আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in পবিত্রতা (Purity) by (68 points)
edited by
হঠাৎ গত কাল ঘুমের মাঝেই কিছু প্রসাব বের হয়ে যায়।  লেপে লেগেছে কি না দেখি নাই, চাদরে ও চাদর থেকে তোষকে হালকাআআ লেগেছে। সাথে সাথে ঘুম ভাঙ্গায় বেশি লাগে নি, তারপর উঠে বাথরুমে যাওয়ার সময় ফোটা ফোটা আকারে ফ্লোরে কিছু পরেছে। ফ্লোরের প্রসাবের ফোটা  অংশ গুলো আমি শুকানো কিছু দিয়ে না মুছেই সরসরি একটি টি শার্ট ভিজিয়ে একবার রুমের যেখানে যেখানে পরেছিলো তা মুছি, পরে আবার এই টিশাট টেপের পানিতে কিছু ধোয়ে-চিপে  আবার একই ভাবে আগের জায়গা গুলো মুছি। এই গেলো প্লোরের হিসাব।   লেপে কোনো পানির দাগ তখন পাই নি মনে তো হয় লাগে নাই লেপে, তবে সন্দেহ আছে, রোদ না উটায় তোষক লেপ রোদে দেই নাই, চাদর বালিশের কাভার খোলে, এভাবেই বিছানার উপর রেখে দিয়েছি। এখন তোষকের ও লেপের অংশ শুকিয়ে গেছে। আসলে লেগেছেই খুব অল্প। ভাবতেছি তোষক উল্টিয়ে ইউজ করবো। উল্লেখ্য আমার পক্ষে লেফ তোষক ধোয়া সম্ভব না,  আমি হোস্টেলে থাকি।

১. এখন আমার, ফ্লোর কি পবিত্র হয়েছে তাতে কি নামাজ পরতে পারবো??

২. লেফ তোষক কি পবিত্র হয়েছে?  আর না হলে তাতে আমি ঘুমালে বা ব্যবহার করলে কি শরীর ও নাপাক হয়ে যাবে? না কি  অপবিত্র থাকলেও বাতাসে শুকানোর আমি তা স্বাভাবিক ভাবে ইউজ করতে পারবো???

৩.আবার ভিজা পায়ে ফ্লোরে হাটলে আবার তা অপবিত্র বা তোষকে ভিজা হাত পায়ে ওই জাগায় টাচ লাগলে অপবিত্র হবে না তো?

৪. কেও যদি বলে "আল্লাহ এই যন্ত্রণায় ফেললেন আমাকে" এতে কি কুফর হবে?

৫. স্ত্রী যদি মজা করে বলে, " তুমি তো এই কাজ করে আমারে ছাইড়া দিবায়" স্বামীও যদি মজা করে হ্যা বলে এতে কি তালা পতিত হয়?

৬. আজকে একজনকে দেখে হিন্দু মনে হওয়ায় আমি তাকে আদাব দিয়ে ফেলেছি। পরে লজ্জা করে আর জিগ্যেসা করি নও কথা শেষ করে চলে এসেছি, এর ফলে কি গুনাহ হবে? আমি নিজেকে কোনো অন্য কিছু বুঝানোর জন্য দেই নি...

(সে আমাকে অন্য ধর্মের ভেবেছে কিনা বা এটা ভেবে আমার ভাবনায় কি এসেছিলো তা খেয়াল নাই)

৭. কেও যদি কোনো কাজে ইনশাআল্লাহ বলার পর খেয়াল করে যে এই কাজ তো হারাম ছিলো, তবে কি সে গুনাহগার বা ইমানে সমস্যা হবে?

৮. কেও যদি মনে মনে ভাবে যে প্রচলিত রাজনীতি তো সরাসরি কুফরি না, পরে এই ভাবনায় নিয়ে সন্দেহে পরে যায়, যেহেতু গনতন্ত্র কুফরী,  এবং কিছু পরে তওবা ও করে। এজন্য  কি কুফর হবে?

৯. প্রচলিত গনতন্ত্রকে কি কুফরী না কি হারাম কোনটি বলা উচিত, এর সাথে জড়িতদের তাদের কাজে সাহায্য করা কুফরী না কি হরাম?

১০. মনে মনে কুফরী কথা বললে কেও কাফের হয় না এমনটা জানি, তবে কেও যদি মনে কোরআন বিরোধী, হাদীস বিরোধী  আকিদা, রাখে আর তা মনে মনেই রাখে, প্রকাশ না করে তবে, সেও কি প্রকাশ করার আগে পযন্ত মুসলিম হিসাবে থাকবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছে-

يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ

আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}

(قَوْلُهُ: إلَّا حَجَرًا خَشِنًا إلَخْ) فِي الْخَانِيَّةِ مَا نَصُّهُ: الْحَجَرُ إذَا أَصَابَتْهُ النَّجَاسَةُ، إنْ كَانَ حَجَرًا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ كَحَجَرِ الرَّحَى يَكُونُ يُبْسُهُ طَهَارَةً، وَإِنْ كَانَ لَا يَتَشَرَّبُ لَا يَطْهُرُ إلَّا بِالْغَسْلِ. اهـ. وَمِثْلُهُ فِي الْبَحْرِ.
وَبَحَثَ فِيهِ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ فَقَالَ هَذَا بِنَاءً عَلَى أَنَّ النَّصَّ الْوَارِدَ فِي الْأَرْضِ مَعْقُولُ الْمَعْنَى؛ لِأَنَّ الْأَرْضَ تَجْذِبُ النَّجَاسَةَ وَالْهَوَاءَ يُجَفِّفُهَا فَيُقَاسُ عَلَيْهِ مَا يُوجَدُ فِيهِ ذَلِكَ الْمَعْنَى الَّذِي هُوَ الِاجْتِذَابُ، وَلَكِنْ يَلْزَمُ مِنْهُ أَنْ يَطْهُرَ اللَّبِنُ وَالْآجُرُّ بِالْجَفَافِ وَذَهَابِ الْأَثَرِ وَإِنْ كَانَ مُنْفَصِلًا عَنْ الْأَرْضِ لِوُجُودِ التَّشَرُّبِ وَالِاجْتِذَابِ. اهـ. وَعَلَى هَذَا اسْتَظْهَرَ فِي الْحِلْيَةِ حَمْلَ مَا فِي الْخَانِيَّةِ عَلَى الْحَجَرِ الْمَفْرُوشِ دُونَ الْمَوْضُوعِ، وَهَذَا هُوَ الْمُتَبَادِرُ مِنْ عِبَارَةِ الشُّرُنْبُلَالِيَّةِ، لَكِنْ يَرُدُّ عَلَيْهِ أَنَّهُ لَا يَظْهَرُ فَرْقٌ حِينَئِذٍ بَيْنَ الْخَشِنِ وَغَيْرِهِ، فَالْأَوْلَى حَمْلُهُ عَلَى الْمُنْفَصِلِ كَمَا هُوَ الْمَفْهُومُ الْمُتَبَادِرُ مِنْ عِبَارَةِ الْخَانِيَّةِ وَالْبَحْرِ.
وَيُجَابُ عَمَّا بَحَثَهُ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ بِأَنَّ اللَّبِنَ وَالْآجُرَّ قَدْ خَرَجَا بِالطَّبْخِ وَالصَّنْعَةِ عَنْ مَاهِيَّتِهمَا الْأَصْلِيَّةِ بِخِلَافِ الْحَجَرِ فَإِنَّهُ عَلَى أَصْلِ خِلْقَتِهِ فَأَشْبَهَ الْأَرْضَ بِأَصْلِهِ، وَأَشْبَهَ غَيْرَهَا بِانْفِصَالِهِ عَنْهَا، فَقُلْنَا إذَا كَانَ خَشِنًا فَهُوَ فِي حُكْمِ الْأَرْضِ؛ لِأَنَّهُ لَا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ، وَإِنْ كَانَ أَمْلَسَ فَهُوَ فِي حُكْمِ غَيْرِهَا؛ لِأَنَّهُ لَا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ - وَاَللَّهُ أَعْلَمُ -
«حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (1/ 312)
মর্মার্থ-
ফ্লোর যদি টাইলসবিহীন হয়, তাহলে নাপাকির ওপর পানি ঢেলে দিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে। তবে পানি ঢালার পূর্বেই যদি শুকিয়ে যায়, তাহলেও পবিত্র হয়ে যাবে। কেননা তা মাটির হুকুমে। আর যদি ফ্লোর টাইলসবিশিষ্ট হয় এবং টাইলসগুলো আয়নার মতো সমান হয় এবং পানি চোষার ক্ষমতা না রাখে, তাহলে তা আয়নার হুকুমে। অর্থাৎ কোন কাপড় জাতীয় বস্তু দ্বারা মুছে ফেললে পবিত্র হয়ে যাবে। কিন্তু টাইলসে যদি মাটির মতো শোষণ ক্ষমতা থাকে, তাহলে তা মাটির হুকুমে। অর্থাৎ শুকানোর দ্বারা পবিত্র হয়ে যাবে। আর যদি শোষণ ক্ষমতা না থাকে এবং আয়নার মতো সমানও না হয়, তাহলে নাপাকি দূর হওয়া পর্যন্ত পানি দিয়ে তা ভালো ভাবে ধুতে হবে। (আরো জানতে দেখুন- ই’লাউস সুনান: ১/৩৯২, হিদায়া: ১/৫৬, ফতহুল কদীর: ১/১৭৪, মাবসুতে সারখসী: ১/২০৬)

বিস্তারিত জানুনঃ   

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে ফ্লোর পাক হয়ে গিয়েছে।
তাতে নামাজ পড়তে পারবেন।

(০২)
তোশক পাক হয়নি।
লেপ এ নাপাকি লেগেছে কিনা,তাতে আপনি সন্দিহান।
এক্ষেত্রে যদি পেশাবের গন্ধ পান,সেক্ষেত্রে সেটি নাপাক।
নতুবা সেটিকে পাক ধরবেন।

সব ছুরতেই উক্ত তোশক ও লেপ এ আপনি ঘুমালে বা ব্যবহার করলে শরীর ও নাপাক হয়ে যাবেনা।

অপবিত্র থাকলেও বাতাসে শুকানোর আপনি তা স্বাভাবিক ভাবে ইউজ করতে পারবেন।

তবে শরীর ভেজা থাকা যাবেনা,শুকনো শরীরে ব্যবহার করতে হবে,বা শুকনো কাপড় পরিহিত অবস্থায় তাহা ব্যবহার করতে হবে।

(০৩)
এখন ভিজা পায়ে ফ্লোরে হাটলে আবার তাহা অপবিত্র হবেনা।
তবে তোষকে ভিজা হাত পায়ে ওই জাগায় টাচ লাগলে এক্ষেত্রে হাত পায়ে নাপাকির গন্ধ পাওয়া গেলে হাত/পা অপবিত্র হবে। 

(০৪)
এতে কুফর হবেনা।
তবে মাহান আল্লাহর শানে এহেন বাক্য ব্যবহার করা তার জন্য উচিত হয়নি।

(০৫)
এতে তালাক পতিত হবেনা। 

(০৬)
আপনার গুনাহ হবে।
তওবা করতে হবে।

(০৭)
প্রশ্নের বিবেচনায় মতে না ভেবে ইনশাআল্লাহ বলায় সে গুনাহগার বা ঈমানে সমস্যা হবেনা।

(০৮)
এ জন্য কুফর হবেনা। 

(০৯)
প্রচলিত গনতন্ত্র একটি কুফরি মতবাদ। 
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(১০)
এক্ষেত্রে মুখে যদি সে সহীহ আকীদার কথাই বলে,কুফরি কথা মুখ দিয়ে না বলে,সেক্ষেত্রে তাকে কাফের বলা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...