জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
স্ত্রী তার স্বামীর আনুগত্য করবে যদি সে হারাম এবং সাধ্যের অতিরিক্ত কোন কাজের আদেশ না করে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «الْمَرْأَةُ إِذَا صَلَّتْ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا فَلْتَدْخُلْ مِنْ أَىِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ»
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করে, রমাযানের সিয়াম পালন করে, গুপ্তাঙ্গের হিফাযাত করে, স্বামীর একান্ত অনুগত হয়। তার জন্য জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশের সুযোগ থাকবে।
(মিশকাত ৩২৫৪.হিলইয়াতুল আওলিয়া ৬/৩০৮।)
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ عَجْلَانَ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ النِّسَاءِ خَيْرٌ قَالَ الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَمَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ
কুতায়বা (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন মহিলা উত্তম? তিনি বললেনঃ যে মহিলার প্রতি দৃষ্টিপাত স্বামীকে সন্তুষ্ট করে। সে আদেশ করলে তা সম্পন্ন করে, এবং তার বাড়ীর ও তার মালের ব্যাপারে যা অপছন্দ করে, সে তার বিরোধিতা করে।
(সুনানে নাসায়ী ৩২৩৪.মিশকাত ৩২৭২, সহীহাহ ১৮৩৮।)
আরো জানুনঃ
★যে সমস্ত বিষয় স্বামীর জন্য ফায়দাদায়ক এবং স্ত্রীর জন্য ক্ষতিকর নয়,সে সমস্ত বিষয়ে স্বামীর আদেশ অনুসরণ স্ত্রীর উপর ওয়াজিব।যদি স্বামীর জন্য ফায়দাদায়ক না হয় বা স্ত্রীর জন্য ক্ষতিকর হয়,সে সমস্ত বিষয়ে স্বামীর আদেশ নিষেধের অনুসরণ ওয়াজিব নয়।
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব। এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না। কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)
আরো জানুনঃ-
স্বামীর আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তার স্ত্রীর জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শরীয়তের খেলাফ স্বামীর কোনো আদেশ মান্য করা জরুরি নয়।
উপরোক্ত মূলনীতি গুলোর আলোকে প্রশ্নের জবাব সমূহঃ-
(০১)
এটি স্বামীর জন্য ফায়দাজনক হলে স্ত্রীর উপর এই আদেশ মানা আবশ্যক।
নতুবা স্ত্রীর গুনাহ হবে।
(০২)
এক্ষেত্রে স্ত্রী সায় না দিলে স্ত্রীর গুনাহ হবেনা।
তবে স্ত্রীর জন্য বাধা দেয়া উচিত নয়।
(০৩)
এটি স্বামীর জন্য ফায়দাজনক, তাই স্ত্রী না পড়লে গুনাহ হবে।
(০৪)
উপরোক্ত ছুরত গুলোতে স্ত্রী স্বামীর আদেশ না মানলে স্ত্রীর গুনাহ হবেনা।
(০৫)
ক্রয় করে এনে দিলে এগুলো না পড়লে স্ত্রীর গুনাহ হবে।
(০৬)
স্ত্রী না করলে গুনাহ হবে।
(০৭)
এক্ষেত্রে স্ত্রীর রাজি থাকা আবশ্যকীয় নয়।
স্ত্রী রাজী না থাকলে তাতে স্ত্রীর কোনো গুনাহ হবেনা।
নিতম্বে এভাবে পোশাকের উপর দিয়ে স্বামী মলদ্বারে যৌনাঙ্গ প্রবেশ করাতে পারবেনা।
এটিও নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত।
(০৮)
স্ত্রীর তা করতে দিতে হবে।
(০৯)
স্ত্রী সাধ্যমতো না করলে গুনাহ হবে।
পেট, স্তনে মেহেদি ডিজাইন করে দিতে চাইলে স্ত্রীর রাজি থাকা আবশ্যকীয় নয়।
(১০)
স্ত্রী যদি স্বামীর অগোচরে খোলে তা, তাহলে তার গুনাহ হবেনা।
স্বামীর সামনে আবার পরিধান করবে।
(১১)
স্ত্রী এতে বাধ সাধতে পারবেনা।
(১২)
হায়েজ,নেফাস অবস্থায় হলে স্ত্রী তার এই আদেশ মানতে বাধ্য।
নতুবা অন্য কোনো স্বাভাবিক সময়ে স্ত্রী এটি মানতে বাধ্য নয়।
(১৩)
স্ত্রীর এটি করতে হবে।
(১৪)
না,গুনাহ হবেনা।
তবে লোম অস্বাভাবিক হলে স্বামীর এই আদেশ না মানলে গুনাহ হবে।
(১৫)
স্ত্রী তাহা পড়তে পারে।
তবে তাহা আবশ্যকীয় নয়।