আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
205 views
in সালাত(Prayer) by (30 points)
আসসালামু আলাইকুম।

শুরুতেই আফওয়ান উস্তায,অনেক বড় হয়ে গিয়েছে লিখা।
১-আমি ইশার ফরজ সলাতে ছিলাম,২ রাকাত পড়ার পর বোনের মেয়ে আমার পিছনে একটু দুরুত্বে হিসু করে দেয়,সে তারপরে রুমে একটু হেটে আমার জায়নামাজে সিজদার জায়গায় হেটে চলে আসে তারপর ওর আম্মু ওকে নিয়ে যায়।আমি ভাবতেছি নামায কন্টিনিউ করবো নাকি ছেড়ে দিবো,জায়নামাজ মোটা ছিল তাই সিজদার জায়গায় উপর থেকে ভাঝ করে সিজাদা দিই & নামায শেষ করি।বোন ততক্ষণে পিছনে পানি দিয়ে মুছে দেয়।নামায শেষ করার পর বুঝতে পারি হিসু আমার পিছন দিক থেকে জায়নামাযে একটু এসেছে,বোন খুজেছে ধুয়ে দেওয়ার জন্য তাই বুঝলাম & আমি যখন দাঁড়ানো থেকে বসেছি আমার হিজাবেও সম্ভবত লেগেছে।
আমরা জানি কাপড় পবিত্র হওয়াও ফরজ এখন শেষ দুরাকাতে হতে পারে আমার কাপড় অপবিত্র হয়ে গিয়েছে আর আমি না জেনে নামায কন্টিনিউ করেছি।এখন কি আমি আবার তা পুরো সালাত পুরন করে দিবো?

২-কেও যদি সবসময় সুন্নাতে গয়রে মুয়াক্কাদাহ না পড়ে শুধু ফরজ,ওয়াজিব,সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ সলাত পড়ে তার কি গুনাহ হবে?
৩-কেও যদি মাগরিবের পরে ঘুমায় তার কি গুনাহ হবে যেহেতু নবিজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশার আগে ঘুমানো অপছন্দ করতেন?কারন দেখা যায় সে ভোরে উঠে & আর সারাদিন ঘুমাইনা সন্ধ্যায় ক্লান্ত হয়ে ঘুম আসে,ইশার সময় কিংবা একটু পরে জাগে।আর যদি সে তখন না ঘুমায় ইশার সলাত পড়তে ক্লান্ত লাগে, রাতের আমল গুলো তার করা হয়না,বিতিরও পড়তে পারেনা ঘুমের জন্য,ভাবে শেষ রাতে পড়বে & দেখা যায় অনেক সময় সে জাগতে পারেনা, জাগলেও আলসেমি করে,এইভাবে তার বিতির কাযা হয়ে যায়।মোট কথা সে একটা ঘুম না দিলে স্ট্রং থাকতে পারেনা।ইবাদাত,পড়াশোনা,খাওয়া দাওয়া আর রাতে ভাল করে হয়না।দুপুরেও তার ঘুম আসেনা,ঘুম আসবে সন্ধ্যায়।এখন সে নবিজির হাদিসটিও সামনে পাচ্ছে রিমাইন্ডার হিসেবে।সে এখন এই হাদিসের ভয়ে ঘুমাইনা,পরে তার আর কিচ্ছু ঠিক ভাবে হইনা।এখন এই যে নবিজি অপছন্দ করেন এই টাইমে ঘুমাতে সে কি করবে?নাসিহাহ প্লিজ উস্তায।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﺮَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﺤَﺎﺋِﻂٍ ﻣِﻦْ ﺣِﻴﻄَﺎﻥِ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ ﺃَﻭْ ﻣَﻜَّﺔَ ، ﻓَﺴَﻤِﻊَ ﺻَﻮْﺕَ ﺇِﻧْﺴَﺎﻧَﻴْﻦِ ﻳُﻌَﺬَّﺑَﺎﻥِ ﻓِﻲ ﻗُﺒُﻮﺭِﻫِﻤَﺎ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻳُﻌَﺬَّﺑَﺎﻥِ ، ﻭَﻣَﺎ ﻳُﻌَﺬَّﺑَﺎﻥِ ﻓِﻲ ﻛَﺒِﻴﺮٍ ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ﺑَﻠَﻰ ، ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻤَﺎ ﻻ ﻳَﺴْﺘَﺘِﺮُ ﻣِﻦْ ﺑَﻮْﻟِﻪِ ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻵﺧَﺮُ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺑِﺎﻟﻨَّﻤِﻴﻤَﺔِ ، ﺛُﻢَّ ﺩَﻋَﺎ ﺑِﺠَﺮِﻳﺪَﺓٍ ﻓَﻜَﺴَﺮَﻫَﺎ ﻛِﺴْﺮَﺗَﻴْﻦِ ، ﻓَﻮَﺿَﻊَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﻗَﺒْﺮٍ ﻣِﻨْﻬُﻤَﺎ ﻛِﺴْﺮَﺓً . ﻓَﻘِﻴﻞَ ﻟَﻪُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﻟِﻢَ ﻓَﻌَﻠْﺖَ ﻫَﺬَﺍ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻌَﻠَّﻪُ ﺃَﻥْ ﻳُﺨَﻔَّﻒَ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻴْﺒَﺴَﺎ ، ﺃَﻭْ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﻥْ ﻳَﻴْﺒَﺴَﺎ ) .ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻟﻤﺴﻠﻢ ( ﻻ ﻳَﺴْﺘَﻨْﺰِﻩُ ﻋَﻦْ ﺍﻟْﺒَﻮْﻝِ ﺃَﻭْ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺒَﻮْﻝِ ) ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻟﻠﻨﺴﺎﺋﻲ ( ﻻ ﻳَﺴْﺘَﺒْﺮِﺉُ ﻣِﻦْ ﺑَﻮْﻟِﻪِ )

তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা মাদ্বীনা বা মক্কার বাগানগুলোর মধ্য হতে কোন এক বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এমন দু’ ব্যক্তির আওয়ায শুনতে পেলেন যে, তাদেরকে কবরে আযাব দেয়া হচ্ছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এদের দু’জনকে আযাব দেয়া হচ্ছে, অথচ কোন গুরুতর অপরাধে তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তারপর তিনি বললেনঃ ‘হ্যাঁ, এদের একজন তার পেশাব করতে গিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করত না। অপর ব্যক্তি চোগলখোরী করত। অতঃপর তিনি একটি খেজুরের ডাল আনতে বললেন, এবং তা ভেঙ্গে দু’ টুকরা করে প্রত্যেকের কবরের উপর এক টুকরা করে রাখলেন। তাঁকে বলা হল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! কেন এমন করলেন?’ তিনি বললেনঃ আশা করা যেতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত এ দু’টি শুকিয়ে না যায় তাদের আযাব কিছুটা হালকা করা হবে।(সহীহ বুখারী-২১৬,সহীহ মুসলিম-২৯২,সুনানে নাসাঈ-২০৬৮)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/306

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন/ভাই!

১. প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে সতর্কতা মুলক উক্ত নামাজ  পুনরায় আদায় করে নেওয়াই শ্রেয়।

২. জ্বী না গুনাহ হবে না। কারণ, সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদাহ নামাজ পড়লে সাওয়াব না পড়লে কোন গুনাহ নেই। তবে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ ছেড়ে দিতে অভ্যস্থ হলে গুনাহ হবে।

৩. এশার নামাজের আগে ঘুমানো ইসলামের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয় কাজ। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এশার আগে ঘুমাতে নিষেধ করেছেন। আর তিনি এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা পছন্দ করতেন না। (বুখারি : ৫৯৯)।

হজরত আয়েশা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে কখনও এশার আগে ঘুমাতে ও এশার পর গল্পগুজব করতে দেখিনি। এশার পর হয়তো জিকিরে মশগুল থাকতেন, নয়তো ঘুমিয়ে পড়তেন। এর দ্বারা সব অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে মুক্ত থাকা যায়। তিনি আরও বলেন, তিন ধরনের মানুষের জন্য রাত জাগার অনুমতি রয়েছে, বিয়ের রাতে নবদম্পতি, মুসাফির ও নফল নামাজ আদায়কারী। (মুসনাদে আবি ইয়ালা : ৪৮৭৯)

সুতরাং আপনি যদি মাগরীবের পরে কিছু সময় এজন্য ঘুমান যে, যেন আপনি এশা ও বিতিরের সালাত বা তাহাজ্জুদের সালাত সঠিক ভাবে মনোযোগ দিয়ে আদায় করতে পারেন তাহলে ঐ সময় ঘুমালে কোন গুনাহ হবে না। তবে সর্বপরি উত্তম হলো এশার পরে দ্রুত ঘুমানো ও প্রয়োজনে দিনের বেলায় কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়া। তাছাড়া এতে অভ্যাসেরও কিছুটা প্রভাব পড়ে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...