আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
281 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)

শায়খ আসসালামুআলাইকুম,

বিবাহ বিষয়ক দুটি প্রশ্ন,

  • মসজিদে বিবাহ করার সময় পরিচিত কোনো  খ্রিস্টান বা অন্য বেধর্মী কি মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে অর্থাৎ সেখানে কি তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে?
  • বিবাহ করার পরে ওলীমার অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান বা অন্য বেধর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো যাবে? এক্ষেত্রে ইসলাম কি বলে?

1 Answer

0 votes
by (708,800 points)
বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-

ভালো উদ্দেশ্যে অমুসলিমদের জন্য মসজিদে প্রবেশ করা বৈধ রয়েছে।

আদ্দুর্রুল মুখতার- গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে

(وَ) جَازَ (دُخُولُ الذِّمِّيِّ مَسْجِدًا) مُطْلَقًا وَكَرِهَهُ مَالِكٌ مُطْلَقًا وَكَرِهَهُ مُحَمَّدٌ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ.

অমুসলিমদের জন্য যেকোনো মসজিদে প্রবেশ করা জায়েয।কিন্ত ইমাম মালিক রহ, মনে করেন যে, অমুসলিমের জন্য যেকোনো মসজিদে প্রবেশ করা মাকরুহ।ইমাম মুহাম্মাদ রহ, ও ইমাম শাফেয়ী রহ, এবং ইমাম আহমদ রহ, এর মাযহাব হলো, মসজিদে হারামে অমুসলিমের প্রবেশ মাকরুহ।তবে অন্যকোনো মসজিদে মাকরুহ নয়।

রদ্দুল মুহতার-৬/৩৭৮

আরো বর্ণিত রয়েছে-

ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-১৪/১৯১

সুতরাং বিয়ে বা কোনো অনুষ্টানে অমুসলিম কেউ মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে।তবে অপবিত্র কোনো জিনিষ শরীর বা কাপড়ে লেগে থাকতে পারবে না।এবং অপবিত্র কোনো জিনিষকে বহন করাও যাবে না।

অমুসলিমকে বিয়ে-ওলিমা সহ বিভিন্ন অনুষ্টানে নিমন্ত্রণ করাঃ-

হেদায়ত কামনা,ইসলামের দাওয়াত প্রদাণ ও  অন্তরে ইসলামের মহব্বত সৃষ্টির লক্ষ্যে

অমুসলিমকে খাবারের জন্য দাওয়া প্রদাণ জায়েয রয়েছে। কেননা এখানে তাকে হেদায়ত প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।অাল্লাহ চাহে তো এক্ষেত্রে সম্ভবত 'ইনফাক্ব ফি সাবিলিল্লাহ' হবে তথা আল্লাহর রাহে খরছ করার সওয়াব এতে পাওয়া যাবে।তাছাড়া অমুসলিমকে দাওয়াত দেয়া যাবে,যখন উক্ত অমুসলিম হাজতমন্দ বা কোনো মুসলমানের মেহমান হবে।কেননা শান্তিপ্রিয় অমুসলিমের প্রতি অনুগ্রহ আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন ব্যতীত জায়েয রয়েছে।আন্তরিক বন্ধুত্ব করাই মূলত নিষেধ।

আল্লাহ তা'আলা বলেন-

ﻟَﺎ ﻳَﻨْﻬَﺎﻛُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻦِ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﻢْ ﻳُﻘَﺎﺗِﻠُﻮﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ ﻭَﻟَﻢْ ﻳُﺨْﺮِﺟُﻮﻛُﻢ ﻣِّﻦ ﺩِﻳَﺎﺭِﻛُﻢْ ﺃَﻥ ﺗَﺒَﺮُّﻭﻫُﻢْ ﻭَﺗُﻘْﺴِﻄُﻮﺍ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﻘْﺴِﻄِﻴﻦَ

ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেননি। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদের-কে ভালবাসেন।

(সূরা মুমতাহিনা-০৭)

তবে যদি হেদায়তের উদ্দেশ্য বা নিয়ত না থাকে, কিংবা উক্ত অমুসলিম হাজতমন্দ না থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত অমুসলিমকে নিমন্ত্রণ না করাই উচিৎ।

একজন মুসলমানের নিমন্ত্রণের হক্বদার কে?

সে সম্পর্কে বলা যায় যে,অবশ্যই একজন মুসলমানের নিমন্ত্রণের হক্বদার হলো তার নিকটাত্মীয় মুসলমান,বা হাজতমন্দ মুত্তাকী-পরহেজগার মুসলমান।

কেননা হাদীস শরীফে এসেছে-

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪْﺭِﻱَّ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻟَﺎ ﺗُﺼَﺎﺣِﺐْ ﺇِﻟَّﺎ ﻣُﺆْﻣِﻨًﺎ، ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺄْﻛُﻞْ ﻃَﻌَﺎﻣَﻚَ ﺇِﻟَّﺎ ﺗَﻘِﻲٌّ »

মু'মিন ব্যতীত অন্য কারো সাথে বন্ধুত্ব করো না।এবং তোমার খাদ্য যেন মুত্তাকী-পরহেজগার ব্যতীত অন্যকেউ গ্রহণ না করে।

সুনানে তিরমিযি-২৩৯৫

সুনানে আবু-দাউদ-৪৮৩২

হযরত সালমান ইবনে আমির আয-যাব্বি রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ الضَّبِّيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " الصَّدَقَةُعَلَى الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ، وَعَلَى ذِي الْقَرَابَةِ اثْنَتَانِ: صَدَقَةٌ وَصِلَةٌ "

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন-

ফকির-মিসকিনকে কিছু দান করলে সদকাহের সওয়াব পাওয়া যায়।আর নিজ আত্মীয় কাউকে কিছু দান করলে দু'টি সওয়াব পাওয়া যায়।সদকাহ এর সওয়াব এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নয়নের সওয়াব।

সুনানে ইবনে মা'জা-১৮৪৪


অমুসলিমকে সালাম প্রদাণ না করার কারণ হিসেবে ফুকাহায়ে কেরাম এটাই সাব্যস্ত করেছেন যে, এক্ষেত্রে অমুসলিম কে সম্মান প্রদর্শন করা হয়ে যায়।এতে কোনো সন্দেহ নাই যে, অমুসলিম কাউকে খানার দাওয়াত প্রদাণেও তাকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়।সুতরাং কোনো অমুসলিমকে বিশেষ হেকমত ব্যতীত নিমন্ত্রণ করা যাবে না।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...