আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
570 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
ছোট বাচ্চারা অনেক সময়ই নানারকম জিনিস আবদার করে বসে।অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস(যেমনঃমোবাইল,টাকা) নিয়েও এরকম করে।এরকম ক্ষেত্রে তাদের কে মিথ্যা বুঝ দিয়া যাবে কিনা(যেমনঃতোমাকে কিনে দিবো,ঐটা আমাদের না অন্যদের)?তাদের হাতে গেলে তারা জিনিসগুলো নষ্ট করার প্রবল আশংকা আছে।অনেক সময়ই তারা বলে এইটা আছে কিনা,ঐটা আছে কিনা।তখন থাকা সত্ত্বেও জিনিসটা নষ্ট হওয়া থেকে বাচাতে তাদের কে মিথ্যা বলা যাবে যে ঐটা নাই?

1 Answer

0 votes
by (709,960 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আমরা অনেক সময় কৌতুকভরে বা ভুলানোর জন্য শিশুদের সাথে মিথ্যা বলি। 
অথচ এরূপ মিথ্যাও মিথ্যা এবং গোনহের কাজ। শুধু তাই নয়, এরূপ মিথ্যার মাধ্যমে আমরা শিশুদেরকে মিথ্যায় অভ্যস্ত করে তুলি এবং মিথ্যার প্রতি তাদের ঘৃণা ও আপত্তি নষ্ট করে দিই। কিশোর সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আমির বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ আমাদের বাড়িতে বসা ছিলেন, এমতাবস্থায় আমার মা আমাকে ডেকে বলেন, এস তোমাকে একটি জিনিস দিব। রাসূলুল্লাহ বলেন, তুমি তাকে কি দিতে চাও? তিনি বলেন: আমি তাকে একটি খেজুর দিতে চাই। রাসূলুল্লাহ বলেন:
«أَمَا إِنَّكِ لَوْ لَمْ تُعْطِهِ شَيْئًا كُتِبَتْ عَلَيْكِ كِذْبَةٌ»
‘‘তুমি যদি তাকে কিছু না দিতে তবে তোমার নামে একটি মিথ্যার গোনাহ লেখা হতো।’’
আবূ দাউদ, আস-সুনান ৪/২৯৮; হাদীস নং ৪৯৯১।

নির্দিষ্ট কিছু বিষয় ছাড়া সর্বদা এবং সর্বত্রই মিথ্যা বলা হারাম।
যেমনঃ-হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদ রাঃ থেকে বর্ণিত,
 ﻋَﻦْ ﺃَﺳْﻤَﺎﺀَ ﺑِﻨْﺖِ ﻳَﺰِﻳﺪَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ ﺍﻟْﻜَﺬِﺏُ ﺇِﻟَّﺎ ﻓِﻲ ﺛَﻠَﺎﺙٍ : ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗَﻪُ ﻟِﻴُﺮْﺿِﻴَﻬَﺎ ، ﻭَﺍﻟْﻜَﺬِﺏُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﺮْﺏِ ، ﻭَﺍﻟْﻜَﺬِﺏُ ﻟِﻴُﺼْﻠِﺢَ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ) 
তরজমাঃ
নবীজী সাঃ বলেনঃ
তিনস্থান ব্যতীত অন্য কোথাও মিথ্যা বলা জায়েয নয়,
১/স্ত্রীর সাথে ভালবাসার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে।
২/যুদ্ধের ময়দানে কাফিরের সাথে যুদ্ধ বিষয়ে।
৩/দু-ভাইয়ের মধ্যে সন্ধি স্থাপন করতে।
তিরমিযি-১৯৩৯,আবু-দাউদ-৪৯২১।

উম্মে কুলছুম রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন,
ﻋﻦ ﺃُﻡَّ ﻛُﻠْﺜُﻮﻡٍ ﺑِﻨْﺖِ ﻋُﻘْﺒَﺔَ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﻣُﻌَﻴْﻂٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ، ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺳَﻤِﻌَﺖْ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ( ﻟَﻴْﺲَ ﺍﻟْﻜَﺬَّﺍﺏُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺼْﻠِﺢُ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻭَﻳَﻨْﻤِﻲ ﺧَﻴْﺮًﺍ ) . ﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﺷِﻬَﺎﺏٍ : ﻭَﻟَﻢْ ﺃَﺳْﻤَﻊْ ﻳُﺮَﺧَّﺺُ ﻓِﻲ ﺷَﻲْﺀٍ ﻣِﻤَّﺎ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻛَﺬِﺏٌ ﺇِﻟَّﺎ ﻓِﻲ ﺛَﻠَﺎﺙٍ : ﺍﻟْﺤَﺮْﺏُ ، ﻭَﺍﻟْﺈِﺻْﻠَﺎﺡُ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ، ﻭَﺣَﺪِﻳﺚُ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗَﻪُ ﻭَﺣَﺪِﻳﺚُ ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓِ ﺯَﻭْﺟَﻬَﺎ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন-যে ব্যক্তি দু'জনের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের মীমাংসার স্বার্থে মিথ্যা বলে সে মিথ্যুক নয়।সে একজনের নিকট এসে উত্তম উত্তম জিনিষ বলে,এবং অন্যর নিকট গিয়ে উত্তম জিনিষ পৌছায়। ইবনে শিহাব যুহরী রাহ বলেন,মানুষের মিথ্যা কথা বলার ব্যাপারে তিন জিনিষে রুখসত রয়েছে,(১)যুদ্ধের সময়ে(২) দু'জনের মধ্যে মীমাংসা করতে,(৩) স্বামী-স্ত্রী পরস্পর ভালবাসা-মহব্বতকে বাড়ানোর ক্ষেত্রে।(সহীহ মুসলিম-২০৫৬)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সুতরাং প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী উপরোক্ত বিষয়ে শিশুদের সাথেও মিথ্যা বলা নাজায়েয।



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...