بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
অন্য ধর্মাবলম্বীদের রান্না
করা খাবার যেমন, মাছ, তরকারি ইত্যাদি
খাওয়া জায়েজ। তবে খাবারটি কোনোভাবেই হারাম না হতে হবে। পাশাপাশি তাতে হারাম কোনো কিছুর
সংমিশ্রণ না থাকতে হবে। (তাদের কোনো উপাস্যের জন্ম উৎস্বর্গকৃত না হতে হবে। )
وَقَالَ
أَبُو هُرَيْرَةَ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” هَاجَرَ
إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ بِسَارَةَ، فَدَخَلَ قَرْيَةً فِيهَا مَلِكٌ
أَوْ جَبَّارٌ، فَقَالَ: أَعْطُوهَا آجَرَ ” وَأُهْدِيَتْ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَاةٌ فِيهَا سُمٌّ وَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ: أَهْدَى مَلِكُ
أَيْلَةَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَغْلَةً بَيْضَاءَ،
وَكَسَاهُ بُرْدًا، وَكَتَبَ لَهُ بِبَحْرِهِمْ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন যে, ইবরাহীম (আঃ) (স্ত্রী) সারাকে নিয়ে হিজরাতকালে এমন এক জনপদে উপস্থিত হলেন,
যেখানে ছিল এক বাদশাহ অথবা রাবী বলেন, প্রতাপশালী
শাসক। সে বলল, সারার কাছে উপহার স্বরূপ হাজিরাকে দিয়ে দাও।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে বিষ মিশানো বকরীর গোশত হাদিয়া দেয়া হয়েছিল।
আবূ হুমাইদ (রহঃ) বলেন, আয়েলার শাসক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি সাদা খচ্চর উপহার
দিয়েছিলেন, প্রতিদানে তিনি তাকে একটি চাদর দিয়েছিলেন আর সেখানকার
শাসক হিসাবে তাকে নিয়োগ পত্র লিখে দিয়েছিলেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস
নং-২৬১৪, ইফাবা-২৪৪০]
রাসুলুল্লাহ (সা.) অমুসলিমদের
দাওয়াত গ্রহণ করেছেন। তাদের রান্নাকৃত খাবার খেয়েছেন। তাদের দেওয়া উপহারও গ্রহণ করেছেন।
(বুখারি, হাদিস: ২৬১৫)
আল-আব্বাস বিন আবদুল মোত্তালিব
হুনাইনের দিন সম্পর্কে বলেন, ‘রাসুল (সা.)
সাদা রঙের একটি খচ্চরের উপর ছিলেন; যে খচ্চরটি ফারওয়া বিন নুফাছা
আল-জুযামি তাকে উপহার দিয়েছিলেন। ’ (মুসলিম, হাদিস: ১৭৭৫)
আলী ইবনে আবু তালেব (রা.)
থেকে বর্ণিত আছে, নবী (সা.)-কে দুমাত-এর
(একটি স্থান) উকাইদির (রাজা) একটি রেশমী কাপড় উপহার দিয়েছেন। তখন তিনি সেটা আলী (রা.)-কে
দিয়ে বললেন: ‘এটাকে কেটে খিমার (নারীর অবগুণ্ঠন) বানিয়ে ফাতেমাদের দাও। ’ (বুখারি,
হাদিস: ২৪৭২; মুসলিম, হাদিস:
২০৭১)
ইমাম শারফ আন-নববী বলেন, ‘এ হাদিসে কাফেরের হাদিয়া গ্রহণ বৈধ হওয়ার পক্ষে দলিল রয়েছে। ’(শারহু মুসলিম:
১৪/৫০)
আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে
বর্ণিত আছে যে, এক ইহুদি নারী (সা.)-এর কাছে একটি বিষযুক্ত
ভেড়া নিয়ে আসে। তিনি সে ভেড়া থেকে খেয়েছেন। (বুখারি, হাদিস: ২৪৭৪;
মুসলিম, হাদিস: ২১৯০)
অমুসলিমদের তাদের দাওয়াতে
অংশগ্রহণ করলে ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কা থাকলে অংশগ্রহণ করা জায়েজ হবে না। (আহকামুজ
জিম্মাহ: ১/৭২৩)
অনুরুপভাবে তাদের জবাইকৃত
পশুর গোশত খাওয়া যাবে না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
শাইখ বিন উছাইমীন (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়: আমার একজন
অমুসলিম প্রতিবেশী আছে। কখনও কখনও বিভিন্ন উপলক্ষে সে আমাকে খাবার ও মিষ্টান্ন পাঠায়।
এ খাবার আমি খাওয়া ও আমাদের বাচ্চাদেরকে খাওয়ানো কি জায়েয হবে?
জবাবে তিনি বলেন: "হ্যাঁ। যদি আপনি নিরাপদ মনে করেন
তাহলে কাফেরের দেওয়া হাদিয়া খাওয়া আপনার জন্য জায়েয। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামকে যে ইহুদী মহিলা ভেড়া হাদিয়া দিয়েছে তিনি সেটা গ্রহণ করেছেন এবং যে ইহুদী
তাঁকে তার বাসায় দাওয়াত করেছে তিনি তার দাওয়াত গ্রহণ করেছেন এবং তার খাবার খেয়েছেন।
তাই কাফেরদের হাদিয়া গ্রহণ করতে ও তাদের বাসায় খেতে কোন
আপত্তি নেই। কিন্তু শর্ত হচ্ছে- নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। যদি কোন আশংকা থাকে তাহলে তাদের
দাওয়াত গ্রহণ করা যাবে না। অনুরূপভাবে আরেকটি শর্ত হচ্ছে তাদের ধর্মীয় উপলক্ষ না হওয়া; যেমন- খ্রিস্টমাস পালন ও এ ধরণের কোন উপলক্ষ।
এ ধরণের অবস্থায় এ উপলক্ষকেন্দ্রিক তাদের হাদিয়া গ্রহণ করা যাবে না।"[ফাতাওয়া
নুরুন আলাদ দারব (২৪/২)]
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিভিন্ন সেমিনার ও ট্রেনিং তাদের দাওয়াত গ্রহণ করা ও খাওয়া জায়েজ
আছে। তবে শর্ত
হলো তাদের প্রদান করা খাবারের মাঝে কোনো হারাম বা সন্দেহযুক্ত বস্তু থাকা যাবে না।
(বি:দ্র: যদি কোন বিদেশী দাতব্য সংস্থার উদ্দেশ্য এমন থাকে
যে, তারা মানুষকে সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের বাতিল ধর্মের দিকে মুসলমানদেরকে
দাওয়াত করে তাহলে তাদের এমন কর্মসূচিতে নিজেও অংশগ্রহণ করা যাবে না এবং অন্যদেরকেও
সচেতন করতে হবে তাতে অংশগ্রহণ না করতে।)