আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
389 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (-1 points)
আমি জানি, ইসলামে মূর্তি ও ভাস্কর্য উভয়ইটাই হারাম।

কিন্তু, শহীদ মিনার এবং স্মৃতিসৌধ কী মূর্তির হুকুমে পড়বে নাকি ভাস্কর্যের হুকুমে পড়বে?

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইসলামে মুর্তি ও ভাস্কর্য পরিস্কার হারাম।এতে কোনো প্রকার ব্যাখা বিশ্লেষণ নাই।বরং কুরআন হাদীসের স্পষ্ট নস দ্বারা হারাম।জানুন-২২৫৩

তবে শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধ মুর্তির হুকুমে পড়বে না।

প্রশ্ন হল, তাহলে এগুলো কি তৈরী করা যাবে?
জবাবে বলা যায়,

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَكَذَٰلِكَ أَعْثَرْنَا عَلَيْهِمْ لِيَعْلَمُوا أَنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَأَنَّ السَّاعَةَ لَا رَيْبَ فِيهَا إِذْ يَتَنَازَعُونَ بَيْنَهُمْ أَمْرَهُمْ ۖ فَقَالُوا ابْنُوا عَلَيْهِم بُنْيَانًا ۖ رَّبُّهُمْ أَعْلَمُ بِهِمْ ۚ قَالَ الَّذِينَ غَلَبُوا عَلَىٰ أَمْرِهِمْ لَنَتَّخِذَنَّ عَلَيْهِم مَّسْجِدًا
ভাবার্থঃ-
এমনিভাবে আমি তাদের খবর প্রকাশ করে দিলাম, যাতে তারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং কেয়ামতে কোন সন্দেহ নেই। যখন তারা নিজেদের কর্তব্য বিষয়ে পরস্পর বিতর্ক করছিল, তখন তারা বললঃ তাদের উপর সৌধ নির্মাণ কর। তাদের পালনকর্তা তাদের বিষয়ে ভাল জানেন। তাদের কর্তব্য বিষয়ে যাদের মত প্রবল হল, তারা বললঃ আমরা অবশ্যই তাদের স্থানে মসজিদ নির্মান করব।
সূরা কাহফ-২১

উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরিনে কেরাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন,নিম্নে দু'একটি আলোচনা তুলে ধরছি,,, 

তাফসীরে কুরতুবীতে উক্ত আয়াতের ব্যখায় নিম্নোক্ত আলোচনা পেশ করা হয়-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻭﺭﻭﻱ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺃﻥ ﺍﻟﻠﻪ - ﺗﻌﺎﻟﻰ - ﺃﻋﻤﻰ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺣﻴﻨﺌﺬ ﺃﺛﺮﻫﻢ ﻭﺣﺠﺒﻬﻢ ﻋﻨﻬﻢ ، ﻓﺬﻟﻚ ﺩﻋﺎ ﺇﻟﻰ ﺑﻨﺎﺀ ﺍﻟﺒﻨﻴﺎﻥ ﻟﻴﻜﻮﻥ ﻣﻌﻠﻤﺎ ﻟﻬﻢ . ﻭﻗﻴﻞ : ﺇﻥ ﺍﻟﻤﻠﻚ ﺃﺭﺍﺩ ﺃﻥ ﻳﺪﻓﻨﻬﻢ ﻓﻲ ﺻﻨﺪﻭﻕ ﻣﻦ ﺫﻫﺐ ﻓﺄﺗﺎﻩ ﺁﺕ ﻣﻨﻬﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻨﺎﻡ ﻓﻘﺎﻝ : ﺃﺭﺩﺕ ﺃﻥ ﺗﺠﻌﻠﻨﺎ ﻓﻲ ﺻﻨﺪﻭﻕ ﻣﻦ ﺫﻫﺐ ﻓﻼ ﺗﻔﻌﻞ ; ﻓﺈﻧﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﺮﺍﺏ ﺧﻠﻘﻨﺎ ﻭﺇﻟﻴﻪ ﻧﻌﻮﺩ ، ﻓﺪﻋﻨﺎ 
মানুষের সামনে আসহাবে কাহফের চিন্থ মুছে যাবার পর কিছু মানুষ সেই স্থলে স্বৃথীচারণের জন্য একটি ঘর নির্মানের প্রস্তাব দিলো।
(কেউ কেউ বলেন)বাদশা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে,আসহাবে কাহফের অধিবাসীদেরকে স্বর্ণের তৈরী একটি সিন্দুকে ভরে দাফন করে দিবেন।তখনই তাদের মধ্যকার একজন স্বপ্নযোগে বাদশাকে বললেন,তুমি সিদ্ধান্ত নিয়েছ আমাদেরকে সিন্দুকে ভরে দাফন করার।তুমি এমন করবে না।আমরা মাঠির তৈরী এবং আবার সেথায় ফিরে যাবো।সুতরাং আমাদেরকে আমাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দাও।

তাফসিরে তাবারীতে 
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায়  নিম্নোক্ত রেওয়াত উল্লেখ করা হয়,
حدثنا ابن حميد، قال: ثنا سلمة، عن عبد العزيز بن أبي روّاد، عن عبد الله بن عبيد بن عمير، قال: عمَّى الله على الذين أعثرهم على أصحاب الكهف مكانهم، فلم يهتدوا، فقال المشركون: نبني عليهم بنيانا، فإنهم أبناء آبائنا، ونعبد الله فيها، وقال المسلمون: بل نحن أحق بهم، هم منا، نبني عليهم مسجدا نصلي فيه، ونعبد الله فيه.
ভাবার্থ-
আসহাবে কাহফের  সন্ধানলাভ কারীকে দলকে  আল্লাহ তা'আলা সেই স্থান ভূলিয়ে দিলেন।
যদ্দরুণ তারা সে স্থানের পরিচয় লাভে সক্ষম হয়নি।তখন মুশরিকরা বলল,আমরা তথা একটি প্রসাদ নির্মাণ করব,কেননা তারা আমাদেরই সন্তান।এবং আমরা সেই প্রসাদে বসে আল্লাহর ইবাদত করব।মুসলমানরা বলল,বরং আমরাই বেশী হকদ্বার,এরা তো আমাদের থেকেই এবং আমাদের মত মুসলমান।আমরা তথায় মসজিদ নির্মাণ করব।যেখানে আমরা নামায আদায় করব।এবং আল্লাহর ইবাদতে মাশগুল থাকব।
তাফসীরে তাবারী-১৭৬৪০

'তাফসীরে কুরতুবী' তে নিম্নোক্ত আলোচনা উল্লেখ করা হয়, 
ﺃﻋﻤﻰ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺣﻴﻨﺌﺬ ﺃﺛﺮﻫﻢ ﻭﺣﺠﺒﻬﻢ ﻋﻨﻬﻢ ، ﻓﺬﻟﻚ ﺩﻋﺎ ﺇﻟﻰ ﺑﻨﺎﺀ ﺍﻟﺒﻨﻴﺎﻥ ﻟﻴﻜﻮﻥ ﻣﻌﻠﻤﺎ ﻟﻬﻢ . ﻭﻗﻴﻞ : ﺇﻥ ﺍﻟﻤﻠﻚ ﺃﺭﺍﺩ ﺃﻥ ﻳﺪﻓﻨﻬﻢ ﻓﻲ ﺻﻨﺪﻭﻕ ﻣﻦ ﺫﻫﺐ ﻓﺄﺗﺎﻩ ﺁﺕ ﻣﻨﻬﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻨﺎﻡ ﻓﻘﺎﻝ : ﺃﺭﺩﺕ ﺃﻥ ﺗﺠﻌﻠﻨﺎ ﻓﻲ ﺻﻨﺪﻭﻕ ﻣﻦ ﺫﻫﺐ ﻓﻼ ﺗﻔﻌﻞ ; ﻓﺈﻧﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﺮﺍﺏ ﺧﻠﻘﻨﺎ ﻭﺇﻟﻴﻪ ﻧﻌﻮﺩ ، ﻓﺪﻋﻨﺎ 
আল্লাহ তা'আলা আসহাবে কাহফের চিন্থ কে মিটিয়ে দিলেন,এবং লোকচক্ষুর আড়াল করে দিলেন।এজন্যই তথায় প্রসাদ নির্মানের আলোচনা উঠেছিলো,যাতে করে আসহাবে কাহফের নিদর্শন হিসেবে শেষ পর্যন্ত প্রসাদটি অবশিষ্ট থাকে।
(কেউ কেউ বলেন)বাদশা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে,আসহাবে কাহফের অধিবাসীদেরকে স্বর্ণের তৈরী একটি সিন্দুকে ভরে দাফন করে দিবেন।তখনই তাদের মধ্যকার একজন স্বপ্নযোগে বাদশাকে বললেন,তুমি সিদ্ধান্ত নিয়েছ আমাদেরকে সিন্দুকে ভরে দাফন করার।তুমি এমন করবে না।আমরা মাঠির তৈরী এবং আবার সেথায় ফিরে যাবো।সুতরাং আমাদেরকে আমাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দাও।
{তাফসীরে কুরতুবী}


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
যুলুম নির্যাতন থেকে স্বাধীনতা অর্জন ভালো ও মহৎ কাজ।তাই তার স্বৃতিচারণের জন্য কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী মসজিদ নির্মানই উচিৎ।
কুরআনের ঘোষনা অনুযায়ী সৌধ নির্মান পরিত্যাজ্য। বিশেষকরে এমন জিনিষ নির্মাণ করা যাতে ভবিষ্যতে অনেকপ্রকার গর্হিতকাজ হবে সেটা মুসলিম জাতির জন্য অত্যান্ত লজ্জাজনক।আল্লাহ আমাদের সঠিক জ্ঞান দান করুক।আমীন।দেখুন-৫২৭


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...