ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
মিশকাত অর্থ বাতিসমূহের চেরাগদানি
(২)
এই বইটি সাধারণ শিক্ষিতদের জন্য পাঠ উপযোগী নয়, বরং ব্যাখ্যা সহকারে পড়াই উত্তম।
(৩)
মিশকাতুল মাসাবীহ সংকলকের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
মিশকাতুল মাসাবীহর সংকলকের নাম 'মুহাম্মাদ'। কেউ কেউ মাহমূদ বলেছেন। লকব ‘অলীউদ্দিন', পিতার নাম আবদুল্লাহ, বংশগত উপাধি ‘উমারী' ও "খতীব তাবরিজী" হিসাবে খ্যাত। একত্রে নামটি হলো 'আল্লামা অলীউদ্দিন আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ আল-খতীব আল-উমারী আত-তাবরিজী (র) ।
তাঁর সময়ে তিনি অত্যন্ত বড় মানের আলেম, উন্নত মানের মুহাদ্দিস, মাযহাব ও বালাগাতের ইমাম, জুহদ ও তাকওয়ার মূর্ত প্রতীক, উন্নত চরিত্র, রুচিশীল ও মর্যাদাশীল মানুষ ছিলেন। তাঁর সময়ের সবচেয়ে বড় বড় শায়খ, ওস্তাদ ও
মুহাদ্দিসদের কাছে দীনের তালিম নিয়েছেন। আবার তৎকালীন অনেক মেধাবী ছাত্রও তাঁর কাছে দীনের তালীম গ্রহণ করেছেন। তৎকালীন বিখ্যাত আলেম মুবারক শাহ সাদী তাদের অন্যতম ।
"মিশকাতুল মাসাবীহ' হাদীসের সংকলনটি, যা মিশকাত শরীফ নামে খ্যাত, তাঁর শ্রেষ্ঠ অবদান। এটি মুসলিম বিশ্বে সর্বজন স্বীকৃত ও নির্ভরযোগ্য হাদীসের কিতাব। মিশকাত শরীফের নির্ভরযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণই হলো এর অসংখ্য অনুবাদ ও শরাহ বা ব্যাখ্যার কিতাব এবং পাদটীকা। মিশকাত শরীফের প্রথম ব্যাখ্যার কিতাব হলো আল্লামা হাসান ইবনে মুহাম্মাদ আত্-তাইয়্যেবা (র)-এর 'আল-কাশেফু আন হাকায়েকিস সুনান'। দ্বিতীয় হলো হযরত আবুল হাসান ইবনে মুহাম্মাদ আলীমুদ্দীন বুখারী (র)-এর "শারহে মিশকাত”। তৃতীয় হলো শেখ আবদুল আজীজ আবহারী (র)-র “মিনহাজুল মিশকাত”। চতুর্থ হলো হযরত নূরুদ্দীন আলী ইবনে সুলতান মুহাম্মাদ আরুবী, মোল্লা আলী কারী বলে খ্যাত-এর “মিরকাত শরহে মিশকাত”। পঞ্চম, শেখ শিহাবুদ্দীন আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে যুহাশেমীর (র) "শরহে মিশকাত”। ষষ্ঠ, সাইয়্যেদ শরীফ আলা ইবনে যারহানীর (র) "হাশিয়ায়ে মিশকাত"। সপ্তম, শেখ মুহাম্মাদ সাঈদ ইবনে আল-মুজাদ্দিদ আলফে সানীর (র) “হাশিয়ায়ে মিশকাত"। অষ্টম, আবুল ফজল আহমাদ ইবনে আলী ওরফে ইবনে হাজার আসকালানী (র)-এর “হিদায়াতুর রুআত ইলা তাবারিজীল মাসাবীহ”। নবম, শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দিসে দেহলবীর (র) “তানকীহ” (আরবী) ও দশম, তাঁরই “আশিআতুল লুমআত (ফার্সী)। একাদশ, মাওলানা ইদরিস কান্দেহলবীর (র) "আত-তালীকুস সাবীহ”। দ্বাদশ, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ রাহমানা মুবারকপুরীর "মিরাআতুল মাফাতিহ”। ত্রয়োদশ, শায়খ আবদুন নবী ইমাদুদ্দীন মুহাম্মাদ শাতিবীর (র) "আযিকাতুন নুযাত শারহে মিশকাত"। চতুর্দশ, সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আবুল মাজদ মাহবুবে আলম আহমাদাবাদীর "জিনাতুন নুকাত ফী শারহিল মিশকাত"। পঞ্চদশ, আল্লামা নবাব কুতবুদ্দীন খান দেহলবীর মাজাহেরে হক। ষোড়শ, হযরত মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (র)-র তরজমা মিশকাত শরীফ প্রথম খণ্ড।
মিশকাতুল মাসাবীহের সংকলক খতীব তাবরিজীর মৃত্যুর সন-তারিখ জানা যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে, তিনি ৭৩৭ হিজরী সনের পরে মৃতুবরণ করেন । কেননা তিনি ৭৩৭ হিজরী সনের রমযান মাসের জুমাবারে এই কিতাব সংকলনের কাজ শেষ করেন। কাজেই এর পরই তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকবে। কেউ কেউ বলেন, আল্লামা তাবরিজী ৭৪০ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন।