জবাবঃ-
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
(০১)
অনেক মুহাক্কিদের মতে টাই এটি খৃষ্টানদের ধর্মীয় প্রতিকৃতি ক্রুশের প্রতীকরূপে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদি তা’ই হয়, তাহলে টাই ব্যবহার থেকে বিরত থাকা প্রতিটি মুসলমানদের জন্য আবশ্যক।
,
আর যদি তা নাও হয়, তবু এটি এটি ফাসিক ফুজ্জারদের পোশাকের অন্তর্ভূক্ত। সে হিসেবেও এটি পরিত্যাজ্য।
খৃষ্টানদের ধর্মীয় চিহ্ন রূপেই তাদের মধ্যে টাইয়ের প্রচলন হয়েছে। টাই পরা খৃষ্টানদের আবহমান কাল ধরে চলে আসা ধর্মীয় ঐতিহ্য। তা ছাড়া টাই যে ইউরোপে ব্যাপকভাবে প্রচলিত বিজাতীয় ভূষণ-কালচার এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই মুসলমানদের জন্য টাই ব্যবহারকে কোনভাবেই জায়িয বলা যায় না।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}
★তবে বর্তমান যামানায় এখন খৃষ্টান ব্যতীত অন্যান্যরাও অনেক বেশী পরিধান করে থাকে।নামায রোযার অনেক অনেক পাবন্দ ব্যক্তিরা পর্যন্তও টাই পরে থাকেন।সুতরাং বর্তমানে টাই পরিধানের হুকুমে পূর্বের তুলনায় কিছুটা শীতিলতা চলে আসবে।
বর্তমানে টাই পরিধানকে হারাম বা নাজায়েয বলা যাবে না।
তবে সেটি মাকরুহ।
★কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকুরী বা লেখাপড়া করতে গিয়ে টাই পড়া বাধ্যতামূলক হলে সেক্ষেত্রে টাই পড়া মাকরুহ হবে।
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত বাচ্চার জন্য এটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আবশ্যকীয় নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হলে এক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০২)
এক্ষেত্রে এটি জায়েজ, তবে অনুত্তম।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا ابْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، نَحْوَهُ عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَوْرَاتُنَا مَا نَأْتِي مِنْهَا وَمَا نَذَرُ قَالَ " احْفَظْ عَوْرَتَكَ إِلاَّ مِنْ زَوْجَتِكَ أَوْ مَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ " . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذَا كَانَ الْقَوْمُ بَعْضُهُمْ فِي بَعْضٍ قَالَ " إِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ لاَ يَرَيَنَّهَا أَحَدٌ فَلاَ يَرَيَنَّهَا " . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذَا كَانَ أَحَدُنَا خَالِيًا قَالَ " اللَّهُ أَحَقُّ أَنْ يُسْتَحْيَا مِنْهُ مِنَ النَّاسِ " .
আব্দুল্লাহ ইবন মাসলামা (রহঃ) ………. বাহয ইবন হাকীম (রাঃ) তাঁর পিতা ও দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা আমি বলিঃ ইয়া রসূলাল্লাহ! আমরা আমাদের সতর কাদের থেকে আবৃত রাখবো? তিনি বলেনঃ তুমি তোমার সতর স্ত্রী এবং ক্রীতদাসী ব্যতীত অন্য সকলের নিকট থেকে ঢেকে রাখবে। এরপর আমি জিজ্ঞাসা করি; ইয়া রসূলাল্লাহ! যখন লোকেরা পরস্পর মিলে-মিশে থাকবে? তখন তিনি বলেনঃ যদি তোমার পক্ষে সম্ভব হয় যে কেউ তোমার সতর দেখবে না , তবে এরুপ করবে; যাতে তোমরা সতর কেউ দেখতে না পারে। তিনি বলেনঃ এরপর আমি জিজ্ঞাসা করিঃ ইয়া রসূলাল্লাহ! যখন আমাদের কেউ নির্জনে থাকবে? তিনি বলেনঃ মানুষের চাইতে আল্লাহকে বেশি লজ্জা করবে।
(আবূ দাঊদ ৩৯৭৬. ৪০১৯, তিরমিযী ২৭৯৪, ইবনে মাজাহ ১৯২০, মিশকাত ৩১১৭)
আরো জানুনঃ-
(০৩)
গোসল করলে আলাদা করে অজু করার দরকার নেই।
গোসলের দ্বারাই অযু হয়ে যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا شَرِيكٌ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَتَوَضَّأُ بَعْدَ الْغُسْلِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا قَوْلُ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ أَنْ لاَ يَتَوَضَّأَ بَعْدَ الْغُسْلِ .
'আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল করার পর ওযু করতেন না। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (৫৭৯)।
আবু ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একাধিক সাহাবা এবং তাবিঈদের এটাই মত যে, গোসলের পর ওযু করার দরকার নেই।
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَغْتَسِلُ وَيُصَلِّي الرَّكْعَتَيْنِ وَصَلَاةَ الْغَدَاةِ وَلَا أُرَاهُ يُحْدِثُ وُضُوءًا بَعْدَ الْغُسْلِ . - صحيح
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল করে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করার পর ফজরের সলাত আদায় করতেন। আমি তাঁকে গোসলের পর পুনরায় অযু করতে দেখিনি।
তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ গোসলের পর উযু করা, হাঃ ১০৭, ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ), নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ গোসলের পর উযু না করা, হাঃ ২৫২), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ গোসলের পর উযু করা, হাঃ ৫৭৯), আহমাদ (৬/৬৮, ১১৯, ১৫৪, ১৯২, ২৫৩, ২৫৮) সকলেই আবূ ইসহাক সূত্রে।
আরো জানুনঃ