আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
336 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (25 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম,

স্ত্রীর লজ্জাস্থান চোষা ঠিক না। কিন্তু লজ্জাস্থানের আশেপাশের জায়গা না চোষার কোন বাধা আছে?

১. মূত্রের রাস্তায় মুখ না দিয়ে, যদি তার আশেপাশের জায়গা চুষলে সেটা কি লজ্জাস্থান চোষার সমান হবে?

২. একইভাবে মলের রাস্তায় মুখ না দিয়ে, যদি তার আশেপাশের জায়গা চুষলে সেটা কি লজ্জাস্থান চোষার সমান হবে?

এভাবে করলে কোন সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের দেহ থেকে সব উপায়ে সুখ নেয়ার অনুমতি ইসলামে আছে। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّىٰ شِئْتُمْ

তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য ক্ষেতস্বরূপ; অতএব তোমরা যেভাবেই ইচ্ছা তোমাদের ক্ষেতে গমণ কর।’ (সূরা বাকারা ২২৩)

অন্যত্র তিনি বলেন,

هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ

তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ।’ (সূরা বাকারা ১৮৭)

তবে এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা বাঞ্ছনীয়। যথাক্রমে-

১- যে উপায়ে সুখ নেয়া হারাম হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট দলিল আছে, তা পরিহার করতে হবে। যেমন, মলদ্বারে সহবাস এবং ঋতুবতী ও প্রসব পরবর্তী সময়ে নির্গত রক্তস্রাব অবস্থায় সহবাস।

২- স্বামী-স্ত্রী পরস্পর থেকে সুখ ভোগ করার সময় ইসলামী শিষ্টাচার ও নীতি-নৈতিকতার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।

এবার আসা যাক, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের লজ্জাস্থান মুখে দেয়া প্রসঙ্গে।  এ ক্ষেত্রে নিষিদ্ধতার ব্যাপারে কোরআন হাদিসে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না বিধায় বিষয়টিকে অকাট্য হারাম বলার সুযোগ নেই। তবে এর মাঝে ইসলামী শিষ্টাচার-বহির্ভূত কিছু দিক রয়েছে। যেমন,

১. লজ্জাস্থান থেকে নির্গত নাপাক (বীর্য, মযি ইত্যাদি) জিহ্বা, মুখ ইত্যাদিতে লাগবে। আর জরুরত ছাড়া নাপাক স্পর্শ করাকে ফকিহগণ বৈধ মনে করেন না।

২. মানুষের শরীরের সবচে’ সম্মানিত অঙ্গ হলো চেহারা। আর লজ্জাস্থান হলো নাপাকির জায়গা। সুতরাং সম্মানিত জায়গাকে নাপাকির জায়গায় স্পর্শ করানো অবশ্যই নিন্দনীয়।

৩. মুখ দ্বারা আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করা হয়, যিকির করা হয়। এই মুখে নাপাক লাগানো এবং নাপাকির স্থান চুমো দেয়া বা Suck করা বড় গর্হিত কাজ।

৪. মুখের অনেক জীবাণু লজ্জাস্থানে রোগ সংক্রামণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া লজ্জাস্থানের জীবাণু মুখে এবং মুখের ভায়া হয়ে ভেতরে রোগ সংক্রামণ করার আশংকা থাকে। দুর্ঘটনাবশত ধারালো দাঁতও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এসব কারণে ফকিহগণ এটাকে মাকরুহ বলেছেন। তবে সহবাসের পূর্বে নাপাক না লাগার শর্তে কিছু ফকিহ লজ্জাস্থানে চুমু দেয়ার (লেহন নয়) অবকাশ দিলেও এটাকে পরিহার করাকে উত্তম বলেছেন। যেমন, প্রসিদ্ধ হানাফি ফকিহ বুরহানুদ্দীন মাহমুদ ইবন তাজুদ্দীন রহ. বলেন,

إذا أدخل الرجل ذكره في فم امرأته يكره لأنه موضع قراءۃ القرآن فلا یلیق به إدخال الذکر به

যদি পুরুষ নিজের লজ্জাস্থান স্ত্রীর মুখে প্রবেশ করায় তাহলে তা মাকরুহ হবে। কেননা, মুখ কোরআন তেলাওয়াতের স্থান। সুতরাং এখানে লজ্জাস্থান প্রবেশ করানো অনুচিত।’ (আল্মুহীতুল বুরহানী ৮/১৩৪) আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যা (৯/৩২) এসেছে,

وصرح الحنابلة بجواز تقبیل الفرج قبل الجماع ، وکراہته بعدہ

হাম্বলি ফকিহগণ স্পষ্টভাবে বলেছেন, সহবাসের পূর্বে হলে স্ত্রীর লজ্জাস্থান চুমো দেয়া জায়েয এবং পরে মাকরুহ।’

দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তাঁরা উত্তরে লিখেছেন,

تقبیل أحد الزوجین فرج الآخر میں ان آداب کی رعایت ناممکن ہے، پھر زبان جس سے اللہ کا ذکر کیا جاتا ہے اس سے شرمگاہ کو بوسہ لینا وغیرہ کسی بھی طرح مناسب معلوم نہیں ہوتا، نیز یہ جانوروں کا طریقہ ہے؛ اس لیے بہرصورت ایک مسلمان کو اس سے پرہیز کرنا چاہیے، باقی اگر کسی نے غلبہ شہوت میں ایسی حرکت کرلی اور شرمگاہ پر نجاست نہیں لگی ہوئی تھی تو ناجائز یا حرام نہیں کہا جائے گا۔

স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের লজ্জাস্থানে চুমো দেয়ার মাঝে এসব (ইসলামী) শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ রাখা অসম্ভব। তাছাড়া যবান যা দ্বারা আল্লাহর জিকির করা হয় তা দ্বারা লজ্জাস্থানে চুমো ইত্যাদি দেয়া কোনোভাবেই সঙ্গত মনে হয় না। এটা পশুদের স্বভাবও বটে। তাই একজন মুসলমানের উচিত সর্বাবস্থায় এ থেকে বিরত থাকা। তবে কেউ যদি অত্যাধিক উত্তেজনার কারণে এ কাজ করে ফেলে এবং লজ্জাস্থানে নাপাকি না থাকে তাহলে নাজায়েয কিংবা হারাম বলা যাবে না।’ (http://www.darulifta-deoband.com/home/ur/HalalHaram/150188) (সংগৃহিত)

ওরাল সেক্স সংক্রান্ত বিস্তারিত বিধান জানুনঃ https://ifatwa.info/23945/

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. এসব কারণে ফকিহগণ এটাকে মাকরুহ বলেছেন। তবে সহবাসের পূর্বে নাপাক না লাগার শর্তে কিছু ফকিহ লজ্জাস্থানে চুমু দেয়ার (লেহন নয়) অবকাশ দিলেও এটাকে পরিহার করাকে উত্তম বলেছেন। কেননা, মুখ কোরআন তেলাওয়াতের স্থান। সুতরাং এখানে লজ্জাস্থান প্রবেশ করানো অনুচিত।’

সরাসরি লজ্জাস্থানে মুখ না দিয়ে আসে পাশে মুখ দেওয়া হারাম বা নাজায়েয নয়। তথাপি উত্তম হবে তা থেকে দূরে থাকা। কারণ, এমতাবস্থায় উত্তেজনার বশে লজ্জাস্থানে মুখ চলে যেতে পারে। বিধায় তা অনুত্তম।

২. অনুরুপ ভাবে সরাসরি মলের রাস্থায় মুখ না দিয়ে আসে পাশে মুখ দেওয়াও হারাম বা নাজায়েয নয়। তবে তাও অনুত্তম বলে বিবেচিত। কারণ, এমতাবস্থায় উত্তেজনার বশে মলদ্বারে মুখ চলে যেতে পারে। কিন্তু আপনি নিজের কন্ট্রোল রেখে এমনটি করতে চাইলে করতে পারেন। তবে সর্বপরি উত্তম হবে তা পরিহার করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (62,960 points)
উত্তর আপডেট করা হয়েছে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...