আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
210 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (50 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ।
১।তালাকের উদ্দ্যশ্যে ছাড়া কেউ যদি বলে তুমাকে ছেড়ে  চলে  যাব।মানে এখানে ছেড়ে বলতে ধরেন রাগ করে দূরে চোখে যেদিকে পথ দেখে সেদিকে যাবে এমন বুঝাচ্ছে ধরেন।তালাকের উদ্দ্যশ্যে বলে নি ধরেন এগুলো।আর এরপর  আবার  যে কোন কেনায়া শব্দ নিয়ত ছাড়া বললে কি তালাক হয়? এইখানে যে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা হচ্ছে সেটা আর বিচ্ছেদের যে ছাড়ার কথা আছে সেটা এক  নয় ধরেন।এখানে স্ত্রীর কাছ থেকে দূরে চলে যাওয়ার উদ্দ্যশ্যে ধরেন স্বামী এমনটা বলেছে।

২কোন স্ত্রী যদি মেসেজে তালাক চায় আর স্বামী যদি বলে তালাক দিতে হবে না এতটুকুতে আরেকটা কর গা বিয়ে বা তালাক দিতে হবে না বলে অন্য কেনায়া  শব্দ নিয়ত ছাড়া বলে তাহলে কি তালাক হবে? তখন ধরেন স্বামী জানত না কেনায়া তালাক সম্পর্কে,শুনেও নি ধরেন।স্বামী ধরেন জানতই না এমন বললে তালাক হতে পারে। আর স্বামী চাইও না ধরেন স্ত্রীকে তালাক দিতে চায় না তাই অভিমান বা রাগ করে এমনটা বলেছে।তাই  ধরেন সরাসরি তালাক দেয় নি কারন স্ত্রীকে হারাতে চায় না  ।এতে কি তালাক হবে?

৩।তালাকের আলোচনা বা মজলিসে যেখানে  স্বামী বা স্ত্রী কেও নেই।সেখানে স্বামীর মা কেনায়া শব্দ বললে কি তালাক হয়?মানে ধরেন স্বামীর মায়ের বোন এসে বউয়ের নামে উল্টা পাল্টা শাশুড়িকে বুঝাচ্ছে। মানে বউ ওটাকে স্বামীর সাথে সংসার করতে দিবে না মেয়েটার মা বাবা দরকার পরলে কেটে ভাসায় দিবে সাগরে ইত্যাদি এসব কথা শাশুড়ির বোনে শাশুড়িকে বুঝালে।শাশুড়ি কেনায়া শব্দ বললে কি তালাক হবে? সেগুলে স্বামীও জানত না ঘুমিয়েছিল তখন।পরে শাশুড়ি স্বামীকে বলেছে এমন এমন বলতেছে বোনে আর শাশুড়ি যা বলেছে তাও বলেছে। এতে কি তালাক হয়?

৪।যেনাকারীর দোয়া কি কবুল হয় না? এমনকি তাহাজ্জুদেও নাকি কবুল হয় না? ইউটিওবে একটা ভিড়িওতে দেখেছি।এটা কি সত্য?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা। 

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক পতিত হবেনা। 

(০৩)
এতে তালাক হবেনা।

(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا زَنَى الْعَبْدُ خَرَجَ مِنْهُ الْإِيمَانُ فَكَانَ فَوْقَ رَأْسِهِ كَالظُّلَّةِ فَإِذا خرج من ذَلِك الْعَمَل عَاد إِلَيْهِ الايمان» .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন বান্দা ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তখন তার থেকে (অন্তর থেকে) ঈমান বেরিয়ে যায় এবং তা তার মাথার উপর ছায়ার ন্যায় অবস্থিত থাকে। অতঃপর যখন সে এ অসৎকাজ থেকে বিরত হয় তখন ঈমান তার নিকট প্রত্যাবর্তন করে।
(সহীহ : আবূ দাঊদ ৪৬৯০, তিরমিযী ২৬২৫, সহীহুত্ তারগীব ২৩৯৪.মিশকাত ৬০।)

এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ-

এ ধরনের লোক ঈমান বিরোধী কাজ সত্ত্বেও সে ঈমানের ছায়াতেই থাকে। তার থেকে ঈমানের হুকুম দূর হয় না এবং ঈমান বিষয়টি তার থেকে উঠে যায় না। কারণ যখন সে ঐ কাজ থেকে বেরিয়ে আসে, তখন অনুতপ্ত হয় এবং এর ফলে ঈমানের নূর ও পূর্ণ ঈমান আবার ফিরে আসে।

وَفِي رِوَايَة ابْن عَبَّاس: «وَلَا يَقْتُلُ حِينَ يَقْتُلُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ» . قَالَ عِكْرِمَةُ: قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ: كَيْفَ يُنْزَعُ الْإِيمَانُ مِنْهُ؟ قَالَ: هَكَذَا وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ ثُمَّ أَخْرَجَهَا فَإِنْ تَابَ عَادَ إِلَيْهِ هَكَذَا وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ وَقَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: لَا يَكُونُ هَذَا مُؤْمِنًا تَامًّا وَلَا يَكُونُ لَهُ نُورُ الْإِيمَان. هَذَا لفظ البُخَارِيّ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণনায় এটাও আছে, হত্যাকারী যখন অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে, সে সময়ও তার ঈমান থাকে না। ‘ইকরিমাহ্ (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কিরূপে ঈমান তার থেকে বের করে নেয়া হবে? তিনি বললেন, এভাবে (এ কথা বলে) তিনি তার হাতের অঙ্গুলিসমূহ পরস্পরের ফাঁকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে, পরে তা পৃথক করে নিলেন। অতঃপর সে যদি তওবা্ করে, তাহলে পুনরায় ঈমান তার মধ্যে এভাবে ফিরে আসবে- এ কথা বলে পুনরায় তিনি দুই হাতের আঙ্গুলসমূহ পরস্পরের ফাঁকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেন। আর আবূ ‘আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেছেন, সে মু’মিন থাকে না। অর্থাৎ- সে প্রকৃত বা পূর্ণ মু’মিন থাকে না কিংবা তার ঈমানের নূর থাকে না। এটা বুখারীর বর্ণনার হুবহু শব্দাবলী।
(সহীহ : বুখারী ৬৮০৯.মিশকাত ৫৪।)

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের সারসংক্ষেপ এই যে, অন্তরে বিশ্বাস করা মৌখিক স্বীকৃতি প্রদান এবং বিশ্বাস ও স্বীকৃতি অনুপাতে কাজ করার নাম ঈমান। আর এ নূর অর্থ ঈমানের পূর্ণতা আর তা হলো সৎকাজ সম্পাদন করা এবং নিষিদ্ধ কাজ হতে বিরত থাকা। অতএব কোন ব্যক্তি যদি আদিষ্ট কাজে ত্রুটি করে অথবা ব্যভিচার, মদপান ও চুরির মতো গুনাহের কাজে জড়িয়ে পরে তখন তার নূর চলে যায় তার ঈমানের পূর্ণতা দূর হয়ে যায়। ফলে এমন ব্যক্তি পাপ-পঙ্কিলতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায়।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত হাদীস গুলোর আলোকে প্রতীয়মান হয় যে যেনা করা অবস্থায় পূর্ণ ঈমান থাকেনা।
পরবর্তীতে তওবা করলে পূর্ণ ঈমান ফিরে আসে।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত কথা সহীহ নয়।
যেনাকারীর দোয়া কবুল হবে। তাহাজ্জুদও কবুল হবে।
তবে তাকে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...