আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমি এইচএসসি প্রথম বর্ষের স্টুডেন্ট।গত তিনমাস অনেক অসুস্থ ছিলাম কিন্তু বর্তমানে আমি একটু সুস্থ আছি আলহামদুলিল্লাহ্।আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে, একদমই পড়াশোনা করতে ইচ্ছে করে না যদিও আমি এসএসসি পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছিলাম এবং কলেজের টপ স্টুডেন্ট ছিলাম।

অসুস্থতার সময় ডাক্তার দেখিয়েছি,আমার আলসার ধরা পড়েছিল এবং গত তিন মাসে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অসুখের সম্মুখীন হয়েছি।এছাড়া আমি রাক্বী দেখিয়েছি, উনারা বলেছেন হাসাদ এবং বদনজরের সমস্যা আছে,কেউ পড়াশোনা নষ্টের যাদুও করতে পারে কিন্তু নিশ্চিত না।সেল্ফ রুকইয়াহ একদম করতে ইচ্ছে করে না।

ইদানীং আমি না পড়াশোনা করতে পারছি আর না কোন কাজে মনযোগ দিতে পারছি আগে সময়মতো নামাজ কুরআন পড়লেও এখন আর ইবাদতে কোন মন নেই।

আজকে আমি স্বপ্নে দেখি,একজন অনেক সুদর্শন বৃদ্ধ ব্যাক্তি যার সাথে আমি মরুভূমির মাঝ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। আমার পোশাক ছিলো কালো এবং সম্পূর্ণ পর্দাবৃত। বৃদ্ধ ব্যাক্তি সুন্নতী লেবাসে পাগড়ি পরিহিত ছিলেন।আমাদের মাঝখানে কথা হচ্ছিল কিন্তু প্রথম যে কথা হয়েছিল সেগুলো আমার মনে নেই।তারপর শেষের কয়েকটা কথা আমার মনে আছে সেগুলো ছিল,

বৃদ্ধ গম্ভীর স্বরে বললেন
"আমি তোমাকে যেখানে নিয়ে যাচ্ছি ওইটাই তোমার জীবনের গন্তব্য এবং তোমাকে সৃষ্টি করার আসল উদ্দেশ্য।যদি তুমি এই গন্তব্যের উদ্দেশ্য না হাঁটো তবে তুমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে আর জীবনের কোন গন্তব্যেই পৌঁছাতে পারবেনা।'

এর কিছুক্ষণ পর দেখলাম আমার সামনে একটা ছোট জলচকি এবং আমি সেখানে বুখারী শরীফ পড়ছিলাম এবং আমার পাশে কয়েকজন মেয়েও সেই কিতাব পড়ছে, ঘুম ভাঙার সাথে সাথে ফজরের আজান শুনতে পেলাম।
এখন আমার প্রশ্ন এই স্বপ্নের মাধ্যমে আমাকে কি বোঝানো হয়েছে, আমি এখন কি করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নটি অনেক ভালো,আলহামদুলিল্লাহ। এই স্বপ্নের জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন।
 
এখান্র আপনাকে দ্বীনি ইলম চর্চার আদেশ দেয়া হয়েছে। হাদীস নিয়ে গবেষণার আদেশ দেয়া হয়েছে,এর মধ্যেই আপনার জীবনের কল্যান ইত্যাদি নিহিত আছে বলে বলা হয়েছে।

সুতরাং সেই লক্ষ্যে আপনি জেনারেল লাইনে পড়াশোনার পাশাপাশি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে যেতে পারেন।

অফলাইনে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে লেখাপড়ার সুযোগ না হলে অনলাইনে কোনো মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে যেতে পারেন।

আপনার প্রতি আমাদের প্রানপ্রিয় প্রতিষ্ঠান IOM এর আলিম কোর্সে ভর্তির পরামর্শ থাকবে। 

উল্লেখ্য যে উক্ত স্বপ্নে আপনাকে হাদীস চর্চার কথা বলা হয়েছে, এটি পালন করা আপনার উপর আবশ্যক নয়।

কেননা স্বপ্ন দ্বারা শরীয়তের  কোনো বিধান আবশ্যক হয়না।  
আপনি যদি হাদীস চর্চা নাও করতে পারেন,এক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...