بسم الله الرحمن الرحيم
জাবাব,
ইমামের পেছনে মুক্তাদি নামাজে কোন সূরা বা কেরাত; এমনকি সূরা ফাতিহাও পড়বে না। এমর্মে বহু দলিল রয়েছে, নিম্নে কয়েকটি পেশ করা হল–
১. আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُواْ لَهُ وَأَنصِتُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
যখন কুরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা শোনো মনোযোগ সহকারে এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। (সূরা আ’রাফ ২০৪)
ইমাম বুখারী রহ.-এর উস্তাদ ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল রহ. বলেন,
أجمَعَ النَّاسُ على أنَّ هذه الآيةَ في الصَّلاةِ
এ বিষয়ে উম্মতের ইজমা রয়েছে যে, উক্ত আয়াত নামাজ সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। (আলমুগনী ১/৪৯০)
ইমাম আবু বকর আলজাসসাস রহ. উক্ত আয়াতের তাফসিরে লিখেন,
كما دلّت الآية على النهي عن القراءة خلف الإمام فيما يجهر به فهي دالّةٌ على النهي فيما يُخْفَى ؛ لأنه أوجب الاستماع والإنصات عند قراءة القرآن ولم يشترط فيه حال الجهر من الإخفاء ، فإذا جهر فعلينا الاستماع والإنصات وإذا أَخْفَى فعلينا الإنصات بحكم اللفظ لعلمنا بأنه قارىء للقرآن
আয়াতটি যেমনিভাবে উচ্চস্বরে কেরাতবিশিষ্ট নামাজে ইমামের পেছনে কেরাত পড়া নিষেধের প্রতি নির্দেশ করেছে, অনুরূপভাবে নিম্নস্বরে কেরাতবিশিষ্ট নামাজেও এই নিষেধের প্রতি নির্দেশ করেছে। কেননা, আয়াতটি কুরআন তেলাওয়াতের সময় চুপ থাকা ও মনোযোগসহ শোনাকে ওয়াজিব করেছে। এক্ষেত্রে উচ্চস্বরে কেরাতবিশিষ্ট নামাজ ও নিম্নস্বরে কেরাতবিশিষ্ট নামাজ–এই দু’য়ের মাঝে কোনো পার্থক্য করা হয় নি। সুতরাং আয়াতের আক্ষরিক হুকুম মতে ইমাম যখন উচ্চস্বরে কেরাত পড়বেন তখন আমাদের জন্য চুপ থাকা ও মনোযোগসহ শোনা ওয়াজিব। আর ইমাম যখন নিম্নস্বরে কেরাত পড়বেন তখন যেহেতু আমরা জানি যে, তিনি কুরআন তেলাওয়াত করছেন, তাই আমাদের জন্য চুপ থাকা ওয়াজিব। (আহকামুল কুরআন ৩/৩৯)
২. আবু মুসা আলআশআরী রাযি. বলেন,
إنَّ رسولَ اللهِ ﷺ خطَبَنا فبيَّنَ لنا سُنَّتَنا وعلَّمَنا صلاتَنا، فقال: إذا صلَّيْتُم فأقِيموا صفوفَكم، ثمَّ لْيَؤُمَّكم أحدُكم، فإذا كبَّرَ فكبِّروا، وإذا قرَأ فأنصِتوا
রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে ভাষণ দিয়েছেন, আমাদেরকে আমাদের নিয়ম-কানুন বাতলে দিয়েছেন এবং আমাদেরকে আমাদের নামাজ শিক্ষা দিয়েছেন। তখন তিনি বলেছেন, তোমরা যখন নামাজ আদায় করবে, তোমাদের কাতারগুলো ঠিক করে নিবে। অতঃপর তোমাদের কেউ তোমাদের ইমামতি করবে। সে যখন তাকবীর বলবে, তোমরাও তাকবীর বলবে। সে যখন কেরাত পড়বে, তখন তোমরা চুপ থাকবে। (মুসলিম, পরিচ্ছেদঃ সালাতে তাশাহহুদ পাঠ করা)
৩. রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ فَقِرَاءَتُهُ لَهُ قِرَاءَةٌ
যে ব্যক্তির ইমাম আছে তার ইমামের কেরাতই তার জন্য কেরাত বলে ধর্তব্য হবে। (সুনানে ইবন মাজাহ ৮৫০)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই / বোন!
১. ভুলক্রমে রুকুতে উক্ত বাক্য বললে নামাজ হয়ে যাবে, কিন্তু স্বরন হওয়া মাত্র রুকুর তাসবীহ পড়তে হবে। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন করলে নামাজ মাকরুহ হবে। কারণ, রুকুতে তাসবীহ পড়া সুন্নাত।
২. হানাফী মাযহাবে মুক্তাদীর জন্য ইমামের পিছনে ক্বেরাত পড়া জায়েয নেই। কিন্তু ভুলক্রমে পড়লে কোন সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে পড়লে মাকরুহ হবে, নামাজ ফাসেদ হবে না।