ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)কেউ যদি বিয়ের আগে এই কথা যদি মনে মনে ভাবে যে,
" বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে "। তাহলে বিয়ের পর তার স্ত্রীর তালাক হবে না।
(২)" বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে "। এই কথাটি বিয়ের আগে মুখে বললে, বিয়ের পর স্ত্রী তালাক হবে।
(৩)" বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে " এই কথাটি মনে মনে ভেবেছে, কিন্তু যে কথাটি ভেবেছে সে কথাটি ভাবার সময় খাবার খেতে ছিল, এজন্য তার মুখ নড়তে ছিল। কিন্তু তালাক দেয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না এবং কথাটি ভাবার সময় হয়তো হবু স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ভাবা হয়েছে। এর কারণে বিয়ের পর তালাক হবে না।
(৪)" আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না "। এই কথাটি মনে ভাবার সময় মুখে খাবার ছিল এবং মুখ নড়তে ছিল, এইজন্য মনে সন্দেহ হচ্ছে যে কথাটির শেষের " না " শব্দটি হয়তো ভাবিনি। অর্থাৎ সন্দেহ হচ্ছে যে আমি যখন কথাটি ভেবেছিলাম তখন হয়তো কথাটি এভাবে ভেবেছিলাম যে, " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে "। এর কারণে বিয়ের পর তালাক হবে না।
(৫) " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না "। এই কথা ভাবার সময় তালাক দেওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না, কাউকে উদ্দেশ্য করেও ভাবা হয় নি। কিন্তু মনে সন্দেহ হচ্ছে যে কথাটি ভাবার সময় হবু স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ভাবা হয়েছে। এবং " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না " এই কথাটির পরিবর্তে " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে " এই কথাটি হয়তো ভেবেছি। এবং মুখে তখন খাবার থাকার কারণে মুখ নড়তে ছিল। এর কারণে বিয়ের পর তালাক হবে না।
(৬)কখনই তালাক দেওয়ার ইচ্ছা নেই, কিন্তু মনে তালাক সংশ্লিষ্ট অনেক চিন্তা ভাবনা চলে আসে। সাধারণত মুখে বললে বিয়ের পর তালাক হয়ে যাবে এমন বাক্য কখনো উচ্চারণ করা হয়েছে কিনা মনে নেই। এর কারণে বিয়ের পর তালাক হবে না।
(৭)কেউ বিয়ের আগে এমন কোনো কথা বলেছে যার দ্বারা বিয়ের পর তালাক পতিত হয়ে যাবে, কিন্তু তিন তালাক হয়তো হবে না। এবং যে বিয়ে করেছে সেও জানে না যে, তালাক পতিত হয়েছে কিনা। যেহেতু তিন তালাক হয়নি হয়তো, এর জন্য নতুন করে বিয়ে না করেও সংসার করা যাবে।রাজআতের মাধ্যমে।
(৮) নামাজের পর মোনাজাতের সময় তালাকের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করার সময় মনের অজান্তে এমন কোনো কথা বলেছি যার দ্বারা বিয়ের পর তালাক পতিত হতে পারে বলে সন্দেহ হচ্ছে। কিন্তু তখন মোটেও তালাক দেয়ার নিয়ত ছিল না। বরং তালাকের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করতে ছিলাম। কিন্তু সন্দেহ হচ্ছে যে মুখ দিয়ে শব্দ করে এমন কোনো কথা বলেছি যারা দ্বারা বিয়ের পর তালাক হতে পারে। যদি এমন কোনো কথা তখন বলেও থাকি যার দ্বারা তালাক হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। এর কারণে বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক হবে না।
(৯) কোনো পুরুষ চাইলেও শুধু নিজের উপর তালাক নিতে পারে না বরং সে স্ত্রীকেই তালাক দিবে।
(১০) শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে ফেললে তালাক হওয়ার আগে ঐ শর্ত প্রত্যাহার করা যাবে না।
(১১)
আপনি যেহেতু ওয়াসওয়াসার রোগী,তাই আপনার কোনো তালাকই গ্রহণযোগ্য হবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835
(১২)
(1). বিয়ের আগে কোনো তালাক হয় না।
(2). বিয়ের পূর্বে শর্ত সাপেক্ষ তালাক হতে পারে।
এই দুই মতই বিশুদ্ধ। কেননা বিয়ের পূর্বে শুধুমাত্র শর্তযুক্ত তালাক হয়।শর্ত ব্যতিত তালাক হয়না।
(১৩) এই প্রশ্নগুলো করার কারণে বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবে না।
(১৪)উপরের প্রশ্ন গুলোতে উল্লেখ করা কোনো কথা শর্ত সাপেক্ষ তালাকের আওতায় পড়বে না, যার কারণে বিয়ের পর তালাক পতিত হতে পারে।