بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/10036/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ
করা হয়েছে যে,
‘গর্ভাবস্থায় তালাক পতিত হয় না’ এমন একটা কথা সাধারণ লোকদের মাঝে প্রচলিত রয়েছে।
কিন্তু এটা নিতান্তই ভ্রান্ত এবং অজ্ঞতা পূর্ণ কথা। বরং গর্ভাবস্থায়ও তালাক পতিত হবে-
এ ব্যাপারে আলেমদের মাঝে কোন দ্বিমত নেই।
গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে সেই তালাক পতিত হয়ে যায়। এমন অবস্থায় তালাক দেওয়া জায়েজ
আছে। (ফাতাওয়ায়ে হতে হিকমত ২/২১২)
তিরমিজি শরীফের ১১৭৬ নং হাদীসে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، مَوْلَى آلِ طَلْحَةَ عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ،
أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ فِي الْحَيْضِ فَسَأَلَ عُمَرُ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ " مُرْهُ فَلْيُرَاجِعْهَا ثُمَّ لْيُطَلِّقْهَا طَاهِرًا
أَوْ حَامِلاً " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ يُونُسَ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ
ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَكَذَلِكَ حَدِيثُ سَالِمٍ عَنِ ابْنِ
عُمَرَ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ طَلاَقَ
السُّنَّةِ أَنْ يُطَلِّقَهَا طَاهِرًا مِنْ غَيْرِ جِمَاعٍ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ
إِنْ طَلَّقَهَا ثَلاَثًا وَهِيَ طَاهِرٌ فَإِنَّهُ يَكُونُ لِلسُّنَّةِ أَيْضًا .
وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ
تَكُونُ ثَلاَثًا لِلسُّنَّةِ إِلاَّ أَنْ يُطَلِّقَهَا وَاحِدَةً وَاحِدَةً .
وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَإِسْحَاقَ . وَقَالُوا فِي طَلاَقِ
الْحَامِلِ يُطَلِّقُهَا مَتَى شَاءَ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ
وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ يُطَلِّقُهَا عِنْدَ كُلِّ شَهْرٍ تَطْلِيقَةً .
সালিম (রাহঃ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) তার স্ত্রীকে হায়িয
থাকা অবস্থায় তালাক দিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উমার
(রাঃ) এর বিধান জানতে চাইলেন। তিনি বললেনঃ তাকে তার স্ত্রীকে ফিরত নেওয়ার হুকুম দাও।
অতঃপর সে যেন তাকে তুহরে (পবিত্র অবস্থা চলাকালে) অথবা গর্ভাবস্থায় তালাক দেয়।
(সহীহ, ইবনু মাজাহ (২০২৩))
ইবনু উমারের সূত্রে ইউনুস ইবনু জুবাইর (রাহঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান
সহীহ বলেছেন। ইবনু উমার হতে সালিম (রাহঃ) বর্ণিত হাদীসটিও হাসান সহীহ। এ হাদীসটি বিভিন্ন
সূত্রে ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ আমল করেছেন।
তালাকের সুন্নাত (আইনানুগ) পদ্ধতি প্রসঙ্গে তাদের মত হলঃ যে তুহরে সঙ্গম করা হয়নি
সেই তুহরে তালাক দেওয়া। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছেন, তুহর অবস্থায় তিন তালাক দিলে
তাও সুন্নাত নিয়মে হয়ে যাবে। এই মত ইমাম শাফিঈ ও আহমাদের।
আর একদল আলিম বলেছেন, সুন্নাত পদ্ধতি মুতাবেক তালাক হবে এক তালাক দেওয়া হলে কিন্তু একসাথে তিন তালাক
দেওয়া হলে তা হবে না। এই মত সুফিয়ান সাওরী ও ইসহাকের।
গর্ভবতী স্ত্রীলোক প্রসঙ্গে তাদের মত হল, যে কোন সময়ই তাকে তালাক দেয়া যায়। এই মত
শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকের। অন্য এক দল আলিম বলেছেন, প্রতি মাসে এক তালাক করে দিবে (তিন তালাক একসাথে দিবে না)।
وجاز طلاقہن أی الآیسۃ والصغیرۃ والحامل، مجمع الأنہر ج اول ص۳۸۲ مطبوعہ احیاء التراث العربی ومثلہ فی در
المنتقیٰ ﴾
সারমর্মঃ আয়েছাহ মহিলা,ছোট মহিলা,গর্ভবতী মহিলাকে তালাক দেওয়া জায়েজ আছে।
★তবে তালাক পতিত হলেও তার ইদ্দতের মেয়াদ
হল সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত। অর্থাৎ অন্যত্র বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইল তাকে অবশ্যই
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সে অন্যত্র
বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।
সুরা আত তলাক এর ০৪ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ الّٰٓیِٴۡ یَئِسۡنَ مِنَ الۡمَحِیۡضِ
مِنۡ نِّسَآئِکُمۡ اِنِ ارۡتَبۡتُمۡ فَعِدَّتُہُنَّ ثَلٰثَۃُ اَشۡہُرٍ ۙ وَّ
الّٰٓیِٴۡ لَمۡ یَحِضۡنَ ؕ وَ اُولَاتُ الۡاَحۡمَالِ اَجَلُہُنَّ اَنۡ یَّضَعۡنَ
حَمۡلَہُنَّ ؕ وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّہٗ مِنۡ اَمۡرِہٖ یُسۡرًا ﴿۴﴾
তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যারা ঋতুবর্তী হওয়ার কাল অতিক্রম করে গেছে, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা
যদি সংশয়ে থাক এবং যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি তাদের ইদ্দতকালও হবে তিন মাস। আর গর্ভধারিনীদের
ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার
জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।
এই আয়াতের ব্যখ্যায় বলা হয়েছে,
তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যদি গর্ভবতী হয়, তবে তার ইদ্দত হল সন্তান প্রসব করা সময় পর্যন্ত,
যদিও সে তালাকের দ্বিতীয় দিনে প্রসব করে তবুও। এ ছাড়া আয়াতের বাহ্যিক
অর্থ থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, প্রত্যেক গর্ভবতীর ইদ্দত এটাই;
তাতে সে তালাকপ্রাপ্তা হোক অথবা তার স্বামীর মৃত্যু হয়ে থাকুক।
প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নের বিবরণ
অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির
স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়েছে। তালাক শব্দটি নিয়ত থাকুক
বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের
হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। তিন তালাক দিলেও
তিন তালাক হয়ে যায়। তাই এই অবস্থায় তার সাথে সংসার করা স্বামীর জন্য হারাম। তবে তার সাথে সংসার করতে চাইলে প্রথমে তার স্ত্রী তালাকের ইদ্দত পালন করবে অর্থাৎ তিন পিরিয়ড পর্যন্ত অপেক্ষা করবে।
ইদ্দত পালন শেষ হলে শরীয়তসম্মত পন্থায় অন্য পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে
তার সাথে সহবাস করতে হবে।
অতঃপর দ্বিতীয়
স্বামী স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দিলে অথবা মারা গেলে পুনরায় তালাক অথবা মৃত্যুর ইদ্দত
পালন করবে। ইদ্দত পালন শেষ হলে তিনি ইচ্ছা করলে নতুন মহর নির্ধারণ করে আবার তাকে বিবাহ করে তার সাথে ঘর সংসার
করতে পারবেন।
আরো বিস্তারিত
জানুন: https://ifatwa.info/3190/