আসসালামু আলাইকুম হুজুর,,বার বার বিরক্ত করি,ক্ষমা করে দিয়েন।হুজুর এগুলা আমার পূর্বের ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্ন। এর আগে ওলি উল্লাহ হুজুরের নিকট থেকে জবাব পেয়েছিলাম।হুজুর এর জবাব দেয়ার সিরিয়াল আসতে দেরি হবে সেজন্য সাইডে প্রশ্ন রাখতে বললেন।একটু দ্রুত জবাব পাইলে খুবই উপকৃত হইতাম।
পূর্বের ওয়াসওয়াসা জানিত প্রশ্ন সমূহ
১/
https://ifatwa.info/62215/
২/
https://ifatwa.info/63739/
আমার নিজের ও খুব লজ্জা লাগতেছে বার বার এভাবে প্রশ্ন করতে, যদিও এগুলার উত্তর পূর্বেও আপনার থেকে + অন্যান্য মুফতী সাহেবদের থেকে পেয়েছি..সবাই নিশ্চিত থাকতে বলেছিলেন.এগুলা না ভাবার কথা বলেছিলেন কিন্তু বার বার মনের ভিতর প্যাচ আসতেই থাকে আসতেইই থাকে..যতোই এগুলা থেকে দূরে থাকতে চাই বা না ভাবতে চাই ততোই মনের ভিতর সন্দেহ জাগায়।
ইদানীং এমন এমন সন্দেহ মনের মাঝে উকি দেয়,যেগুলা বিষয়ে আমি সু নিশ্চিত ছিলাম কিন্তু ৮-৯ মাস পর ওয়াসওয়াসা তে আক্রান্ত হবার পর থেকে সেগুলি বিষয় নিয়েও সন্দেহ আসা শুরু হইছে এবং আমাকে দ্বিধাদন্দের মাঝে ফেলায় দিচ্ছে।
এখন যে বিষয়ে আমার মনে ওয়াসওয়াসা আসতেছে তা আমি বিস্তারিত আপনাকে বলার চেষ্টা করতেছি উদাহারণ এর মাধ্যমে।যদিও এই প্রশ্ন আমি আগেও করেছিলাম এবং আপনারা উত্তর ও প্রদান করেছিলেন যে কোনো সমস্যা হয়নাই।তবুও শেষবারের মতোন প্রশ্ন করলাম।
★১...হুজুর আমি শর্ত দিয়েছিলাম একটা সময় নির্ধারিত করে যে এই সময়ের মধ্যে আমি যদি "ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনো গান দেখলে বা মেয়ের ছবি দেখলে(উদাঃ) আমার বিবি তালাক"
এখানে শর্তগুলি আরেকটু ভালো করে উল্যেখ করে বলি,,
+-গুনাহ তথা দেখা টা ইচ্ছাকৃত ভাবে হতে হবে,অনিচ্ছাকৃত ভাবে হলে হবেনা।
+-দেখলে তালাক হবে, অন্যান্য কর্মের দ্বারা শর্ত প্রদান করা হয়নি
তো হুজুর আমি এগুলা থেকে আলহামদুলিল্লাহ উক্ত সময় পর্যন্ত বিরত ছিলাম,,,একদিন আমাকে একটা বন্ধুকে একটা গানের ভিডিও বা ছবি পাঠানোর দরকার হয় এবং আমি উক্ত বন্ধুকে শর্ত মোতাবেক না দেখে পাঠাই।অর্থাৎ আমি যখন তাকে পাঠাই তখন আমি উক্ত ভিডিও বা ছবি দেখিনাই...কারন আমি জানতাম যে আমার শর্ত দেয়া "ইচ্ছাকৃত ভাবে দেখার ক্ষেত্রে" পাঠানোর ক্ষেত্রে তো নয়!
তো হুজুর আমি কসম করতে পারবো এবং সুনিশ্চিত যে আমি তাকে যখন পাঠাই তখন আমি না দেখেই পাঠাইছি এবং আমার চোখে যাতে না পরে সেজন্য সবধরনের প্রটেকশন ইউজ করেছি।এখন পাঠানোর ক্ষেত্রে ভূলবশত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে হুট করে চোখে পড়তে পারে বা পরেছে, আর (যদিও পরে তাহলেও সেটা ছিলো অস্পষ্ট ভাবে ১০০%) কিন্তু কসম সেটা আমার ইচ্ছাকৃত কোনো অবস্থা ছিলোনা।এবং এই বিষয়ে আমি পুরাপুরি নিশ্চিত ছিলাম যে আমি তো ইচ্ছাকৃত ভাবে দেখিনাই সুতরাং আমার শর্তের মধ্যে পড়েনাই যারজন্যে তালাক নিয়েও কোনো সমস্যা হবেনা।
আর হুজুর না দেখে উক্ত জিনিস পাঠানো ১০০% পসিবল এবং আমি নিশ্চিত যে আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে দেখে দেখে পাঠাইনি।এখন আমার অগোচরে হইছে কিনা সেটা আমি জানিনা অথবা আমার খেয়াল নাই,এ ব্যাপারে আমি কসম করতে পারবো।কারন আমি সত্যি বলছি,কোনো মিথ্যার আশ্রয় নেইনি।
এখন ৬-৭ মাস পর এসে সব ওয়াসওয়াসা শেষ হবার পর নতুন করে মনের ভিতর ওয়াসওয়াসা আসতেছে যে "তুমি সেদিন যে পাঠাইছিলে একটা ভিডিও /ছবি,সেটা তো তোমার চোখে পড়তেও পারে অথবা যদি দেখে পাঠাও অথবা এভাবে পাঠানোর ক্ষেত্রে যদি তালাক হয়ে যায়!" কিন্তু হুজুর এই বিষয়েও যে আমার ওয়াসওয়াসা আসবে আমি তা কল্পনাতেও ভাবিনাই।হুজুর এগুলা ৭-৮ মাস আগের কথা,তখন আমি আমার ব্যাপারে সুনিশ্চিত ছিলাম যে তালাক হয়নাই কিন্তু এখন আমি কিভাবে পাঠাইছিলাম তা কিভাবে মনে করবো বলেন??তবে ১০০% শিউর আমি শর্ত ভঙ্গ না করেই পাঠাইছি এবং এভাবে পাঠানো ১০০% সম্ভব। আমি মনের ভিতর অনেক চিন্তা ভাবনা করেছি এবং আলহামদুলিল্লাহ আমি সুনিশ্চিত বা আমার সামনে এমন কয়েকটি খেত্র আসছে যার মাধ্যমে শর্ত ভঙ্গ না করে পাঠানো যাবে এবং আমি ইনশআল্লাহ এগুলা মেনেই পাঠাইছি।
হজুর আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে দেখার বিষয়ে শর্ত আরোপ করেছিলাম পাঠানোর বিষয়ে তো শর্ত আরোপ করিনাই..এখন পাঠানোর দ্বারা বা শেয়ার করার দ্বারা কি তালাক পতিত হবে?? (হুজুর বিষয়গুলি নিয়ে আমি সুনিশ্চিত ছিলাম যে কিছুই হবেনা, কারন আমি শর্ত ভঙ্গ করিনাই,..এরপরো সন্দেহ দূর করার জন্যে প্রশ্ন করলাম।কারন মনের ভিতর যদি যদি যদি এমন সব সন্দেহ আসে)
(নোটঃ আমি নিজ ইচ্ছাকৃত ভাবে কখোনোই দেখিনাই ইনশাআল্লাহ।অন্যান্য হুজুরদের কে জিজ্ঞাসা করার পর বলছিলো যে "ইচ্ছাকৃত ভাবে যেহেতু দেখোনি সেজন্য তালাক হবেনা কিন্তু পাঠানোর জন্যে গুনাহ ঠিকই হবে এবং তালাক ও হবেনা।)
২/হুজুর আমার পাঠানোর সময় সকল প্রটেকশন রাখার পরো অনিচ্ছাকৃত ভাবে সামনে আসছে আর আমি সাথে সাথে ঢেকে ফেলেছি বা চোখ সড়িয়ে ফেলেছি.. পুনরায় আর তাকাইনি বা দেখিনাই..অথবা চোখের সামনে আসলেও অস্পষ্ট ভাবে আসছে,বা এমন ভাবে আসছে বা চোখ পড়ছে বা দেখা হইছে যাতে কিছুই দেখা যায়নি,অথবা এমনো হতে পারে যে এইটা অমুক ফাইল হতে পারে বুঝা গেছে, তাও আমি জানিনা, হতে পারে বলে সন্দেহ করছি মাত্র,সেটাও উল্যেখ করে দিলাম আপনার নিকট। এবং স্পষ্ট ভাবে কখোনোই দেখিনাই বা দেখার চেষ্টাও করিনাই,এরদ্বারা কি তালাক হবে? আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে দেখিনাই কসম..আর আমার শর্ত ছিলো ইচ্ছাকৃত ভাবে দেখার।
(নোটঃ আমি নিজ ইচ্ছাকৃত ভাবে কখোনোই দেখিনাই ইনশাআল্লাহ।অন্যান্য হুজুরদের কে জিজ্ঞাসা করার পর বলছিলো যে "ইচ্ছাকৃত ভাবে যেহেতু দেখোনি সেজন্য তালাক হবেনা কিন্তু পাঠানোর জন্যে গুনাহ ঠিকই হবে এবং তালাক ও হবেনা।)
৩/হুজুর এতো আগের ঘটনা আমার মনে নাই সঠিক ভাবে আর আমি ওয়াসওয়াসার রুগি এবং পূর্বের কোনো প্রমানো আমার হাতে বিদ্যমান নাই,,,,এখন আমি কি করবো? সন্দেহ যাগে মনে বার বার,এগুলার দ্বারা কি তালাক হবে? আর আমার জন্যে বা তালাকের অতিতের ঘটনার জন্যে কি প্রবল ধারনা হওয়া শর্ত?কারন এতে করে তো সবাই ওয়াসওয়াসার স্বিকার হবে।
৪/হুজুর আমার তালাক হবার ব্যাপারে প্রবল ধারনা হওয়ার পরো সামান্য সন্দেহ থেকে যায়,,এরদ্বারা কি তালাক পতিত হবে? কোনো প্রমান ছাড়াই শুধু মনে সন্দেহ আসে যে,যদি হয়!এমন সন্দেহের দ্বারা কি পূর্বের একিনের উপর কোনো ভাটা পরবে?বা সমস্যা হবে বা বাতিল হবে?
৫/হুজুর আমার তালাক নিয়ে ১২-১৪ টা ওয়াসওয়াসা রয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ আমি প্রত্যেকটা মুফতি সাহেবদের নিকট জেনে জেনে মাসালা হল করেছি,কিন্তু এগুলার চিন্তা ভাবনা শুধু মনের ভিতর পুনরাবৃত্তি হতে থাকে আর আমাকে দুশ্চিন্তা করে তুলে।মোন ভাবায় যে আরেকটু চিন্তা করো,যদি কোনো ভূল থেকে যায়!আর আমি চিন্তা করতে গিয়ে সুস্পষ্ট এবং সমাধানকৃত মাসালা তেও সন্দেহযুক্ত হয়ে পরি।আমি যদি এগুলা না চিন্তা করি তাহলে কি কোনো প্রবলেম হবে?
৬/হুজুর আমার এই তালাক সংক্রান্ত সমস্যার জন্যে কি করতে পারি?? এমন সমস্যা কি শুধু আমারই নাকি অনেকের সাথেই এমন ওয়াসওয়াসা প্রবলেম হয়?
৭/হুজুর আমি আমার মন কে কিভাবে বুঝাবো??একটু বলুন।
আমি আমার বর্তমান ধারনার উপর কসম করে বলতে পারবো আমি কখোনোই আমার শর্ত ভঙ্গ করিনাই।বাকিটা সন্দেহের উপর আল্লাহ ভালো জানেন।
৮/হুজুর আমার সামনে একটা বিষয়ে সন্দেহ আসলে সেগুলা থেকে পরিত্রাণ পাইতে আমি ভাবি মনে মনে।এরপরে আমার সামনে তালাক হবার কিছু সম্ভাবনা আসে আমি জোর করে সম্ভাবনাময় দিকগুলি খুজে নিয়ে আসি, যাতে আমি নিরেপক্ষ থাকাতে পারি,শয়তান যাতে কোনো প্রচরণায় ফেলতে না পারে।আবার অপরদিকে তালাক না হবার বেশ কিছু সম্ভাবনাও থাকে এবং এর পরিমান থাকে ৭০-৮০%। এমন সন্দেহযুক্ত সিচ্যুয়েশনে আমার করণিয় কি??সন্দেহ যুক্ত অবস্থায় কি তালাক হবে??আর আমি কি ওয়াসওয়াসা রুগির অন্তর্ভুক্ত?? (আমার বিগত অনেক প্রশ্ন আছে,সেখান থেকে কি আমাকে ওয়াসওয়াসার রুগি মনে হয়?)
৯/হুজুর গুনাহ করলে কোনো ওয়াসওয়াসা আসেনা কিন্তু যখন আল্লাহর দিকে রুজু হতে যাই তখনি আমাকে ওয়াসওয়াসা ধরে বসে।এখত্রে আমি কি করবো?
১০/হুজুর আমি আমার যায়গা থেকে সত্য বললাম এবং যে বিষয়ে বেশি ইতমিনান হয় সেটাই প্রকাশ করলাম।হুজুর এখন আমার প্রবল ধারনা হবার পরো যদি আল্লাহ না করুন তালাক হয়,মানে শর্ত ভঙ্গ হয় যা আমি জানিনা,তখন কি হবে?
হুজুর সন্দেহ থাকলে এবং সঠিক বিষয়টি জানা না থাকলে কি তালাক হবে??
তালাকের ব্যাপারে শরিয়তের বিধান কি অর্থাৎ যে তালাকে সন্দেহ থাকে সেই তালাকের ব্যাপারে??
১১/কোনো ব্যাক্তির পূর্বে ২ তালাক হইছে,এখন সে আর ১তালাকের মালিক থাকলো।এখন মাত্র ১ তালাকের মালিক হওয়ার জন্যে কি তার সংসারে বরকত কমে যাবে?
আর তালাক হলেই কি বারবার তালাক হতেই থাকে?অনেকে বলে তালাক একবার হলে বলে হতেই থাকে,,ইত্যাদি
১২/হুজুর পূর্বে আমি সব বিস্তারিত ভাবে উল্যেখ করলাম,এখন আমি দোদুল্যমান অবস্থায় থাকি যে আমি কি ঠিক বললাম কি বললাম না! আমি কি নিশ্চিত না নিশ্চিত না! তালাক হলেও হতে পারে আবার নাও হতে পারে, একবার মনে হয় আমি সঠিক আবার মনে হয় বেঠিক।এমন দোদুল্যমান অবস্থায় কি তালাক হবে? আমি কখোনোই নিজেকে বাচানোর জন্যে কোনো কিছু লুকাইনি, যা দিলে আসছে সব খুলে বলছি।এই অবস্থায় কি তালাক হবে? নাকি ১০০% সুনিশ্চিত হতে হবে তালাকের ব্যাপারে?
১৩/হুজুর আমি নিজেও বুঝি আমি ওয়াসওয়াসার রুগি,শয়তান বা আমার ব্রেইন আমাকে নিয়ে খেলতেছে,,এই ব্যাপারে আমি শতভাগ থাকি।এরপরেও আমার মনের মাঝে অল্প পরিমানে সন্দেহ জাগা দেয়,আর আমি তখনি ভাবা শুরু করে দেই আর তখনি আমাকে পাকড়াও করে ফেলে।অর্থাৎ পেরেশানি বাড়তে শুরু করে।হুজুর আমি কি করবো বলেন তো??কিচ্ছু ভালো লাগেনা..মাঝে মাঝে শরিয়তের বিভিন্ন বিষয়েও খেয়ালাত আসার ট্রাই করে কিন্তু আমি পাত্তা দেইনা।ভয় পাই যদি কখোনো সেগুলির ফাদেও পা দিয়ে ফেলি!