আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
327 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (28 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম হুজুর 

১. স্বামী স্ত্রী সহবাসের সময়ে কোনো শব্দ বা সেক্সুয়াল কথা বার্তা শ্বশুর বা অন্য কেউ শুনলে সমস্যা হয়?
হুজুর প্রশ্নটির জবাবে আপনি বলেছেন যে, ❝বৈবাহিক সম্পর্কে সমস্যা হবে।
সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন এর পরেও অনিচ্ছায় এসব কথা শ্বশুর বা অন্য কেউ শুনলে স্বামী স্ত্রীর গুনাহ হবেনা।
তবে সতর্কতা অবলম্বন না করলে বা ইচ্ছাকৃতভাবে শোনালে স্বামী স্ত্রীর গুনাহ হবে।
যে শুনবে, সে ইচ্ছাকৃতভাবে শুনলে বা অনিচ্ছায় কানে আসলেও তৎক্ষনাৎ সেই স্থান ত্যাগ না করে তাহা শুনে,তাহলে তারও গুনাহ হবে।❞

আমার প্রশ্ন হলোঃ কি ধরনের সমস্যা হবে? যেহেতু আপনি বলেছেন, "বৈবাহিক সম্পর্কে সমস্যা হবে।" সম্পর্ক বৈধ থাকবে? তালাক হয়ে যাবে? উল্লেখ্য যে, শোনানোর উদ্দেশ্য ছিল না

২. তালাক জাতীয় কোনো বাক্য লিখে গুগলে সার্চ দেওয়ার সময় বা খাতায় লেখার সময় তালাকের নিয়ত হলে তালাক হবে?
যেমনঃ গুগলে সার্চ দেওয়া হলো বা খাতায় লেখা হলোঃ তালাক এর শর্ত,
তালাক দেওয়ার নিয়ম,
এতে কি তালাক হবে?
এসব বাক্য লিখতে গিয়ে বাক্যে উল্লিখিত আন্ডার লাইন করা তালাক শব্দটি লেখার সময় তালাকের নিয়ত করলে তালাক হবে?

৩. ২ নং তালাকের ওয়াসওয়াগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে হলে তালাক পতিত হবে?

৪. হুজুর প্রশ্নটির উত্তরে আপনি বলেছেন যে, সমস্যা হবে না। তারপরেও আমি কিছু বিষয় তুলে ধরে প্রশ্নটি আবার করছি, যেহেতু আমি একজন ওয়াসওয়াসার রোগী।

আমার একটি  ইউটিউব চ্যানেল আছে। আমি চ্যানেলটিতে হালাল ভিডিও আপলোড করে থাকি এবং মনিটাইজেশনের এ্যাড শো করাই না।
আমি আগে আমার চ্যানেলটিতে কিছু কাজ করেছি। যেমনঃ
***. ধরুন, প্রথম আলোর ওয়েব সাইট থেকে একটা নিউজ কালেক্ট করে হুবহু সেই লেখাগুলো মুখে পড়ে একটা অডিও তৈরি করলাম। তারপর সেই অডিওগুলোতে হালাল ভিডিও যুক্ত করে একটা ভিডিও বানিয়ে আমার চ্যানেলে আপলোড করলাম।
আমি প্রথম আলোকে ক্রেডিট দিয়েছিলাম কিনা জানি না।

আমি এক আলেম ভাইয়ের থেকে শুনেছিলাম যে, কাজটি করা ঠিক হচ্ছে না৷ কারণ প্রথম আলো তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে যে, কেউ তাদের লেখা কপি করতে পারবে না৷ যাই হোক আমি নাজায়েজ মনে করা বা সন্দেহ থাকা সত্ত্বেও এভাবে কয়েকটি ভিডিও আপলোড করেছি। হয়ত মনে করেছিলাম সমস্যা হবে না বা আল্লাহ মাফ করবেন।

***. আর কয়েকটি হালাল ভিডিও ইউটিউব থেকে নিয়েছি। মানে অন্যের কনটেন্ট কপি করেছি আর কি। সেসবের পারমিশন ছিল না।

*** এছাড়াও আমি কিছু সাবস্ক্রাইবার কিনেছিলাম।

আমি মনে করছি যে, উপরের ৩টি পদ্ধতিতে আমি ১০০-২০০ সাবস্ক্রাইবার অর্জন করেছি। আমার চ্যানলের সাবস্ক্রাইবারগুলো কি অবৈধ? বর্তমানে আমার চ্যানেলে ৩৫০০ এর মতো সাবসক্রাইবার আছে। আমি কি চ্যানেলটি থেকে ইনকাম করতে পারব? নাকি চ্যানেলটি বন্ধ করে দিব?

আমি যেভাবে ইনকাম করতে চাচ্ছিঃ
ধরেন কারো গরুর খামার আছে। সেই লোক গরু বিক্রি করে৷ আমি আমার চ্যানেলে তার গরুর খামারের ভিডিও করে আপলোড দিলাম, যাতে করে তার গরু মানুষ দেখে এবং বিক্রি হয়। বিনিময়ে আমি তার থেকে কিছু টাকা নিলাম।
এছাড়াও যদি মনিটাইজেশন কখনও জায়েজ করার মতো নিয়ম চালু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তখন কি এই চ্যানেল থেকে ইনকাম করতে পারব?

বিষয়টি হলো এমনঃ
যদি কখনো মনিটাইজেশন হালাল হয় - এমন নিয়ম চালু হলে, বিষয়টি এভাবে করলে হবে না? যেমনঃ

*****. বর্তমানে ইউটিউবের নিয়ম হলোঃ ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার আর ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম হলে মনিটাইজেশন অন করা যায়। আমি যদি ঐ ২০০ সাবসক্রাইবার ছাড়াই এবং ঐ ২০০ সাবস্ক্রাইবার আনুমানিক যতোটুকু ওয়াচ করেছে সেই সময়গুলোকে বাদ দিয়ে উক্ত কন্ডিশন ফিলাপ করি তাহলে আমার জন্য উক্ত ইনকাম হালাল হবে কিনা? (যদি মনিটাইজেশন কখনো হালাল হয়, তখনকার কথা বলছি)

*****. ওসব সাবস্ক্রাইবাররা তো চাইলে আনসাবস্ক্রাইবও করতে পারে।

*****. কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে আমি যদি ডিল করি তাহলে তারা তো শুধু আমার চ্যানেলের ২০০ সাবস্ক্রাইবার দেখবে না। যেমন ৫০,০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকলে তখন ২০০ সাবসক্রাইবারের মূল্য থাকে না বললে চলে।

*****. যদি ঐ ২০০ সাবস্ক্রাইবার আমার এখনকার ভিডিও দেখে তাহলে সমস্যা হবে?

*****. আমি তো ভিডিও আপলোড করেছিলাম শুধু কিন্তু তাদেরকে তো সাবস্ক্রাইব করতে বলি নি। যদিও আমার মনে ছিল যে, তারা সাবসক্রাইব করুক।

যাই হোক হুজুর, আমি ইচ্ছা করেই ওসব করেছি। বিষয়টি সম্পর্কে আপনি ঘেঁটে আমাকে জানান যে, আমি চ্যানেলটি চালিয়ে ইনকাম করতে পারব কিনা।

৫. তালাকের ফতোয়া বা যে কোনো ফতোয়া একাধিক মুফতির থেকে নিয়ে দলিল, সর্বাধিক মুফতির মতামত ইত্যাদিকে গুরুত্ব দিয়ে নিজে ফতোয়া বাছাই জায়েজ আছে? নাকি ১ জন যা ফতোয়া দিবে তাই গ্রহণ করতে হবে? আগে একাধিক আলেমের থেকে ফতোয়া নিয়ে বিবেচনা করে ফতোয়া গ্রহণ করেছি, করণীয়? প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দিয়েন হুজুর।

৬. কেউ যদি তার স্ত্রীকে তালাকের নিয়ত সহ বলে যে, তোমার হাতে থাকা মালাটি নিয়ে পাশের ঘরে যাও। এতে কি তালাক হবে? কথাটি বলার সময় স্বামীর মনে হয়েছিল যে, সমাজে বিয়ের সময় মালা বদল বা এই টাইপের কথা প্রচলিত আছে, তালাক হতে পারে। এসব মনে করা অবস্থায় বলে দিয়েছে। 

৭. স্ত্রী যদি তালাক চাইতে থাকে স্বামী যদি চুপ থাকে তাহলে তালাক হয়?
৮.  স্ত্রী যদি চলে যেতে চায় আর স্বামী যদি সে সময় চুপ থাকে, কিছুক্ষণ পরে স্বামী যদি নিয়ত ছাড়া চলে যাও বলে তাহলে তালাক হয়? (এমন হয়েছে কিনা সিওর না)

৯. স্ত্রী যদি চলে যেতে চায় আর স্বামী যদি চুপ থাকে, কিছু সময় পরে বা ১ দিন পরে বা ২ দিন পরে যদি স্বামী নিয়ত ছাড়া চলে যেতে বলে তাহলে তালাক হয়? (জানার জন্য)

১০. স্ত্রী যদি চলে যেতে চায় আর স্বামী যদি নিয়ত ছাড়া বলে আমি কি আটকাইছি বা চলে যাও, তাহলে তালাক হয়? (এমনটি হয় নি মনে হয়, আমি জানি সন্দেহ থাকলে তালাক হয় না, তবুও জানার জন্য বললাম)

 

১১. হজের নিয়তে রাখা গাছ বা গরু বিক্রির টাকা দিয়ে ব্যবসা করা যাবে? পরে যদি অন্য টাকা দিয়ে হজ করে 

 

(1)
আমার বড় আব্বা একজন কলেজের প্রভাষক ছিলেন। তিনি বিয়ে করেন নি। তাই রিটায়ার্ডের এবং মৃত্যুর পরে আমার বাবারা কয়েক লাখ করে টাকা ভাগে পায়। তবে তার রিটায়ার্ডের টাকাগুলো ব্যাংক থেকে  তোলার সময় ঘুষ দিয়ে তোলা হয়েছিল। আমার বাবারা ৪ ভাই এবং ১ বোন সে টাকাগুলো পেয়েছিল৷ যাই হোক। ভাইয়েরা ৫-৬ লাখ টাকার মত ভাগে পেয়েছিল।
আমার বাবা আমার বড় আব্বার টাকাগুলো ব্যাংকে সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখে। মানে যখন তখন রাখে আবার তোলে। আমার বাবা ২,৩ এমনকি ৫-৬ মাস পর পরও টাকা রাখে আর তোলে। ব্যাংকটি ইসলামিক নয়। সুদ দিয়েছিল কিনা বলতে পারি না।

আমার বাবা তার এক ভাইয়ের থেকে ১ লাখ টাকা হাওলাত নিয়ে আমাকে খামার করার জন্য দেয়। আমার বাবা তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আমার বড় আব্বার রিটায়ার্ডের টাকার থেকে  ৬০ হাজার টাকা আমার মামাকে হাওলাত দেয় (কারণ মামা জমি বন্ধকে নিয়েছিল, হাতে টাকা ছিল না) এবং পরে তা ফেরত নেয় এবং জমি বন্ধক রাখে ৬৫ হাজার টাকা এই মোট ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার ১ লাখ টাকা দিয়ে আমার খামারের জন্য হাওলাত নেওয়া টাকা শোধ করে এবং পরে আমাকে আরও ১০-১৫ হাজার বা এমন টাকা দিয়েছিল। তবে সেটা এই ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিল কিনা বলতে পারি না।
(জমি বন্ধকঃ আমার জমি আপনার কাছে রাখব। বিনিময়ে টাকা নিব। আপনি আমার জমি ভোগ করবেন। আমার টাকা হলে আপনাকে টাকা ফিরিয়ে দিয়ে জমি ফেরত নিব। মূলত যারা জমি বন্ধক রাখে তারা টাকা পাবার জন্য রাখে, আর যারা বন্ধক নেয় তারা আবাদ করার জন্য নেয়)
যাই হোক, আমি সে টাকা খামারের ঘর নির্মাণ, বেড়া দেওয়া এবং কিছু ছাগল কিনতে ব্যয় করি। পরবর্তীতে আমার ছাগলগুলো অসুস্থ হয়। কিছু মারা যায়, কিছু বিক্রি করি, ১ টি জবাই করি। উল্লেখ্য যে, আমি ছাগল কিনেছিলাম প্রায় ৬০ হাজার টাকার এবং পরে বিক্রি করি ২৪-২৬ হাজার টাকার মতো। আর আমার মায়ের কাছে তার প্রাইমারি স্কুলে করা চাকুরির বেতনের থেকে ৪০০০-৬০০০ টাকার মতো নেই। এই মোট ৩০ হাজারের কিছু বেশি টাকা। সেই টাকা দিয়ে গরু কিনি ১ টা ২৪ হাজার দিয়ে।
পরে সেই গরু বিক্রি করি ২৫ হাজার টাকায়। আর আমার কাছে ৩-৫ হাজার টাকার মত ছিল + আমার বাবার সেভিংসে রাখা টাকা থেকে কিছু টাকা নিয়ে ৪১-৪২ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনি।

(উল্লেখ্য যে, আমার বাবা তার সেভিংস অ্যাকাউন্টে আমার বড় আব্বার রিটায়ার্ডের টাকা ছাড়াও যখন তখন সবজি বিক্রির টাকা রাখেন এবং তোলেন। তিনি কিছু টাকা এখান থেকে এবং সম্ভবত কিছু টাকা তার ছাগল বেঁচে দিয়েছিলেন গরু কেনার জন্য)

পরে সেই গরু ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করি এবং ২৫ হাজার টাকার মত আমার মায়ের কাছে জমা রাখি। আর কিছু টাকা একটা হালাল কাজে লাগাই। সে কাজটাতেও ব্যার্থ হই এবং মালপাতি বিক্রি করে কিছু টাকা পাই নি এখনো, তবে পাব। সেই টাকা গ্রহণ করতে পারব?

বর্তমানেঃ

এই ২৫ হাজার টাকার আমি ১৬ হাজার টাকা আমি আমার মায়ের থেকে নিয়ে কনফেকশনারি দোকানের কাজে লাগাতেছি (কিছু খরচ হয়েছে এবং হচ্ছে)
আমার বাবা তার হজের নিয়তে রাখা গরু বিক্রির ২৮ কি ২৯ হাজার টাকা এবং হজের নিয়ত ছাড়া রাখা ছাগল বিক্রির টাকা থেকে আমাকে দোকানের জন্য দেয় ১১ হাজার এবং জামানত বাবদ দেয় ২১ হাজার টাকা।

তাছাড়াও তার হজের নিয়তে রাখা গাছ বিক্রি করে দোকানের জামানত বাবদ ৯৫০০ টাকা দেয়।

আমার বাবার সেভিংস অ্যাকাউন্টে ফসল বিক্রির ২০ হাজার টাকার মত ছিল। সেটা আমার মামাকে হাওলাত দেয়। পরে মামার থেকে ফেরত নিয়ে আমাকে দোকানের জন্য দেয় ৯ হাজার এবং জামানত বাবদ দেয় ৫ হাজার টাকা।

উল্লেখ্য যে, যার থেকে দোকানটি নেওয়া হয়েছে সে প্রচলিত পদ্ধতিতে জামানত নিয়েছে। তাকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা জামনাত দেওয়ার পর বলেছিলাম- জামানতের টাকাগুলো যেন ভাড়ার অগ্রিম হিসেবে নেওয়া হয়, সে রাজি হয় নি।
আমি শুনেছিলাম যে,  এভাবে নিলে নাকি বিষয়টি হালাল হয়। তবে প্রথম দিকে তাকে বিষয়টি বলি নি। বলব বলব করতে করতে বলা হয় নি।

আমার প্রশ্ন হলোঃ
১. আমি কি আমার মায়ের থেকে ২৫ হাজারের বাকি ৯ হাজার নিতে পারব?
২. উপরের বিবরণ অনুযায়ী আমার কোথায় কোথায় ভুল হয়েছে? কি করণীয় এখন?
৩. বিবরণগুলো ১০০% সত্য নয়, তবে ৯৫-৯৯% সত্য ইনশাআল্লাহ। কারণ, সব মনে নেই; অনুমান করেও বলা আছে।
৪. হারাম টাকায় হালাল ব্যবসা করলে সারা জীবনের ইনকামই হারাম হবে নাকি শুধু ইনভেস্টের টাকাটি হারাম? পরে শুধুমাত্র ইনভেস্টের টাকাটি দান করে দিলে বৈধ হবে না?
৫. হজের নিয়তে রাখা কোনো কিছু ব্যবসা বা অন্য হালাল কাজে ব্যয় করা যায়?
৬. আমার জামানতের টাকা দেওয়া ছাড়া উপায় নাই। এভাবে ব্যবসা করলে হারাম হবে? পরে এই জামানতের টাকা কোনো হালাল কাজে লাগানো যাবে?
৭. জামানতের টাকা হারাম হলে ব্যবসা হালাল টাকা দিয়ে করলে ব্যবসার ইনকাম হারাম হবে?
 

(2) 
কেউ তালাকের পরেও তার স্ত্রীর সাথে সংসার করলে তার নামাজ দোয়াসহ সব ইবাদত কবুল হবে কি? তার শ্বশুর বাড়ি থেকে কিছু নেওয়া জায়েজ হবে কি?
( কারণ, স্বামীর সাথে সংসার না থাকলে তো তারা কিছু পাঠাতো না। মানে তারা আলাদা হলে তো শ্বশুর বাড়ি থেকে সাহায্য পেত না।) বিস্তারিত জানতে চাই।

(3)
হুজুর আমাকে বলেছিলেন যে, কেউ যদি সারা জীবন যেনা করতে থাকে এবং হারাম ইনকাম করতে থাকে; এরপরেও যদি সে ইবাদত করে, তার দোয়া, নামাজ সহ সকল ইবাদত কবুল হবে।
আমি শুনেছিলাম যে, হারাম খেলে দোয়া কবুল হয় না। আসলে বিষয়টি সম্পর্কে ভালোমত জানতে চাই।

(4) সমাজের সবাই হালাল হারাম, বৈধ অবৈধ অতোটা না ভেবে ভালোমত জীবন যাপন করছে। আর আমি এসব নিয়ে চিন্তা করতে করতে হতাশার জীবন যাপন করছি। আমি কি ভালো করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করছি? আমার কি সমাজের সবার মত জীবন যাপন করা উচিত?

5. আমি একজন তালাকের ওয়াসওয়াসাররোগী। আমার  স্ত্রী আমাকে বলল যে, "তোমার যখন টাকা হবে তখন আমরা (কিছু জিনিস) কিনব, তাই না?"
আমি বললাম, "আল্লাহ ভালো জানেন"

তবে কথাটি বলার আগে চিন্তা করেছি যে, একসাথে থাকা হয় কি না হয় (যদিও আলাদা হতে চাই না) তারপর বলেছি, "আল্লাহ ভালো জানেন"।
A. এ অবস্থায় তালাক হবে?
B. সাথে যদি তালাকের নিয়তও থাকত তবে কি তালাক হত?

6. তালাকের মজলিসে নিয়ত ছাড়া কেনায়া বাক্য বললেও নাকি তালাক হয়ে যায়৷ কিন্তু তালাকের ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত ব্যক্তি যদি নিয়ত সহ বা নিয়ত ছাড়া উক্ত মজলিসে কেনায়া বাক্য বলে তবে তালাক হবে?

 

7. আমার শ্বশুরের হালাল ইনকাম আছে কিনা জানি না। তবে উনি কিছু হালাল ব্যবসা করেন। তবে সেসব ব্যবসার মূলধন হালাল ছিল কিনা জানি না। তার থেকে কিছু গ্রহণ করা জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১) 
এখানে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবেনা।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
তালাক খুবই মারাত্মক এক বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

তালাকের উদ্দেশ্য ছাড়া শুধু তালাক শব্দ উচ্চারণ করলে বা লিখলেও তালাক হয় না। কেননা, ফকিহগণ বলেছেন,

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)
সারমর্মঃ  
সকলের মতে তালাকের ইচ্ছা থাকতে হবে। আর তাহল, (তালাকের উদ্দেশ্যে) ইচ্ছাকৃতভাবে তালাক শব্দ উচ্চারণ করা। (আল ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু ৭/৩৬৮)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
তালাক জাতীয় কোনো বাক্য লিখে গুগলে সার্চ দেওয়ার সময় বা খাতায় লেখার সময় তালাকের নিয়ত না হলে তালাক হবেনা।

স্ত্রীকে তালাক প্রদানের উদ্দেশ্য নিয়ে তালাক বললে বা লিখলে তালাক হয়।

(০৩)
তালাকের ওয়াসওয়াগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে হলে তালাক পতিত হবেনা।

(০৪)
আপনি চ্যানেলটি চালিয়ে বৈধ ভাবে ইনকাম করতে পারবেন।

(০৫)
নিজ মাযহাবের একজন নির্ভরযোগ্য মুফতি সাহেব থেকে ফতোয়া নিয়ে সেটিই মানতে পারবেন।
একাধিক মুফতী সাহেব থেকে ফতোয়া নিলে সকল ফতোয়ার মাঝে বৈপরিত্ব পেলে যার ফতোয়াতে উক্ত ফতোয়ার পক্ষে দলিল আছে,সেটিই মানবেন।

এটি বাংলায় থাকলে আপনিই বুঝতে পারবেন।

আরবিতে হলে বা না বুঝলে কোনো আলেম থেকে বুঝে নিবেন।

(০৬)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা। 

(০৭)
স্ত্রী যদি তালাক চাইতে থাকে, স্বামী যদি চুপ থাকে তাহলে তালাক হয়না।

(০৮)
স্ত্রী যদি চলে যেতে চায় আর স্বামী যদি সে সময় চুপ থাকে, কিছুক্ষণ পরে স্বামী যদি নিয়ত ছাড়া চলে যাও বলে,তাহলে তালাক হবেনা।

(০৯)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা। 

(১০)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রেও তালাক হবেনা। 

(১১)
হজ্ব এর নিয়তে রাখা গাছ বা গরু বিক্রির টাকা দিয়ে ব্যবসা করা যাবে। 
পরে যদি অন্য টাকা দিয়ে হজ্ব করে, এতে কোনো সমস্যা নেই।

(1)

১.আপনার মায়ের থেকে ২৫ হাজারের বাকি ৯ হাজার নিতে পারবেন।
২. যতটুকু বুঝতে পেরেছি,তাতে উপরের বিবরণ অনুযায়ী আপনার ভুল হয়নি।

৩. জী,ঠিক আছে।
৪.  পরে শুধুমাত্র ইনভেস্টের টাকাটি হালাল টাকা হতে দান করে দিলে বৈধ হবে।
৫. হজের নিয়তে রাখা কোনো কিছু ব্যবসা বা অন্য হালাল কাজে ব্যয় করা যায়।
৬.  এভাবে ব্যবসা করলে হারাম হবেনা। হালাল হবে।  এই জামানতের টাকা কোনো হালাল কাজে লাগানো যাবে।

৭. জামানতের টাকা হারাম হবেনা। সুতরাং উক্ত ব্যবসার ইনকাম হারাম হবেনা।

(2) 
কেউ তালাকের পরেও তার স্ত্রীর সাথে সংসার করলে তার নামাজ দোয়াসহ সব ইবাদত কবুল হবে। 
তার শ্বশুর বাড়ি থেকে তারা সন্তুষ্টি চিত্তে কিছু দিলে তাহা নেওয়া জায়েজ হবে।

তবে তার যেনার গুনাহ হতে থাকবে।

 (3)
এক্ষেত্রে হারাম খেলে তার দোয়া ইবাদত কবুল হবেনা।

(4)
আপনি নিজ জীবন পূর্ণ ইসলাম মোতাবেক চলার চেষ্টা করবেন। 

(5)
A. এ অবস্থায় তালাক হবেনা।

B. সাথে যদি তালাকের নিয়তও থাকত তবুও তালাক হতোনা।

6. তালাকের মজলিসে নিয়ত ছাড়া কেনায়া বাক্য বললেও নাকি তালাক হয়ে যায়৷ কিন্তু তালাকের ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত ব্যক্তি যদি নিয়ত সহ বা নিয়ত ছাড়া উক্ত মজলিসে কেনায়া বাক্য বলে তবে তালাক হবেনা।

কেননা সে ওয়াসওয়াসার রুগী । 

7. আপনার শ্বশুরের হালাল ইনকাম আছে কিনা,সেটি জেনে নিবেন।

যদি তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল হয়,সেক্ষেত্রে তার থেকে কিছু গ্রহণ করা জায়েজ হবে।

আর যদি তার পুরো ইনকাম বা অধিকাংশ ইনকাম হারাম হয়,সেক্ষেত্রে কিছুই গ্রহন করবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (573,870 points)
উল্লেখিত প্রশ্নে টাইপিং মিস হয়েছিলো।
যেটি ইডিট করে ঠিক করে দেয়া হয়েছে।

by (28 points)
হুজুর আমার বাকি প্রশ্নগুলোর জবাব দিন দয়া করে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...