আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
167 views
in সালাত(Prayer) by (14 points)
আসসালামুয়ালাইকুম হুজুর আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো এবং সুস্থ আছেন আমার কিছু প্রশ্ন ছিল
১: হুজুর আমরা যে ফরজ নামাজ ইমাম সাহেবের পিছনে পড়ি আমরা দরূদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা শেষ না করতে করতে ইমাম সাহেব সালাম ফিরায় ফেলেন কিন্তু দরূদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা তাড়াতাড়ি পড়ার চেষ্টা করলে অনেক  ভূল হয় এবং ভূলে যাই
এ ক্ষেত্রে যতটুটু পড়ছি ততটুকু দিয়ে কি নামাজ হবে?
২: হুজুর ইমাম সাহেবের পিছনে আমরা যোহর ও আসরের সময় মনে মনে সূরা ফাতিহা পড়ি আমি সুরা ফাতেহা পুরো পড়ার আগেই ইমাম সাহেব রুকুতে চলে যায় এবং আমি তাড়াতাড়ি পড়ার চেষ্টা করলে ভূল হয় এবং ভূলে যাই এ ক্ষেত্রে করনীয় টা কি?
একটু ভালো করে বুঝিয়ে বলবেন এবং হুজুর এই ২ নাম্বার প্রশ্ন টা একবার করেছিলাম কিন্তু ভালো করে আমি প্রশ্ন টা করি নাই
৩: হুজুর কথার কথা মনে করেন আমরা যে কোন ৪ রাকাত ফরজের সময় যখন ২ রাকাতে বসি তখন ত  দুই হাঁটুর মাঝখানে দিকে তাকাব কিন্তু যখন ৩ রাকাতের জন্য দাঁড়াব তখন কোন দিকে দৃষ্টি রেখে দাঁড়াব?
৪: হুজুর ফরজ নামাজে যদি হঠাৎ করে  বিদ্যুৎ চলে যায় বা অন্ধকার হয়ে যায় এমন অবস্থা কি নামাজ ছেড়ে দিব নাকি পড়ব আর পড়লে কি নামাজ হবে ?
৫: হুজুর মাগরিবের আযানের সময় কি রুমের লাইট জ্বালিয়ে দিতে হয় এটা কি কুরআন সুন্নাহর কথা?
৬: হুজুর মাগরিবের সময় কি ঘরের দরজা লাগিয়ে দিতে হয়..

হুজুর আসসালামুয়ালাইকুম আল্লাহ হাফেজ

1 Answer

+1 vote
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، حَدَّثَنِي أَبُو هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيُّ، أَنَّ عَمْرَو بْنَ مَالِكٍ الْجَنْبِيَّ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، يَقُولُ سَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يَدْعُو فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " عَجِلَ هَذَا " . ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ " إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيدِ اللَّهِ وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لِيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ " .

মাহমুদ ইবন গায়লান (রহঃ) ..... ফাযালা ইবন উবায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তি কে সালাতে দু’আ করতে শুনতে পেলেন। কিন্তু সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরুদ পাঠ করে নি। তিনি তখন বললেনঃ এতো বড় তাড়াহুড়া করে ফেললে। এরপর তিনি তাকে ডাকলেন। তাকে বা অন্যকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাত (নামায) আদায় করবে তখন যেন সে (দু’আর পূর্বে) শুরুতে আল্লাহর হামদ ও সানা সিফাত বর্ণরা করে পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরুদ পাঠ করে এরপর যেন সে তার যা চায় সে দু’আ করবে।

সহীহ, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৪৭৭ [আল মাদানী প্রকাশনী]

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ زِرٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنْتُ أُصَلِّي وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ مَعَهُ فَلَمَّا جَلَسْتُ بَدَأْتُ بِالثَّنَاءِ عَلَى اللَّهِ ثُمَّ الصَّلاَةِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ دَعَوْتُ لِنَفْسِي فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " سَلْ تُعْطَهْ سَلْ تُعْطَهْ "

মাহমূদ ইবনু গায়লান (রহঃ) ...... আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম, আবূ বকর ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা সহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তখন সেখানে ছিলেন। যা হোক, সালাত শেষে যখন বসলাম তখন প্রথমে আল্লাহর সানা-সিফাত (গুণকীর্তন) করলাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সালাম পাঠ করলাম, এরপর আমার নিজের জন্য দু’আ করলাম। এই সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ প্রার্থনা কর, তোমাকে তা দেওয়া হবে, প্রার্থনা কর, তোমাকে তা দেওয়া হবে। 
( মিশকাত ৯৩১, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩ [আল মাদানী প্রকাশনী]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
নামাযে দরূদ ও দুয়ায়ে মাসুরা পড়া সুন্নত। আর ইমামের ইক্তিদা করা ওয়াজিব। তবে তাশাহুদ পড়া ওয়াজিব। তাই তাশাহুদ শেষ করার আগেই ইমাম সালাম ফিরিয়ে ফেললেও তাশাহুদ পড়েই মুক্তাদী সালাম ফিরাবে। কিন্তু দুআয়ে মাসুরা আর দরূদ যেহেতু সুন্নত আর ইমামের অনুসরণ করা ওয়াজিব। তাই সুন্নত ছেড়ে ওয়াজিব পালন করতে হবে। অর্থাৎ ইমামের সাথেই সালাম ফিরিয়ে ফেলতে হবে।

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ইমাম সাহেব সালাম ফিরানোর সময়ে আপনিও সাথে সাথেই সালাম ফিরাবেন।

এ ক্ষেত্রে যতটুটু পড়ছেন, ততটুকু দিয়ে নামাজ হবে। 

(০২)
আপনি হানাফি মাযহাব অনুসারী হলে তো ইমামের পিছনে কোনো নামাজেই সুরা তিলাওয়াত করবেননা। এর অনুমতি নেই।

আর ভিন্ন মতালম্বী হলে সেই মত অনুযায়ী আমল করবেন।
সেক্ষেত্রে ইমামের পিছনে সুরা ফাতেহা পাঠ করা আবশ্যক হলে আপনি ইমামের পিছনে  সুরা ফাতেহা পাঠ করবেন।
সুরা ফাতেহা শেষ করেই রুকুতে যাবেন।
এক্ষেত্রে দ্রুত পড়তে গিয়ে ভুল হলেও নামাজ হয়ে যাবে।

আপনি অনেক আগেই সুরা ফাতেহা শুরু করলে ইমামের আগেই শেষ হবে,ইনশাআল্লাহ ।

আরো জানুনঃ-

(০৩)
যখন ৩য় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন, তখন সেজদার স্থানের দিকে দৃষ্টি রেখে দাঁড়াবেন।

(০৪)
নামাজ ছেড়ে দেয়া যাবেনা।
এভাবেই নামাজ পড়তে হবে।
নামাজ হয়ে যাবে,সমস্যা নেই 

(০৫)
মাগরিবের আযানের সময় রুমের লাইট জ্বালিয়ে দেয়া আবশ্যকীয় নয়।
এটি কুরআন হাদীসের কোথাও নেই।

(০৬)
সন্ধ্যার সময় ঘরের দরজা লাগিয়ে দেয়া সুন্নাত।
প্রয়োজনে খোলা রাখলে কোনো সমস্যা নেই।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ جَابِرٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِذَا كَانَ جِنْحُ اللَّيْلِ أَوْ أَمْسَيْتُمْ فَكُفُّوا صِبْيَانَكُمْ ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْتَشِرُ حِينَئِذٍ ، فَإِذَا ذَهَبَ سَاعَةً مِنَ اللَّيْلِ فَخَلَّوهُمْ وَأَغْلِقُوا الْأَبْوَابَ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَفْتَحُ بَابًا مُغْلَقًا ، وَأَوْكُوا قِرَبَكُمْ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ ، وَخَمِّرُوا آنِيَتَكُمْ ، وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ ، وَلَوْ أَنْ تَعْرِضُوا عَلَيْهِ شَيْئًا ، وَأَطْفِئُوا مَصَابِيحَكُمْ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

জাবির রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যখন রাতের আঁধার নেমে আসে অথবা বলেছেন:
যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তোমাদের শিশুদেরকে (বাইরে যাওয়া থেকে) আটকে রাখো। কেননা সে সময় শয়তান ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলে তাদেরকে ছেড়ে দাও এবং বিসমিল্লাহ বলে ঘরের দরজাসমূহ বন্ধ করো। কারণ শয়তান বদ্ধদ্বার খুলতে পারে না। আর বিসমিল্লাহ পড়ে তোমাদের মশকগুলো (চামড়ার তৈরি পানির পাত্র বিশেষ) এর মুখ বন্ধ করো এবং বিসমিল্লাহ বলে তোমাদের পাত্রগুলোও ঢেকে রাখো। (ঢাকার কিছু না পেলে) কোন কিছু আড়াআড়িভাবে হলেও পাত্রের উপর রেখে দাও। (আর ঘুমানোর সময়) বাতিগুলো নিভিয়ে দাও।” (বুখারী ও মুসলিম)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 218 views
asked Oct 26, 2022 in সালাত(Prayer) by Nabil Ahmed (14 points)
0 votes
1 answer 330 views
asked Jun 26, 2021 in সালাত(Prayer) by Mariam masud (9 points)
0 votes
1 answer 219 views
asked Jun 21, 2021 in সালাত(Prayer) by Rubbya (19 points)
0 votes
1 answer 227 views
asked Apr 14, 2021 in সালাত(Prayer) by Momota (2 points)
0 votes
1 answer 276 views
asked Apr 11, 2021 in সালাত(Prayer) by Rubbya (19 points)
+1 vote
1 answer 356 views
0 votes
1 answer 180 views
...