আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
379 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম,

আমি এখনো অবিবাহিত। কিন্তু তালাকের বিধিবিধান সম্পর্কে জানার পর থেকে ভীষণ চিন্তিত। নিচের প্রশ্ন গুলোর উত্তর একটু জানাবেন।

১. কেউ যদি বিয়ের আগে এই কথা যদি মনে ভাবে তাহলে কি বিয়ের পর তালাক হবে?
কথাটি হলোঃ
" বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে "।

২. " বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে "। এই কথাটি বিয়ের আগে মুখে বললে কি বিয়ের পর স্ত্রী তালাক হবে?

৩. " বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে " এই কথাটি মনে মনে ভেবেছে, কিন্তু যে কথাটি ভেবেছে সে কথাটি ভাবার সময় খাবার খেতে ছিল, এজন্য তার মুখ নড়তে ছিল। কিন্তু তালাক দেয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না এবং কথাটি ভাবার সময় হয়তো হবু স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ভাবা হয়েছে। এর কারণে কি বিয়ের পর তালাক হতে পারে?

৪. " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না "। এই কথাটি মনে ভাবার সময় মুখে খাবার ছিল এবং মুখ নড়তে ছিল, এইজন্য মনে সন্দেহ হচ্ছে যে কথাটির শেষের " না " শব্দটি হয়তো ভাবিনি। অর্থাৎ সন্দেহ হচ্ছে যে আমি যখন কথাটি ভেবেছিলাম তখন হয়তো কথাটি এভাবে ভেবেছিলাম যে, " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে "। এর কারণে কি বিয়ের পর তালাক হতে পারে?

৫. " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না "। এই কথা ভাবার সময় তালাক দেওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না, কাউকে উদ্দেশ্য করেও ভাবা হয় নি। কিন্তু মনে সন্দেহ হচ্ছে যে কথাটি ভাবার সময় হবু স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ভাবা হয়েছে। এবং " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না " এই কথাটির পরিবর্তে " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে " এই কথাটি হয়তো ভেবেছি। এবং মুখে তখন খাবার থাকার কারণে মুখ নড়তে ছিল। এর কারণে কি বিয়ের পর তালাক হতে পারে?

৬. কখনই তালাক দেওয়ার ইচ্ছা নেই, কিন্তু মনে তালাক সংশ্লিষ্ট অনেক চিন্তা ভাবনা চলে আসে। সাধারণত মুখে বললে বিয়ের পর তালাক হয়ে যাবে এমন বাক্য কখনো উচ্চারণ করা হয়েছে কিনা মনে নেই। এর কারণে কি বিয়ের পর তালাক হতে পারে?

৭. কেউ বিয়ের আগে এমন কোনো কথা বলেছে যার দ্বারা বিয়ের পর তালাক পতিত হয়ে যাবে, কিন্তু তিন তালাক হয়তো হবে না। এবং যে বিয়ে করেছে সেও জানে না যে তালাক পতিত হয়েছে কিনা। যেহেতু তিন তালাক হয়নি হয়তো, এর জন্য কি নতুন করে বিয়ে পড়িয়ে সংসার করতে হবে নাকি বিয়ে নতুন করে না পড়িয়েও সংসার করা যাবে?

৮. নামাজের পর মোনাজাতের সময় তালাকের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করার সময় মনের অজান্তে এমন কোনো কথা বলেছি যার দ্বারা বিয়ের পর তালাক পতিত হতে পারে বলে সন্দেহ হচ্ছে। কিন্তু তখন মোটেও তালাক দেয়ার নিয়ত ছিল না। বরং তালাকের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করতে ছিলাম। কিন্তু সন্দেহ হচ্ছে যে মুখ দিয়ে শব্দ করে এমন কোনো কথা বলেছি যারা দ্বারা বিয়ের পর তালাক হতে পারে। যদি এমন কোনো কথা তখন বলেও থাকি যার দ্বারা তালাক হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। এর কারণে কি বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক হতে পারে?

৯. কোনো পুরুষ চাইলে তো স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে। কিন্তু কোনো পুরুষ কি চাইলে শুধু নিজের উপর তালাক নিতে পারে?

১০. শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে ফেললে কি তালাক হওয়ার আগে ঐ শর্ত প্রত্যাহার করা যায়?

১১. আমি ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচতে বেশ অনেক বার একটা কথা এমনিতেও বলেছি এবং নামাজের পর মোনাজাতেও বলেছি যে,
" আমি যদি কখনো এমন কোনো কথা বলে থাকি যার দ্বারা বিয়ের পর তালাক পতিত হতে পারে বা তালাক হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। সেসকল কথা আমি প্রত্যাহার করে নিলাম। আল্লাহ তুমি এই প্রত্যাহার করা কবুল করে নিও "।
এই কথা বলার সময় ভুলে তালাক দিয়ে দেওয়ার কোনো কথা বলেছি কি না মনে নাই। শুধু সন্দেহ হচ্ছে এসব কথাকে ঘিরে। যদি ভুলে অন্য কোনো কথা মুখ দিয়ে বলে থাকি যার দ্বারা তালাক হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাহলে কি ভুল করে বলে ফেলা কথার জন্য বিয়ের পর তালাক হতে পারে?
এবং আমি যে তালাক প্রত্যাহার করার কথা বলেছি এর জন্য কি বিয়ের পর তালাক পতিত হতে পারে?

১২. বিয়ের পূর্বে তালাক দেওয়া সম্পর্কে আমি যতটুকু জানতে পেরেছি তাতে দুই ধরনের মত আমি দেখেছি, মত দুইটি হলোঃ
            (1). বিয়ের আগে কোনো তালাক হয় না।
            (2). বিয়ের পূর্বে শর্ত সাপেক্ষ তালাক হতে পারে।
এই দুই মতের মধ্যে কোনটি বেশি শক্তিশালী মত?
আর যারা (2) নং মতের অনুসারী তারা কি (1) নং মত গ্রহণ করতে পারবে? বা (2) নং মতের অনুসারীরা (1) নং মত গ্রহণ করলে কি তাদের অন্যান্য আমল আল্লাহর কাছে কবুল হবে?

১৩. আমি যেহেতু উপরের প্রশ্ন গুলো টাইপ করে লিখেছি সেহেতু আমার বিয়ের পর এ সকল প্রশ্ন যদি আমার স্ত্রী দেখে বা পড়ে এর কারণে কি বিয়ের পর তালাক হতে পারে?
এবং আমি এই প্রশ্নগুলো করার কারণে এবং আমার মুখ দিয়ে প্রশ্নগুলো উচ্চারণ করার কারণে কি বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবে?

১৪. উপরের প্রশ্ন গুলোতে উল্লেখ করা কোনো কথা কি শর্ত সাপেক্ষ তালাকের আওতায় পড়বে? যার কারণে বিয়ের পর তালাক পতিত হতে পারে।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)কেউ যদি বিয়ের আগে এই কথা যদি মনে মনে  ভাবে যে,
" বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে "। তাহলে বিয়ের পর তার স্ত্রীর তালাক হবে না।

(২)" বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে "। এই কথাটি বিয়ের আগে মুখে বললে, বিয়ের পর স্ত্রী তালাক হবে।

(৩)" বিয়ের পর আমার স্ত্রী তালাক হবে " এই কথাটি মনে মনে ভেবেছে, কিন্তু যে কথাটি ভেবেছে সে কথাটি ভাবার সময় খাবার খেতে ছিল, এজন্য তার মুখ নড়তে ছিল। কিন্তু তালাক দেয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না এবং কথাটি ভাবার সময় হয়তো হবু স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ভাবা হয়েছে। এর কারণে  বিয়ের পর তালাক হবে না।

(৪)" আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না "। এই কথাটি মনে ভাবার সময় মুখে খাবার ছিল এবং মুখ নড়তে ছিল, এইজন্য মনে সন্দেহ হচ্ছে যে কথাটির শেষের " না " শব্দটি হয়তো ভাবিনি। অর্থাৎ সন্দেহ হচ্ছে যে আমি যখন কথাটি ভেবেছিলাম তখন হয়তো কথাটি এভাবে ভেবেছিলাম যে, " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে "। এর কারণে বিয়ের পর তালাক হবে না।

(৫) " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না "। এই কথা ভাবার সময় তালাক দেওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না, কাউকে উদ্দেশ্য করেও ভাবা হয় নি। কিন্তু মনে সন্দেহ হচ্ছে যে কথাটি ভাবার সময় হবু স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ভাবা হয়েছে। এবং " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে না " এই কথাটির পরিবর্তে " আমি সিওর আমার বিয়ের পর তালাক হবে " এই কথাটি হয়তো ভেবেছি। এবং মুখে তখন খাবার থাকার কারণে মুখ নড়তে ছিল। এর কারণে বিয়ের পর তালাক হবে না।

(৬)কখনই তালাক দেওয়ার ইচ্ছা নেই, কিন্তু মনে তালাক সংশ্লিষ্ট অনেক চিন্তা ভাবনা চলে আসে। সাধারণত মুখে বললে বিয়ের পর তালাক হয়ে যাবে এমন বাক্য কখনো উচ্চারণ করা হয়েছে কিনা মনে নেই। এর কারণে বিয়ের পর তালাক হবে না।

(৭)কেউ বিয়ের আগে এমন কোনো কথা বলেছে যার দ্বারা বিয়ের পর তালাক পতিত হয়ে যাবে, কিন্তু তিন তালাক হয়তো হবে না। এবং যে বিয়ে করেছে সেও জানে না যে, তালাক পতিত হয়েছে কিনা। যেহেতু তিন তালাক হয়নি হয়তো, এর জন্য  নতুন করে বিয়ে না করেও সংসার করা যাবে।রাজআতের মাধ্যমে।

(৮) নামাজের পর মোনাজাতের সময় তালাকের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করার সময় মনের অজান্তে এমন কোনো কথা বলেছি যার দ্বারা বিয়ের পর তালাক পতিত হতে পারে বলে সন্দেহ হচ্ছে। কিন্তু তখন মোটেও তালাক দেয়ার নিয়ত ছিল না। বরং তালাকের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করতে ছিলাম। কিন্তু সন্দেহ হচ্ছে যে মুখ দিয়ে শব্দ করে এমন কোনো কথা বলেছি যারা দ্বারা বিয়ের পর তালাক হতে পারে। যদি এমন কোনো কথা তখন বলেও থাকি যার দ্বারা তালাক হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। এর কারণে বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক হবে না।

(৯) কোনো পুরুষ চাইলেও শুধু নিজের উপর তালাক নিতে পারে না বরং সে স্ত্রীকেই তালাক দিবে।

(১০) শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে ফেললে তালাক হওয়ার আগে ঐ শর্ত প্রত্যাহার করা যাবে না।

(১১)
আপনি যেহেতু ওয়াসওয়াসার রোগী,তাই আপনার কোনো তালাকই গ্রহণযোগ্য হবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

(১২)
 (1). বিয়ের আগে কোনো তালাক হয় না।
 (2). বিয়ের পূর্বে শর্ত সাপেক্ষ তালাক হতে পারে।
এই দুই মতই বিশুদ্ধ। কেননা বিয়ের পূর্বে শুধুমাত্র শর্তযুক্ত তালাক হয়।শর্ত ব্যতিত তালাক হয়না।

(১৩)  এই প্রশ্নগুলো করার কারণে  বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবে না।

(১৪)উপরের প্রশ্ন গুলোতে উল্লেখ করা কোনো কথা  শর্ত সাপেক্ষ তালাকের আওতায় পড়বে না, যার কারণে বিয়ের পর তালাক পতিত হতে পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by (26 points)
১৪ নং উত্তরের শেষে কি "না" শব্দ হবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...