা না আসে।
(হুজুর আমি নিশ্চিত থাকি এবং ছিলাম ও যে আমি আলহামদুলিল্লাহ শর্ত ভঙ্গ করিনাই আমার বিবিও তালাক হয়নাই,,কিন্তু তালাকের মাসালা পরার পর থেকে বিভিন্ন ওয়াসওয়াসা এসে আমাকে অতিষ্ঠ করে তুলছে,এটার দ্বারা যদি এমন হয়.. অইটার দ্বারা যদি এমিন হয় তখন!সেজন্য হুজুর সরাসরি আপনার কাছে প্রশ্ন করলাম।এর আগে কয়েকজন হুজুর কে বলেছিলাম তারা বলেছিলেন বীর্য বের না হলে তালাক হবেনা,তালাকের শর্ত হুবুহু না পাওয়া গেলে তালাক হবেনা)
৪/গুনাহের কথা প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়েছে,আলহামদুলিল্লাহ গুনাহ থেকে হেফাজত আছি..কিন্তু শয়তান বার বার খেয়াল করায় দেয় এবং মনের ভিতর ওয়াসওয়াসা ঢালে।এক্ষেত্রে কি করনিয়।
৫/হুজুর এবার একটা প্রশ্ন করবো, যা করতেও আমার লজ্জা লাগতেছে...কিন্তু ওয়াসওয়াসা এমন ভাবে আসলো আমি ভয় পেয়ে গেলাম।সেজন্য প্রশ্ন ইডিট করে আবার আরেকটা প্রশ্ন এড করলাম। হুজুর প্রশ্ন হলো আমি উলঙ্গ কোনো মেয়ে ছেলে দেখবোনা এবং অন্য কোনো ছেলে মানুষকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখবোনা।অর্থাৎ উলঙ্গ অবস্থায় ছেলে মেয়ের কোনো ভিডিও বা ছবি দেখবোনা,,যা আমরা অনলাইনে সচারাচর দেখে থাকি।তো হুজুর আমি এগুলা জানতাম এবং এটাও জানতাম যে আমি অন্য কোনো ছেলে মেয়ের কথা বুঝাইছি এবং মুখ দিয়েও সুস্পষ্ট ভাবে উচ্চারণ করেছি,এখানে নিজের কোনো কথা বলিনাই বা এতে আমি অভ্যস্ত নয়। কিন্তু হুজুর আল্লাহ মাফ করুক,,,আমি তো নিজের শরির উলঙ্গ অবস্থায় দেখেছি,নিজের যৌনাঙ্গ দেখেছি,অনেক সময় ছবি তুলছি, নিজের ওয়াইফ কে দিয়েছি বা... আর না বলি হুজুর (যখন এমন কর্ম করেছি তখন মাথায় ছিলো যে আমি তো অন্য কারো কিছু দেখিনাই, আমি তো নিজের টা দেখেছি আর এইটা শর্তের অন্তর্ভুক্ত ছিলোনা এবং আমি শর্তও দেইনি।
হজুর আমার প্রশ্ন হলো আমি এখানে অন্যদের কথা সুস্পষ্ট ভাবে বলেছি এবং আবার উদ্যেশ্যেও ছিলো অন্য নারি পুরুষ অর্থাৎ যাদের কে দেখা আমার জায়েজ নাই তাদের কে না দেখা। এখন এই অবস্থায় কি আমার বিবাহিত জীবনে কোনো সমস্যা হবে?আমি তো শর্ত মোতাবেক কোনো শর্ত ভঙ্গ করিনাই।আমি নিজের মধ্যে না রেখে সব খুলে বললাম,যাতে আর পুনরায় ওয়াসওয়াসা না আসে।আমি এই বিষয়ে আজিবন সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত ছিলাম এবং জানতামও যে কিছুই হয়নাই।এমনকি এটা নিয়ে সন্দেহ আসবে তাও কল্পনা করিনাই কখোনো।কিন্তু অন্যান্য ওয়াসওয়াসা আসাতে এখন এই ওয়াসওয়াসা আসা শুরু হইছে।যতো তালাক নিয়ে ঘাটাঘাটি করি ততো তালাক সংক্রান্ত ওয়াসওয়াসা বাড়ত্রি থাকে।ভাবি যে এবার ভেবে বাদ দিবো,কিন্তু ভাবা শুরু করলে একটা থেকে আরেকটা সংশয় শুরু হয়।সেজন্য মনের ভিতর ভাবনা যেনো না বাড়ে সেজন্য আপনাকে প্রশ্ন করে ফেললাম।কারন এখন এইটা মনের ভিতর ঘুরপাক খেতেই থাকবে আর পেরেশানি বাড়াবে।আল্লাহ ক্ষমা করুন।