আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
242 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (63 points)
edited by

অতিরিক্ত প্রশ্নের জন্য ক্ষমা করবেন মুফতি সাহেব....বিরক্ত করার জন্য ক্ষমা করবেন। ক্ষমা চাইছি।

১. "ছেড়ে দিলাম" কথা টি মুফতিসাহেবগণ সরিহ তালাকের হিসাবে দেখেন। অর্থাৎ এই কথা বউ কে বললে নিয়ত ছাড়াই বায়েন হয়ে যায়? কথা কি ঠিক আছে? ঠিক থাকলে যদি এমন হয়, যে বউ কে জরিয়ে ধরার পর বউ যদি বলে ছাড়ো, তখন জামাই যদি বলে " নাও তোমায় ছেড়ে দিলাম"  এতে কি তালাক হয়ে যাবে?

২.জায়নামাজে মদীনার ছবি, আমি যখন এই জায়নামাজ মাঠিতে বিছাই,তখন ই মনে হয় মদীনা/মক্কার ছবি মাটিতে বিছিয়োছি! বিষয়টা খুব খারাপ লাগে মনের মাঝে তাই এই ধরমের জায়নামাজে নামাজ পরতে মন সায় দেয় না। এখন অন্য জায়নামাজ না পেলে এই ধরনেরর জায়নামাজে কি নামাজ পরতে পারবো মাটিতে বিছিয়ে, এতে কুফর বা গুনাহ হবে কি?

৩.কুফরি  কথা আছে এমন ফেসবুক পোস্ট কাওকে দেখানোর জন্য কপি- পেস্ট করে সেন্ড করলে ইমান নষ্ট হয়?

৪.ইসলামি পোস্ট বা বক্তব্য লম্বা হওয়ার ফলে কেও যদি বিরক্তিকর বলে সে কি কাফের হয়ে যাবে। পোস্ট লম্বা ও ভাষা কঠিন হওয়ার জন্য।

৫."নারায়ে তাকবির অর্থ আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা, মানে "তোমরা উচ্চ আওয়াজে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দাও" কথাটি কি ঠিক আছে?

৬. তালাক এবং কুফরির বিষয়ে পুরাতন ঘটনার ম্যাসেজ কি আমাদের খোঁজাখোজি করা উচিত?

৭. তালাক নিয়ে ভাবার সময় অন্য কারণে জিহ্বা নড়লে,  বা অন্য কথা বলা খাওয়া ইত্যাদির দরুন জিহ্বা নড়লে এবং তালাক কিংবা ছেড়ে দেওয়া সংক্রান্ত শব্দ পড়া বা উচ্চারণ এর সময় স্ত্রী কে তালা* বা চারার চিন্তা মাথায় চলে আসলে কি তালা* পতিত হয়? এই দুই ক্ষেত্রে কি বিধান

৮. ওয়াইফ যদি কোনো সমস্যা নিয়ে জাামইর সাথো আলোচনা  করে বলে "এই সমস্যা শুধু আমার মাঝে দুজনের মাঝে এই সমস্যা থাকলে অতদিনে আলাদা হই গেলাম্নে"।  আর এই সমস্যা সত্যিই দুজনপর মাঝে থাকলে কি সমস্যা হবে?(বউ এর অধিকার আছে)

৯. "এরকম হলে তোমাকে ছেড়ে দিতাম" এইরকম দিতাম বা দিবো  শব্দ ব্যাবহারে তালাক দিলে তা কি পতিত হয়?

১০. খ্রিষ্টানরা যে ছবি ব্যবহার করে,  তা ইঙ্গিত করে, যীশু এবং মাদার মেরী নামে সম্ভোদন করলে কি ইমান চলে যায়? সম্ভোদন করে যদি বলে যে " যীশু, মাদার মেরীর গর্ভে পিতা ছাড়াই জন্মেছিলেন, এটা দুইটা ধর্মমত থেকে প্রমানিত" (সে তখন কুফরি সম্পর্কে জানতো না, ইসা(আাঃ কে নবী হিসাবেই মানতো একজন হিন্দুকে বুঝানোর জন্য এইসব নাম বলা)

১১. কেও যদি তার অতীত নিয়ে মিথ্যা কথা বলে যে সে "নাস্তিক এর মতো হয়েগিয়েছিলো, পরে এসব থেকে ফিরে এসেছে" এতে কি সে কাফের হবে?

১২. আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি এই রকম কিছু কথা কাওকে বলেছিলাম অনেক বছর আগে, সংশয়বাদী ছিলাম না কি কি বলেছিলাম মনে করতে পারতাছি না। হয়তো নিজে এইাব পথ থেকে ফিরে এসেছি এইটা বুঝিয়ে একটু ভাব নেওয়ার উদ্দেশ্যে বলেছিলাম, ঠিক মনে পরছে না, অনেক বছর হয়ে যাচ্ছে এতে কি কাফের হয়েগিয়েছিলাম?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
তালাক খুবই মারাত্মক এক বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

'তোমাকে ছেড়ে দিলাম' ‘তোমাকে মুক্ত করে দিলাম’ বা ‘স্বাধীন করে দিলাম’ শব্দগুলো প্রচলনে সারীহ বা স্পষ্ট তালাকের স্থলে ব্যবহার হয়ে থাকে। 

আর সারীহ তালাকের ক্ষেত্রে নিয়তের প্রয়োজন হয় না। বরং যদি কেউ স্ত্রীকে কেবল ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যেও এজাতীয় কথা বলে তাহলেও এর দ্বারা তালাক হয়ে যায়। (জামিউল ফাতাওয়া ১০/১২০ কিতাবুন নাওয়াযিল ৯/২৯৩, ২৯৬, ২৯৯, ৩০০)

যে সকল শব্দ স্পষ্টভাবে তালাককে বুঝায়, সে সকল শব্দ দ্বারা তালাক দিলে তালাক পতিত হওয়ার জন্য নিয়তের প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের দেশে ‘ছেড়ে দিলাম’ -এর দ্বারা তালাক বুঝায়। কাজেই এ কথা বললে তালাক পতিত হওয়ার জন্য নিয়তের কোনো প্রয়োজন পড়বে না।
(রদ্দুল মুহতার ৪/৫৩০; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭৯)

سرحتك وهو “رها كردم” لأنه صار صريحا فى العرف (رد المحتار، كتاب الطلاق، باب الكنايات-4/530)

সারমর্মঃ-
ছেড়ে দিলাম বাক্যটি আমাদের উরুফের মধ্যে সরিহ বাক্য হয়ে গিয়েছে।

اذا قال الرجل لامرأته: “بهشتم ترا از زنى” فاعلم بأن هذه اللفظة استعملها أهل خراسان وأهل العراق فى الطلاق، وأنها صريحة عند أبى يوسف حتى كان الواقع بها رجعيا ويقع بدون النية (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السابع فى الطلاق بألفاظ الفارسية-1/379، جديد-1/447، الفتاوى التاتارخانية-4/463، رقم-6678)
সারমর্মঃ-
কেহ যদি তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিলাম হলে,তাহলে এটিকে খোরাসান বাসী ও ইরাক বাসীগন তালাকের বাক্যের অন্তর্ভুক্ত বলেন।
আবু ইউসুফ রহঃ এর নিকটে এটি সরীহ শব্দ।
এর দ্বারা রজয়ী তালাক পতিত হবে। 
এবং নিয়ত ছাড়াই তালাক পতিত হবে।

وقال أبو يوسف: إذا قال: بهشتم ان زن، أو قال: ان زن بهشتم، فهى طالق نوى الطلاق أو لم ينو، وتكون تطليقة رجعية (بدائع الصنائع-3/163)
সারমর্মঃ-
ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ বলেছেন,কেহ যদি তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিলাম বলে,তাহলে তালাক পতিত হবে।  তালাকের নিয়ত করুক বা না করুক।
আর এর দ্বারা রজয়ী তালাক পতিত হবে। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত মাসয়ালা ঠিক আছে।

প্রশ্নের৷ বিবরণ মতে যদি এমন হয়, যে বউ কে জরিয়ে ধরার পর বউ যদি বলে ছাড়ো, তখন জামাই যদি বলে " নাও তোমায় ছেড়ে দিলাম"  এতে তালাক হয়ে যাবেনা।

(০২)
এতে কুফর বা গুনাহ হবেনা।

(০৩)
এতে ঈমান নষ্ট হবেনা।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরণ মতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(০৫)
হ্যাঁ, ঠিক আছে।

(০৬)
ওয়াসওয়াসার রুগী হলে খোজাখুজি না করারই পরামর্শ উলামায়ে কেরামগন প্রদান করে থাকেন।

(০৭)
উভয় ক্ষেত্রেই তালাক হবেনা।

(০৮)
না,সমস্যা হবেনা।

(০৯)
না,এতে তালাক পতিত হবেনা। 

(১০)
প্রশ্নের বিবরণ মতে ঈমান চলে যাবেনা।

(১১)
না,এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(১২)
না,আপনি এতে কাফের হয়ে গিয়েছিলেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...