জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
হজ্ব আল্লাহ তায়ালার গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ বিধান।
কাহারো উপর হজ্ব ফরজ হয়ে যাওয়ার পর শরয়ী ওযর ব্যাতিত হজ্ব আদায় করা থেকে দেরি করা নাজায়েজ।
,
মেয়ের বিবাহের খরচপাতি চালানো এটি কোনো শরয়ী ওযর নয়,তাই তার বিবাহের আগেই যদি বাবা মার উপর হজ্ব ফরজ হয়,তাহলে তাদের দেরি করা জায়েজ হবেনা।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
{وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حَجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ}
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বাইতুল্লাহর হাজ্জ করা ফরয যারা সেথায় যাওয়ার সামর্থ্য রাখে এবং কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষীহীন। (আলু ‘ইমরানঃ ৯৭)
দেড়ি করার দ্বারা অনেক সময় সেই হজটি আদায় না করেই মানুষ মারা যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الْقُطَعِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، مَوْلَى رَبِيعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ مُسْلِمٍ الْبَاهِلِيِّ حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ مَلَكَ زَادًا وَرَاحِلَةً تُبَلِّغُهُ إِلَى بَيْتِ اللَّهِ وَلَمْ يَحُجَّ فَلاَ عَلَيْهِ أَنْ يَمُوتَ يَهُودِيًّا أَوْ نَصْرَانِيًّا وَذَلِكَ أَنَّ اللَّهَ يَقُولُ فِي كِتَابِهِ : (وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً ) "
আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি আল্লাহ্ তা’আলার ঘর পর্যন্ত পৌছার মত সম্বল ও বাহনের অধিকারী হওয়ার পরও যদি হাজ্জ না করে তবে সে ইয়াহুদী হয়ে মারা যাক বা নাসারা হয়ে মারা যাক তাতে (আল্লাহ তা’আলার) কোন ভাবনা নেই। কারণ আল্লাহ তা’আলা তার কিতাবে বলেনঃ “মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাবার সামর্থ্য আছে, আল্লাহ্ তা’আলার উদ্দেশে ঐ ঘরের হাজ করা তার অবশ্য কর্তব্য”। (সূরাঃ আল-ইমরান - ৯৭)।
(তিরমিযী ৮১২, শু‘আবুল ঈমান ৩৬৯২,মিশকাত ২৫২১)
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، وَعَمْرُو بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ أَبُو إِسْرَائِيلَ، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الْفَضْلِ، - أَوْ أَحَدِهِمَا عَنِ الآخَرِ، - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَرَادَ الْحَجَّ فَلْيَتَعَجَّلْ فَإِنَّهُ قَدْ يَمْرَضُ الْمَرِيضُ وَتَضِلُّ الضَّالَّةُ وَتَعْرِضُ الْحَاجَةُ " .
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে ফাদল (রাঃ) এর সূত্রে (অথবা পরস্পরের সূত্রে) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হজ্জের সংকল্প করে সে যেন অবিলম্বে তা আদায় করে। কারণ মানুষ কখনও অসুস্থ হয়ে যায়, কখনও প্রয়োজনীয় জিনিস বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং কখনও অপরিহার্য প্রয়োজন সামনে এসে যায়।
(আবূ দাউদ ১৭৩২ আহমাদ ১৮৩৬, ১৯৭৪, ২৯৬৬, ৩৩৩০, দারেমী ১৭৮৪, মিশকাত ৯৯০, ইরওয়া ৯৯০, সহিহ আবু দাউদ ১৫২২,ইবনে মাজাহ ২৮৮৩।)
যদি পিতা-মাতার উপর হজ্ব ফরজ হয়, আর মেয়ের দেখাশোনার লোক থাকে, তাহলে হজ্ব করা আবশ্যক। এ কারণে হজ্ব দেরী করা জায়েজ হবে না।
فى رد المحتار- المسألة منقولة عن أبي حنيفة في تقديم الحج على التزوج ، والتفصيل المذكور ذكره صاحب الهداية في التجنيس ، وذكرها في الهداية مطلقة ، واستشهد بها على أن الحج على الفور عنده ومقتضاه تقديم الحج على التزوج ، وإن كان واجبا عند التوقان (رد المحتار على الدر المختار-كتاب الحج، قبيل مطلب فى قولهم يقدم حق العبد على حق الشرع-2/462
যার সারমর্ম হলো হজ্ব কে বিবাহের উপর মুকাদ্দম করতে হবে।
(ফাতওয়ায়ে শামী-২/৪৬২,ফাতহুল কাদীর-২/৪১১,ফাতওয়া তাতারখানিয়া-২/৪৩৭,ফাতওয়া মাহমুদিয়া-১৫/৩৫৭)
(وفی الا شباہ) المسئلۃ منقولۃ عن ابی حنیفۃ فی تقدیم الحج علی التزوج۔ الی قولہ۔ ولذا اعترضہ ابن کمال باشا فی شرحہ علی الھدایہ بانہ حال التوقان مقدم علی الحج اتفاقاً لان فی ترکہ امرین ترک الفرض والوقوع فی الزنا وجواب ابی حنیفۃ فی غیر حال التوقان اھ ای غیر حال تحقیق الزنا لانہ لو تحققہ‘ فرض التزوج اما لوخافہ فالتزوج واجب لا فرض فیقدم الفرض فافھم(درمختار ومشامی ج۲ ص ۱۹۷ ،کتاب الحج)
যার সারমর্ম হলো যদি কাহারো বিবাহ না করলে যেনা করার আশংকা হয়,তাহলে সে আগে বিবাহ করবে,তারপর হজ্ব করবে।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি মেয়েকে দেখা শোনার করার মানুষ থাকে,তাকে রেখে গেলে কোনো সমস্যার সম্ভাবনা না থাকে,তাহলে তাকে রেখেই হজ্বে যেতে হবে।
পরে বিবাহ দিবে।
,
আর যদি অন্যথায় বিবাহ আগে দিবে।
,
★এগুলো সমস্ত আলোচনাই ঐ সময়,যখন বাবা মার টাকা পয়সার সংকট হয়।
এমন হয় যে বিবাহ দিলে হজ্বে যেতে পারবেনা,হজ্বে গেলে এই বছর বিবাহ দিতে পারবেনা।
,
যদি আর্থিক এই সমস্যা না থাকে,আর মেয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্র পাওয়া যায়,তাহলে বিবাহ দিতে দেরি করবেনা।
,
অল্প সময়ের বিবাহ দিয়েই হজ্বে চলে যাবে।
,
তাকে রেখে হজ্বে গেলেও কোনো সমস্যা নেই।