আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
147 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (91 points)
edited by

প্রথমেই অধিক প্রশ্নের জন্য ক্ষমা চাইছি নিজ গুণে মাফ করে দিবেন শায়েখ। ছোট আকারে হ্যা/না তে জবাব দিয়ে দিবেন প্লিজ।

১. "আমাদের মাঝে এতো  বিচ্ছেদ!" এই কথা স্ত্রীকে বলার দ্বারা কি বৈবাহিক জীবনে সমস্যা হয়?যদি তালাকের নিয়ত না থাকে,এই শব্দের ব্যবহার সম্পর্কে সংক্ষেপ একটু আইডিয়া দিলে উপকার হয়।

২.আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনে দুজন থেকে দূরে বসবাস, করি। তাই দুরত্ব বুঝাতে একদিন দোয়ায় আমি আল্লাহ কে বলি, " *আমাদের মাঝে এতো বিচ্ছেদ "* এটা বলেই স্মরণ হলো বিচ্ছেদ কেনো  হবে,এটা তো দূরত্ব হবে। এই বল্ড করা কথাটি মনে মনে বলেছিলাম বলেই মনে হয়, তাও সন্দেহ হচ্ছে, এই কথায় কি কোনো সমস্যা হবে?

৩. কেও যদি তার বউকে বলে তোমার মা বাবা অন্য কোথায় বিয়ে দিতে চাইলে আমাকে কয়েকমাস আগে জানিয়ো...। ভবিষ্যতে তালাক দিবে এই নিয়তে এই কথা বললে এর দ্বারা কি কোনো সমস্যা হবে?

৪.তোমার জন্য বিয়ের আলাপ আসছে না কি? তোমার জন্য ছেলে দেখছে না কি? এই সব কথা কেও বউকে বললে কি সমস্যা হবে?

৫. ভবিষ্যতে তালাকের ইরাদা করলে কি তালাক হয়?

৬.নাবালক বাচ্চা মুরগি/হাস ইত্যাদি বিসমিল্লাহ বলে জবাই করলে খাওয়া যাবে?

৭. কেও যদি মৃত্যু সংবাদ,ওয়াজ মাহফিলের,খেলা  এই তিন ধরনের  ঘোষনা থেকে কিছু অংশ একসাথে করে মজা করে বলে,"" ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন, আসছে আগামী শুক্রবার আপনাদের মাঠে বিশাল ওয়াজের আয়োজন করা হয়েছে,উক্ত খেলায় যে দুটি শক্তিশালী দল প্রতিদ্ধনি্তাতা করবে তারা হলো..." এতে কি তার ইমানে সমস্যা হবে? 

৮. " ওকে দেখে মনে হয়, মন্দিরের বাতির মতো সুন্দর "  , "প্রতিদিন তোমার ডাকে সূর্য হাসে"।  এই কথা গুলো কি কুফরি কিছু?

৯. দেয়ালে লাগানো " আল্লাহু" লেখা একটা আর্ট আছে।  এটার আশেপাশে মাকরের জাল ইচ্ছে করেই ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করি, তখন হঠাৎ ঝাড়ু টা ওই আর্টের গায়ে লেগে যায়, এটা ইচ্ছে কৃত না, এতে কি কুফর হবে?

১০. রঙ্গীলা বাড়ইরে শিরোনামে একটা গান আছে, যেখানে বলেছে, "তোমার কর্ম তুমি করো মিছে দোষী আমি" "তোমার প্রেমে আব্দুল করিম মরে যদি ভালো" ইত্যাদি, এই গান নাকি আব্দুল করিম সৃষ্টিকর্তাকে উদ্দেশ্য করে গেয়েছেন যা আমি জানতাম না, আমি এই গান মানুষেকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন ভেবে অনেক গেয়েছি, সৃষ্টিকর্তাকে উদ্দেশ্যে লিখেছেন জানার পর,এই গান গাইলে আমি কোনো মানু উদ্দেশ্য নিশে গাইতাম,আমার কি ইমানে সমস্যা হবে?

১১. আমার বিছানায় বীর্যের ছোপ ছোপ একটু দাগ আছে,সপ্নদোষের ফলে উতপন্ন, এই অবস্থা জেনেও আমি এই খানে শুয়ে, দুরুদ,কোরআন, কলিমা এইসব পড়ে ঘুমাই,এটার জন্য কি কুফর হবে? কুফর না হলে গুনাহ হবে কি?( যেদিন ধোইয়েছিলাম ওই দিন রাতেই আবার দাগ লেগে যায়,যার ফলে বার ধোয়া হয় নি)

জাজাকাল্লাহ শায়েখ।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে "আমাদের মাঝে এতো  বিচ্ছেদ!" এই কথা স্ত্রীকে বলার দ্বারা বৈবাহিক জীবনে সমস্যা হবেনা।

(০২)
এই কথায় কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৩)
ভবিষ্যতে তালাক দিবে এই নিয়তে উক্ত কথা বললে এর দ্বারা তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৪)
এতেও তালাক হবেনা।

(০৫)
ভবিষ্যতে তালাকের ইরাদা করলে তালাক হয়না।

(০৬)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

فَکُلُوۡا مِمَّا ذُکِرَ اسۡمُ اللّٰہِ عَلَیۡہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ بِاٰیٰتِہٖ مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۱۸﴾ 
সুতরাং তোমরা তার আয়াতসমূহে ঈমানদার হলে, যাতে আল্লাহ্র নাম নেয়া হয়েছে তা থেকে খাও।
(সুরা আন'আম ১১৮)

وَ مَا لَکُمۡ اَلَّا تَاۡکُلُوۡا مِمَّا ذُکِرَ اسۡمُ اللّٰہِ عَلَیۡہِ وَ قَدۡ فَصَّلَ لَکُمۡ مَّا حَرَّمَ عَلَیۡکُمۡ اِلَّا مَا اضۡطُرِرۡتُمۡ اِلَیۡہِ ؕ وَ اِنَّ کَثِیۡرًا لَّیُضِلُّوۡنَ بِاَہۡوَآئِہِمۡ بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ؕ اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُعۡتَدِیۡنَ ﴿۱۱۹﴾ 

আর তোমাদের কি হয়েছে যে, যাতে আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তোমরা তা থেকে খাবে না? যা তোমাদের জন্য তিনি হারাম করেছেন তা তিনি বিশদভাবেই তোমাদের কাছে বিবৃত করেছেন, তবে তোমরা নিরুপায় হলে তা স্বতন্ত্র। আর নিশ্চয় অনেকে অজ্ঞতাবশত নিজেদের খেয়াল-খুশী দ্বারা অন্যকে বিপথগামী করে; নিশ্চয় আপনার রব সীমালংঘনকারীদের সম্বন্ধে অধিক জানেন।
(সুরা আন'আম ১১৯)

وَلَا تَأْكُلُوا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ ۗ وَإِنَّ الشَّيَاطِينَ لَيُوحُونَ إِلَىٰ أَوْلِيَائِهِمْ لِيُجَادِلُوكُمْ ۖ وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ [٦:١٢١]

যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় নি, সেগুলো থেকে ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গোনাহ। নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে প্রত্যাদেশ করে-যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরেক হয়ে যাবে। {সুরা আনআম-১২১}

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقِيَ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ بِأَسْفَلِ بَلْدَحٍ، قَبْلَ أَنْ يَنْزِلَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الوَحْيُ، فَقُدِّمَتْ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُفْرَةٌ، فَأَبَى أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا، ثُمَّ قَالَ زَيْدٌ: إِنِّي لَسْتُ آكُلُ مِمَّا تَذْبَحُونَ عَلَى أَنْصَابِكُمْ، وَلاَ آكُلُ إِلَّا مَا ذُكِرَ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ،

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ এর কাছে ওহী নাজিল হবার আগে জায়েদ বিন নুফাইল এর সাথে আসফালি বালদাহ নামক স্থানে সাক্ষাৎ হয়। তখন রাসূল সাঃ এর সামনে দস্তরখান বিছানো হয়। [আর কিছু গোস্ত উপস্থিত করা হয়] রাসূল সাঃ তা খেতে অস্বিকৃতি জানালেন। তারপর জায়েদ বলেন, আমি সে প্রাণী খাই না, যা তোমরা মুর্তির নামে জবাই কর। আমি শুধু ঐ প্রাণীই ভক্ষণ করি যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে। {বুখারী, হাদীস নং-৩৮২৬, ৩৬১৪}

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নাবালেগ বাচ্চা মুরগি/হাস ইত্যাদি বিসমিল্লাহ বলে জবাই করলে খাওয়া যাবে।
কোনো সমস্যা নেই।

(০৭)
এতে তার ঈমানে সমস্যা হবেনা। 

(০৮)
এগুলো কুফরি বাক্য নয়।

(০৯)
এতে কুফর হবেনা।
তবে তওবা করতে হবে।

(১০)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।
তবে আপনাকে তওবা করতে হবে। এহেন কথা বলা যাবেনা। 

(১১)
এটার জন্য কুফর হবেনা। গুনাহও হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...