আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
237 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (30 points)

আসসালামু'আলাইকুম শায়েখ। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জানাবেন দয়া করে।

১) মুসলিম বাংলা মোবাইল অ্যাপে বিভিন্ন প্রকাশনীর বিভিন্ন মুসহাফের ছাপা কুরআন পাওয়া যায়, কিন্তু তারা ঐসব প্রকাশনী থেকে অনুমতি নিয়েছে কিনা সে সম্পর্কে আমি জানি না। অনুমতি নিক বা না নিক উভয়ক্ষেত্রে অ্যাপ থেকে ছাপা কুরআন পড়া যাবে কি? আসলে ছাপা কুরআনের কি কপিরাইট হয়? 

২) অজু ছাড়া মোবাইল স্ক্রিনে কুরআনের আয়াত স্পর্শ না করে পড়া যাবে কি?

৩) জানাজার নামাজ হবে সেটা শুনলেই কি জানাজায় বাধ্যতামূলক উপস্থিত হতে হবে? ইচ্ছাকৃতভাবে উপস্থিত না হলে গুনাহ হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/18137/ ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যেআবিস্কার লেখা ও প্রকাশনা সত্ত্বকে কি ইসলামী শরীয়ত সত্ত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে?

এই মৌলিক প্রশ্নের উত্তর হল এই যে,

যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে,তার আবিস্কৃত জিনিষ অস্তিত্বমান বস্তু হোক বা অস্তিত্বহীননিঃসন্দেহে সেই ব্যক্তি অন্যের তুলনায় তা থেকে উপকৃত হওয়ারপ্রস্তুত করার এবং মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বাজারজাত করার বেশী অধিকারী। কেননা,আবু দাউদ শরীফে হযরত আসমুর ইবনে মুদরাস (রা.) থেকে একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, 'আমি নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে তার হাতে বাইআত গ্রহণ করি। এ সময় নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, 'যে ব্যক্তি ওই বস্তুর দিতে অগ্রসর হলযে বস্তুর দিকে কোনো মুসলমান অগ্রসর হয় নাইতাহলে ওই বস্তু ওই ব্যক্তির। (যে ওই দিকে প্রথম অগ্রসর হয়েছে।) আবু-দাউদ:৪/২৬৪ হাদীস নং২৯৪৭)

 

আল্লামা মুনাবী রহ. [আব্দুর রউফ আল মুনাবীমৃত্যু:১০৩১হি,] যদিও এই হাদীসটিকে পতিত ও অনাবাদী জমিন ব্যবহারযোগ্য করে গড়ে তোলার অর্থে প্রয়োগের বিষয়কে প্রধান্য দিয়েছেনতথাপি তিনি কোনো কেনো উলামায়ে কেরাম থেকে এ বর্ণনাও উদ্ধৃত করেছেন যেএই হাদীসটির মর্মে যাবতীয় ঝরণাকূপ এবং খণিজসম্পদ অন্তর্ভুক্ত। আর যে ব্যক্তি এসবের কোনো একটিতে প্রথম অগ্রসর হবে,ওই জিনিসটির সত্ত্বাধিকারী ওই ব্যক্তিই সাব্যস্ত হবে। এ বিষয়ে কোনো সংশয় নেই যেযে কোনো বাক্যে শব্দের ব্যাপকতাই গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকেতা কোনো নির্দিষ্ট কারণের প্রেক্ষিতে বলা হলেও সেই কারণের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ হয় না। (ফায়জুল কাদীর:৬/১৩৮)

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম যে,কোনো কিতাব নতুন হোক বা পুরাতন হোক,সংরক্ষিত প্রকাশনায় প্রকাশকের অনুমতি ব্যতীত ঐ প্রকাশনার কোনো কপি করা যাবে না। আল্লাহ-ই ভালো জানেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1197 

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত সূরতে কেউ যদি কোনো বইয়ের পিডিএফ করে তাহলে সেক্ষেত্রে কপির মাসয়ালা চলে আসে।

এক্ষেত্রে প্রকাশনী থেকে কপি.ফটোকপির উপর  নিষেধাজ্ঞা দেওয়া না থাকলে ছবি তুলে নিতে/দিতে সমস্যা নেইজায়েজ হবে। তবে যদি নিষেধ থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে সংরক্ষিত প্রকাশনায় প্রকাশকের অনুমতি ব্যতীত ঐ প্রকাশনার কোনো বই এভাবে ছবি তোলা যাবে না।

এটি কপির আওতায় পড়বে।

সেক্ষেত্রে  সংরক্ষিত প্রকাশনায় প্রকাশকের অনুমতি ব্যতীত ঐ প্রকাশনার কোনো বই এভাবে ছবি তুললে তাদেরকে ধোঁকা দেওয়া হবে।

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহাদীস নং-২৩১৪৭সহীহ মুসলিমহাদীস নং-১৬৪সুনানে দারেমীহাদীস নং-২৫৮৩সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস নং-২২২৫সহীহ ইবনে হিব্বানহাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদহাদীস নং-৩৫৯৪সুনানে দারা কুতনীহাদীস নং-২৮৯০শুয়াবুল ঈমানহাদীস নং-৪০৩৯}

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. বাজারে কোনো কিতাবের সংস্করণ সচরাচর পাওয়া না গেলে সেই কিতাবকে ক্রয় করার নিয়ত অন্তরে রেখে উক্ত কিতাবের পিডিএফ করা যাবে এবং অন্য কারোর জন্যও উক্ত পিডিএফ ডাউনলোড করে পড়াও যাবে। এতে কোনো অসুবিধে হবে না। 

আরো জানুন- https://www.ifatwa.info/34263/

 

২. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অজু ছাড়া মোবাইল স্ক্রিনে কুরআনের আয়াত পড়া যাবে।

৩. জানাযার নামাজ পড়া ফরজে কেফায়া। তাই কিছু লোক তা আদায় করে দিলেও সকলের পক্ষ হতে তা আদায় হয়ে যাবে। সেই হিসেবে আমরা বলতে পারি যে, জানাযার নামাজের কথা শুনলেই জানাযায় উপস্থিত হওয়া বাধ্যতামূলক নয় এবং ইচ্ছাকৃতভাবে উপস্থিত না হলেও কোনো গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে জানাযার নামাজ ও দাফন কাফনে শরীক হলে অনেক অনেক সওয়াব রয়েছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...